Mathematics Awards: গণিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কয়েকটি পুরস্কার আন্তর্জাতিক গাণিতিক ইউনিয়ন বা আই-এম-ইউ (International Mathematical Union) প্রদান করে। এগুলি এক একটি এক এক সময়ে প্রবর্তিত হয়েছে। পুরস্কারগুলি প্রতি চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত গণিতজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বা আই-সি-এম (International Congress of Mathematicians) দেওয়া হয়। বর্তমানে এই পুরস্কারগুলি হল
i) ফিল্ডস্ মেডেল (Fields Medal), [1936 থেকে]
ii) নেভানলিনা পুরস্কার (Nevanlina Prize), [1942 থেকে]
iii) গাউস পুরস্কার (Gauss Prize), [2006 থেকে]
iv) চার্ন মেডেল (Chern Medal), [2010 থেকে]
v) লীলাবতী পুরস্কার (Lilavati Prize), [2010 থেকে]
আই-এম-ইউ প্রদত্ত পুরস্কার ছাড়া এখানে আমরা প্রতি বছরে দেওয়া বিশিষ্ট ‘আবেল পুরস্কার’(Abel Prize) সম্বন্ধেও বলব, যদিও গণিতে আরো বেশ কিছু পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। সে সব পুরস্কারের কয়েকটি হল অয়লার মেডেল (Euler Medal), ফার্মা পুরস্কার (Fermat Prize), এডমস্ পুরস্কার ( Adms Prize), কোল পুরস্কার (Cole Prize), SASTRA রামানুজন পুরস্কার, ইনফোসিস পুরস্কার।
ফিল্ডস্ মেডেল (Fields Medal, Mathematics Awards:)
ফিল্ডস্ মেডেল হল দীর্ঘদিন ধরে গণিত বিষয়ে সর্বোচ্চ পুরস্কার হিসাবে বিবেচিত এক অতি সম্মানীয় ও কুলীন পুরস্কার। অসামান্য গাণিতিক কাজের এবং ভবিষ্যতে কৃতিত্ব অর্জনের প্রতিশ্রুতির (Outstanding Mathematical work and promise of future achievment) স্বীকৃতি হিসাবে আন্তর্জাতিক গাণিতিক ইউনিয়ন বা আই-এম-ইউ বর্তমানে এই পুরস্কার দুই বা তিন বা চারজন গণিতজ্ঞকে প্রতি চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত গণিতজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রদান করে থাকে।
প্রথম দিকে দুজন গণিতজ্ঞকে ফিল্ডস্ মেডেলের জন্য নির্বাচিত করা হলেও 1966 খ্রিস্টাব্দ থেকে অনধিক চারজনকে নির্বাচন করা হয়। তবে ফিল্ডস মেডেল প্রাপকদের বয়সের একটা সীমা আছে। যে বছর ফিল্ডস মেডেল প্রদান করা হবে সে বছরের পয়লা জানুয়ারি পুরস্কার বিজয়ীর বয়স চল্লিশ বছরের কম হতে হবে।
কানাডার গণিতজ্ঞ জন চার্লস ফিল্ডসের (John Charles Fields, 1863-1932) নাম অনুসারে এই মেডেলের নামকরণ। এটি প্রথম দেওয়া হয় 1936 খ্রিস্টাব্দে ওসলো (Oslo) শহরে অনুষ্ঠিত আই-সি-এমে। ফিল্ডস্ মেডেল হল বিশেষভাবে প্রস্তুত এক স্বর্ণপদক। পুরস্কার বিজয়ীকে ফিল্ডস্ মেডেলের সঙ্গে আর্থিক পুরস্কারও দেওয়া হয়, যা হল 15,000 কানাডীয় ডলার। বলা যায়, ‘The Fields Medal is often viewed as the greatest honour a young mathematician can receive’।
অনেকে আবার ফিল্ডস্ মেডেলকে ‘গণিতের নোবেল পুরস্কার’ হিসাবে আখ্যা দেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে এ পুরস্কার চার বছর অন্তর দেওয়া হয় এবং চল্লিশ বছরের কম বয়স্কদের দেওয়া হয়; যেখানে নোবেল পুরস্কার প্রতি বছর দেওয়া হয় এবং পুরস্কার প্রাপকদের বয়সের কোনো সীমা নেই। তাছাড়া নোবেল পুরস্কারে যে অর্থ দেওয়া হয়, তা ফিল্ডস্ মেডেল-প্রাপকের অর্থের প্রায় দশগুণ।
আরো পড়ুন : [Theory, Discovery, and the Nearest Black Hole to Earth: 2 কোটি সূর্যের সমান ভর যুক্ত কৃষ্ণগহ্বর]
Mathematics Awards ‘Fields Medal’ -এর আকর্ষণীয় ইতিহাস:
ফিল্ডস্ মেডেল প্রবর্তনের এক আকর্ষণীয় ইতিহাস আছে। 1924 খ্রিস্টাব্দে টরেন্টোতে অনুষ্ঠিত আই-সি-এমের সম্পাদক ছিলেন অধ্যাপক ফিল্ডস্। গণিতে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার থাকা বাঞ্চনীয়— এ কথা ভেবে তিনি সম্মেলনে একটি প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাবটি হল – চল্লিশ বছরের কম বয়স্ক এমন দু-জন গণিতজ্ঞকে তাঁদের অসাধারণ গাণিতিক কাজের স্বীকৃতি এবং ভবিষ্যতে গণিতে কৃতিত্ব অর্জনের প্রতিশ্রুতিকে সম্মান জানাতে দুটি স্বর্ণপদক দেওয়া হোক।
সম্মেলন এর জন্য 2500 মার্কিন ডলার মঞ্জুর করল এবং একটি আন্তর্জাতিক কমিটি গঠন করল। অধ্যাপক ফিল্ডস্ প্রস্তাবিত পুরস্কারের রূপরেখা, নীতি এবং পদ্ধতি পেশ করলেন। কিন্তু 1932 খ্রিস্টাব্দে জুরিখে আই-সি-এম অনুষ্ঠিত হবার আগে তিনি মারা যান। তবে মৃত্যুর আগে অধ্যাপক ফিল্ডস্ তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দান করার উইল এবং পুরস্কার প্রদানের খুঁটিনাটি ব্যাপার লিপিবদ্ধ করে যান। আই-এম-ইউ তাঁর প্রস্তাব গ্রহণ করে।
স্বনামধন্য কানাডীয় ভাস্কর রবার্ট টেট মেকেঞ্জি (Robert Tait Mckenzie) স্বর্ণপদকের পরিকল্পনা করেন। পদকটির একদিকে আছে আর্কিমিডিসের প্রতিকৃতি এবং ল্যাটিন ভাষার উদ্ধৃতি যার ইংরেজি অনুবাদ হল ‘To transcend one’s human limitation and master the world’। পদকটির অন্যদিকে ল্যাটিনে কিছু কথা খোদাই করা আছে যার ইংরেজি অনুবাদ হল ‘Mathematicians gathered from the entire world have awarded [understood ‘this prize’] for outstanding writing.’।
1936 খ্রিস্টাব্দে ফিল্ডস্ মেডেল দেওয়া শুরু হলেও বিশ্বযুদ্ধের জন্য আই-সি-এম কয়েক বছর বন্ধ থাকায় আবার 1950 খ্রিস্টাব্দ থেকে ফিল্ডস্ মেডেল দেওয়া চলতে থাকে।
1936 খ্রিস্টাব্দে দু-জন ফিল্ডস্ মেডেল প্রাপক হলেন ফিনল্যান্ডের লারস আলফোরস (Lars Ahlfors) এবং আমেরিকার জেসে ডগলাস (Jesse Douglas)। 2010 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মোট 56 জনকে ফিল্ডস্ মেডেলের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে (2 জন করে 1936, 1950, 1954, 1958, 1962, 1974, 2002; 3 জন করে 1982, 1986 এবং 4 জন করে 1966, 1970, 1978, 1990, 1994, 1998, 2006, 2014)।
কিন্তু 2006 সালে নির্বাচিতদের মধ্যে রাশিয়ার গ্রিগরি পেরেলম্যান (Grigori Yakovlevich Perelman, জন্ম 1966) পুরস্কার গ্রহণে সম্মত হননি বা আই-সি-এমেও উপস্থিত হন নি; তিনি দীর্ঘদিনের অপ্রমাণিত পঁয়কারের কনজেকচার প্রমাণ করার অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী এবং তাঁকে ফিল্ডস্ মেডেলের জন্য নির্বাচিত করা হয়; “For his contribution to geometry and his revolutionary insights into analytical and geometrical structure of Ricci flow.’
আরো পড়ুন : [Big Common Misconception: BODMAS Rule is 100% Wrong? চলুন সত্যটা জানা যাক]
উল্লেখ্য, 1966 সালে নির্বাচিত ফ্রান্সের আলেকজান্ডার গ্রথেনডিক (Alexander Grothendieck) পূর্ব ইউরোপে সোভিয়েত আগ্রাসনের প্রতিবাদে মস্কোতে অনুষ্ঠিত আই-সি-এম বয়কট করেন। 1970 সালে নির্বাচিত সোভিয়েত রাশিয়ার সের্গেই পেট্রোভিচ নোভিকভ (Sergrei Petrovich Novi Kov) সোভিয়েত সরকারের আপত্তির জন্য নাইসে (Nice) অনুষ্ঠিত আই-সি-এমে যোগ দিতে পারেন নি। 1978 সালে সোভিয়েত গণিতজ্ঞ গ্রেগরি মারগুলিসও (Gregory Margulis) সরকারের বাধাদানের ফলে হেলসিঙ্কিতে অনুষ্ঠিত আই-সি-এমে যোগ দিতে পারেন নি।
উল্লেখ্য, ফিল্ডস্ মেডেল প্রাপকদের মধ্যে 1954 সালের অন্যতম পুরস্কার প্রাপক ফ্রান্সের জিন পিয়েরে সেরে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে কম বয়সে (28 বছর বয়সে) এ কৃতিত্বের অধিকারী হন। আর 1998 খ্রিস্টাব্দে বার্লিনে অনুষ্ঠিত আই – সি-এমে ফার্মার শেষ উপপাদ্য (প্রায় সাড়ে তিনশো বছর ধরে সম্পূর্ণভাবে প্রমাণিত হতে পারেনি) প্রমাণের জন্য ‘first ever IMU silver plaque’ প্রদান করা হয় ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ এন্ড্রু জন ওয়াইলসকে (Andrew John Wiled, জন্ম 1993)।
2010 সালে আই-সি-এম অনুষ্ঠিত হয় প্রথমবারের মতো ভারতে— হায়দ্রাবাদ শহরে এবং যাঁরা এখানে ফিল্ডস্ মেডেল পান তাঁরা হলেন এলোন লিনডেনস্ট্রাস (Elon Lindenstruss), গো বোচাউ (Ngo Bao Chaw), স্ট্যানিসলাভ স্মিরনভ (Stassislav Smirnov) এবং ক্রেডিক ভিল্লানি (Credic Villani)। এঁদের মধ্যে ফরাসি-ভিয়েতনামী নাগরিক গো বো চাউ হলেন উন্নয়নশীল দেশসমূহের প্রথম নাগরিক যিনি ফিল্ডস্ মেডেল প্রাপকের সম্মানে ভূষিত হন।
2014 সালে সিওলে অনুষ্ঠিত আই-সি-এমে পুরস্কার প্রাপকরা হলেন ব্রাজিলের আরটার আভিলা (Artur Avila), ভারতীয় বংশোদ্ভূত মঞ্জুর ভার্গব, ব্রিটেনের মারটিন হাইরার ও ইরানের মরিয়ম মির্জাখনি। মরিয়ম মির্জাখানি হলেন প্রথম ফিল্ডস মেডেল প্রাপক মহিলা গণিতজ্ঞ। 2006 সালে আই-সি-এম অনুষ্ঠিত হয়েছিল, মাদ্রিদে, সেখানে পেরেলম্যানের সঙ্গে ফিল্ডস্ মেডেলের জন্য অন্য তিনজন নির্বাচিতরা হলেন রাশিয়ার আন্দ্রেই অকৌনকভ (Andrei Okounkov), অস্ট্রেলিয়ার টেরেন্স টাও (Terence Tao) এবং ফ্রান্সের ওয়েনডেলিন ওয়ারনার (Wendlin Werner)।
আবেল পুরস্কার (Abel Prize, Mathematics Awards)
অসাধারণ প্রতিভাধর গণিতজ্ঞ নিলস হেনরিক আবেলের (Niels Henrik Abel, 1802-1829) নামানুসারে গণিতে বিশিষ্ট এক বার্ষিক পুরস্কার হল আবেল পুরস্কার। স্বল্প জীবনকাল নিয়ে এবং নরওয়ের এক দরিদ্র পরিবারের জন্মগ্রহণ করেও আবেল তাঁর প্রতিভার দ্যুতিতে সবাইকে মুগ্ধ করেন। তাঁর স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে নরওয়ের গণিতজ্ঞ মরিয়াস সোফাস লাই (Marius Sophus Lie, 1842-1899) সক্রিয় হন।
যখন তিনি 1987 খ্রিস্টাব্দে জানতে পারেন আলফ্রেড বার্নাড নোবেল (Alfred Bernard Nobel, 1833-1896) প্রবর্তিত বার্ষিকভাবে দেয় নোবেল পুরস্কারে গণিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত নয়, তখন তিনি নিজের খ্যাতি ও যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে আবেলের নামে এক পুরস্কার প্রচলন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। মূলত তাঁর উৎসাহে 1898 খ্রিস্টাব্দে ইউরোপের অগ্রণী গণিতচর্চা কেন্দ্রগুলি ‘আবেল তহবিল’ গঠনের কাজে হাত দেন।
কিন্তু 1899 খ্রিস্টাব্দে লাইয়ের অকাল প্রয়াণের পর সে প্রয়াসে ছেদ পরে। আবার 1902 খ্রিস্টাব্দে আবেলের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সময় তাঁর নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তনের চেষ্টা চলে। কিন্তু তা সফল হয়নি। অনেক পরে আবেলের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী পালনের প্রাক্কালে 2001 খ্রিস্টাব্দের মে মাসে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীকে আবেল পুরস্কার সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়।
অবশেষে আবেলের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নরওয়ে সরকার ও বিভিন্ন গণিতজ্ঞের উৎসাহে ‘আবেল পুরস্কার’ ঘোষিত হয়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গণিত গবেষণায় উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের জন্য এক বা একাধিক গণিতজ্ঞকে প্রতি বছর আবেল পুরস্কারে ভূষিত করার কথা বলা হয়। আবেল পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হবার ক্ষেত্রে কোনো বয়সসীমা নেই, যা ফিল্ডস্ মেডালের ক্ষেত্রে আছে। আবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য নোবেল পুরস্কারের সমতুল্য।
ইন্টারন্যাশনাল ম্যাথেম্যাটিক্যাল ইউনিয়ন এবং ইউরোপীয়ান ম্যাথেম্যাটিক্যাল সোসাইটি মনোনীত এবং নরওয়েজিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্স এন্ড লেটার্স দ্বারা নির্বাচিত পাঁচজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গণিতজ্ঞ নিয়ে গঠিত নির্বাচন কমিটি আবেল পুরস্কারের প্রাপককে নির্বাচন করেন এবং নরওয়ের রাজা তা প্রদান করেন। 2003 সাল থেকে আবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য বছরে একজন করে আবেল পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হলেও 2004 এবং 2008 খ্রিস্টাব্দে দু-জন করে নির্বাচিত হয়েছেন।
2003 সালে প্রথম আবেল পুরস্কারপ্রাপক হচ্ছেন জিন পিয়েরে সেরে। ইনি ফিল্ডস্ মেডেলও পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, 2007 সালে আবেল পুরস্কার লাভ করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বর্তমানে আমেরিকার নাগরিক শ্রীনিবাস এস আর বরাধন (জন্ম 1940)। আর 2013 সালের আবেল পুরস্কার বিজয়ী হলেন বেলজিয়ামের গণিতজ্ঞ পিয়েরে ডেলিন (Pierre Delinge, জন্ম 1944) উল্লেখ্য, 1978 সালে চারজন ফিল্ডস্ মেডাল বিজয়ীদের অন্যতম ডেলিন 1916 সালে রামানুজনের আবিষ্কৃত ‘টাউ-কনজেকার’ প্রমাণ করে ফিল্ডস্ মেডেল লাভ করেছিলেন।
উল্লেখ্য, 2014 সালে আবেল পুরস্কার লাভ করেন রাশিয়ান আমেরিকান গণিতজ্ঞ যাকোভ সিনাই (Yakov Sinai ); 2015 সালে আমেরিকান কানাডীয়ান গণিতজ্ঞ জন এফ ন্যাশ জুনিয়ার এবং আমেরিকান গণিতজ্ঞ লুইস নিরেন বার্গ (Louis Nirenbwg), দুজনে এ পুরস্কার পান; আর 2016 সালে পান ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ এডু ওয়াইলস।
নেভানলিনা পুরস্কার ( Nevanlina Prize, Mathematics Awards)
তথ্য বিজ্ঞানের গাণিতিক বিষয়ে (Mathematical Aspect of Information Science) অসামান্য অবদানের জন্য প্রতি চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত আই-সি-এমে এমন একজন ব্যক্তিকে নেভানলিনা পুরস্কার দেওয়া হয়, যাঁর বয়স আই-সি-এম অনুষ্ঠিত বছরের পয়লা জানুয়ারিতে চল্লিশ বছরের কম থাকে। তথ্য বিজ্ঞানের গাণিতিক দিকগুলির অন্তর্গত হল
i) কম্পিউটার বিজ্ঞান, কল্লেসিটি থিয়োরি, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ লজিক, এনালিসিস অফ এলগারিদম, ক্রিপ্টোগ্রাফি, কম্পিউটার ভিসান, প্যাটার্ন রেকগনিসান, ইনফরমেসান প্রসেসিং, মডেলিং অফ ইনটেলিজেন্স।
ii) সায়েন্টিফিক কম্পিউটিং এবং নিউমারিক্যাল এনালিসিস; অপিটিমাইজেসান এবং কন্ট্রোল থিয়োরির গণনার দিক; কম্পিউটার বীজগণিত।
নেভানলিনা পুরস্কারে আছে একটি স্বর্ণপদক এবং ফিল্ডস্ মেডেলের অর্থমূল্যের সমান অর্থ। এই পুরস্কার প্রতিটি আই-সি-এমে একজনকেই দেওয়া হয়। পুরস্কার প্রাপক নির্ধারণ করার জন্য ‘আই-এম-ইউ’-এর কার্যকরী কমিটি একটি কমিটি গঠন করেন, যে কমিটির শুধু সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়। পুরস্কার প্রদানের আগে পর্যন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয় না।
নেভানলিনা পুরস্কারের এক ছোটো প্রেক্ষাপট আছে। 1981 সালের এপ্রিলে ‘আই-এম-ইউ’-এর কার্যকরী কমিটি এই পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এক বছর পর 1982 সালে এ পুরস্কারের আর্থিক দায়ভার গ্রহণ করার প্রস্তাব হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয় ‘আই-এম-ইউ’কে দেয় এবং আই-এম-ইউ সে প্রস্তাবে সায় দেয়। পুরস্কারটি ফিনল্যান্ডের গণিতজ্ঞ রোলফ্ নেভানলিনার (Rolf Nevanlina, 1895-1980) সম্মানে দেওয়া হয়ে থাকে। নেভানলিনা হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টরের এবং আই-এম-ইউ’র সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেছেন। তাছাড়া তিনি বিংশ শতাব্দীর পাঁচের দশকে ফিনল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কম্পিউটার সংগঠনে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেন।
নেভানলিনা পুরস্কারের স্বর্ণপদকের একদিকে নেভানলিনার প্রতিকৃতি ও নেভালিনা পুরস্কারের নাম খোদিত থাকে। আর এই দিকে থাকে খুব ছোটো করে লেখা ‘RH83’। ‘RH’-এর দ্বারা বুঝানো হয় ফিনল্যাণ্ডের ভাস্কর রেইমো হেইনোকে (Raimo Heino) [1932-1995], যিনি স্বর্ণপদকটির পরিকল্পনা করেছিলেন এবং 83 বলতে 1983 সালকে বোঝানো হয়। 1983 সালে প্রথম স্বর্ণপদকটি প্রস্তুত করা হয়। স্বর্ণ পদকটির বিপরীত দিকে থাকে হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত দুটি চিত্র। 2014 সালের নেভনলিনা পুরস্কার পান ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিউইয়র্কের কুরান্ট ইনস্টিটিউট অব ম্যাথেম্যাটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক সুভাষ খোট।
গাউস পুরস্কার (Gauss Prize, Mathematics Awards)
জার্মান ম্যাথেম্যাটিক্যাল ইউনিয়ান (Deutshe Mathematiker-Vereiningung বা DMV) এবং আন্তর্জাতিক গাণিতিক ইউনিয়ান বা আই-এম-ইউ এই দুই সংস্থায় যৌথ প্রচেষ্টায় গাউস পুরস্কারের সৃষ্টি। এ পুরস্কার গণিতজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বা আই সি ইউতে দেওয়া হয়। পুরস্কারটির দেওয়া শুরু হয় 2006 সালে। একটি পদক এবং 10,000 ইউরো অর্থমূল্যের এই পুরস্কারটি জার্মান গণিতজ্ঞ কার্ল ফ্রেডেরিখ গাউসের (1777-1855) নামে।
গাউস হলেন সর্বকালের সর্বদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞদের মধ্যে একজন অগ্রণী। তিনি খুব ছোটো বয়স থেকে তাঁর অসাধারণ গাণিতিক প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর আগে বিজ্ঞানের তত্ত্ব ও প্রয়োগকে এমনভাবে মেলাতে অন্য কেউ সমর্থ হননি। 1801 সালে প্রকাশিত তাঁর গ্রন্থ ‘Disquisitione Arithmeticae’ গণিত তথা বিজ্ঞান জগতের এক পরম সম্পদ। বিজ্ঞানের বহু শাখায় তাঁর অবাধ বিচরণ ও অন্যান্য অবদান সংক্ষেপে বর্ণনা সম্ভব নয়।
একটা উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, তিনি ও উইলহেম ওয়েবার (Whilhelm Weber) প্রথম ইলেকট্রিক টেলিগ্রাম আবিষ্কার করেন। তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্বে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিতে চৌম্বকীয় আবেশের (magnetic induction) এককের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গাউস’।
যাই হোক, 1998 সালে গণিতজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উদ্বৃত্ত তহবিল থেকে গাউস পুরস্কারের ভাবনাটা আসে। তবে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয় 2002 সালে গাউসের দুশো পঁচিশতম জন্মবার্ষিকীতে। এব্যাপারে DMV এগিয়ে আসে। গাউস পুরস্কার দেওয়া হয় ‘Outstanding mathematical contributions that have found significant applications outside mathematics’-এর জন্য।
কেবলমাত্র বিশেষজ্ঞরা জানেন যে আধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গণিত হল চালিকা শক্তি। এই সত্য যাতে সারা বিশ্ব বুঝতে পারে, সে উদ্দেশ্যে গাউস পুরস্কারের প্রবর্তন। যেসব ব্যক্তির গণিত গবেষণা প্রযুক্তি বা ব্যবসায় বা দৈনন্দিন জীবনে (গণিতের গণ্ডি ছাড়িয়ে) প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়েছে, তাঁদের সম্মান ও স্বীকৃতি জানাতে এই পুরস্কার। এ পুরস্কার প্রথম দেওয়া হয় 2006 সালে। গাউস পুরস্কার প্রদান করে আই এম ইউ পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রকে আরো বৃহত্তর করেছে।
2006 সালে প্রথম গাউস পুরস্কার পান জাপানি গণিতজ্ঞ ক্যোতো (Kyoto) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদগ্ধ অধ্যাপক কিয়োশি ইতো (kiyoshi Ito) [1915-2008]। ইতো কলনবিদ্যার প্রবর্তক হলেন তিনি। তাঁর আবিষ্কৃত তত্ত্ব নানা ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। এ প্রসঙ্গে ফিনাসিয়েল ম্যাথেম্যাটিকসের কথা উল্লেখ করতে হয়।
2010 সালে হায়দ্রাবাদের অনুষ্ঠিত আই-সি-এমে (ভারতে প্রথমবার) গাউস পুরস্কার প্রাপক হলেন ফরাসি বিজ্ঞানী তথা গণিতজ্ঞ যভেস এফ মেয়ের (Yves F. Meyer) (জন্ম 1939), যিনি ওয়েভলেট (Wavelet) তত্ত্বের অন্যতম জনক। ফ্রান্সের ইকোল নর্ম্যাল সুপারিয়র দ্য কাচানের (Ecole Normale Superieure de Cachan) এমিরিটাস অধ্যাপক মেয়েরকে গাউস পুরস্কার দেওয়া ‘for fundamental contribution to number theory, operator theory, harmonic analysis and his pivotal role in development of wavelets and multiresoulution analysis.’
2014 সালে এ পুরস্কার পান আমেরিকান গণিতজ্ঞ স্ট্যানলি ওশের (Stanley Osher, জন্ম 1942)
চার্ন মেডেল (Chern Medal)
চিনের এক অসাধারণ গণিতজ্ঞ ছিলেন শিং-শেন চার্ন (Shing-Shen Chern. 1911-2004)। তিনি ছিলেন গণিতের একনিষ্ট সাধক। গবেষণা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি সারাটা জীবন ব্যয় করছেন। যখনই তিনি যে ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন সেই ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। আধুনিক জ্যামিতির প্রতিটি দিক তাঁর মৌলিক অবদানের স্পর্শ পেয়েছে।
তিনি গ্লোবাল ডিফারেন্সিয়েল (Global Differential) জ্যামিতির প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে নন্দিত। এই অসামান্য গণিত প্রতিভাকে সম্মান জানাতে তাঁর নামেই ‘চার্ন মেডেল’ প্রবর্তিত। আই-এম-ইউ এবং চার্ন মেডেল ফাউন্ডেশান (Chern Medal Foundation) বা সি-এম-এফ এই দুটি সংস্থার যৌথ প্রয়াসে পুরস্কারটির বাস্তব রূপায়ণ সম্ভব হয়েছে। উল্লেখ্য, ফিল্ডস্ মেডেল, নেভানলিনা পুরস্কার এবং গাউস পুরস্কারের মতো চার্ন মেডেল আই-সি-এমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া হয়।
এটি প্রথম দেওয়া হয় 2010 সালে হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত আই-সি-এমে। চার্ন মেডেলের জন্য সে ব্যক্তি নির্বাচিত হবেন, যাঁর ‘accomplishment warrant the highest level of recognition for outstanding achievement in the field of mathematics.’ এই পুরস্কারের জন্য যে কোনো বয়সের জীবিত ব্যক্তিই নির্বাচিত হতে পারেন, তিনি যে দেশের নাগরিকই হোন না কেন।
চার্ন মেডেল প্রাপক 250,000 মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের পুরস্কার পান। শুধু তাই নয়, তিনি একক বা একাধিক সংস্থাকে মনোনীত করতে পারেন যে সংস্থা বা সংস্থাগুলি গণিতে গবেষণা, শিক্ষা প্রভৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ভূমিকা গ্রহণ করে থাকেন। সেই সংস্থা বা সংস্থাগুলিও 250,000 মার্কিন ডলার পাওয়ার অধিকারী।
2010 সালে প্রথম চার্ন মেডেল পান কানাডার বংশোদ্ভূত আমেরিকান গণিতজ্ঞ লুইস নিরেনবার্গ (Louis Nirenberg); জন্ম 1925। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের কুরান্ট ইন্সটিটিউট অফ ম্যাথেম্যাটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক নিরেনবার্গকে লিনিয়ার ও নন-লিনিয়ার (Linear and non-linear) অংশ অন্তরকলনের (partial differential) ক্ষেত্রে মৌলিক অবদান রাখার জন্য এবং এদের কমপ্লেক্স (complex) এনালিসিস ও জ্যামিতিতে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য চার্ন মেডেল প্রদান করা হয়।
2014 সালে চার্ন মেডেল পান আমেরিকান গণিতজ্ঞ ফিলিপস্ গ্রিফিথস। তিনি এ পুরস্কার পান ‘For his ground breaking and tramformative development of transcedental method in complex geometry. particularly his semial work in Hodge therory and period of algebraci vartties.’
লীলাবতী পুরস্কার (Lilavati Prize)
2010 সালে ভারতের হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত আই-সি-এমে ভারতীয় প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে লীলাবতী পুরস্কার প্রচলন করার প্রস্তাব আসে এবং আই-এম-ইউ তা গ্রহণ করে। ইনফোসিস সংস্থা এই পুরস্কারের আর্থিক দায়ভার গ্রহণ করে। ফলে 2010 সালের আই-সি-এমের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে লীলাবতী পুরস্কার প্রথম প্রদান করা হয় ।
লীলাবতী পুরস্কার কিন্তু গণিত গবেষণায় উৎকর্ষ বা মৌলিক অবদানের জন্য দেওয়া হয় না। এটি মূলত গাণিতিক বিজ্ঞানকে সাধারণের কাছে পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে এর প্রচার-প্রসার কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ, আত্মনিয়োগ ও বিশিষ্ট ভূমিকা পালনকে সম্মান জানাতে লীলাবতী পুরস্কার প্রবর্তিত হয়েছে। লীলাবতী পুরস্কার প্রাপককে একটি শংসাপত্র (citation) এবং দশলক্ষ টাকা প্রদান করা হয়।
এই পুরস্কারটি হল প্রাচীন ভারতের মহান গণিতজ্ঞ দ্বিতীয় ভাস্কর (1114-1185 খ্রিঃ) রচিত অবিস্মরণীয় গ্রন্থ ‘লীলাবতী’র নামে প্রচলিত। লীলাবতী হল মূলত পাটিগণিতের উপর লিখিত এক মূল্যবান গ্রন্থ। গণিতকে সরস ভাষায় প্রকাশ করার জন্য ভাস্করাচার্য সুললিত কবিতার ছন্দে বিভিন্ন শ্লোকের মাধ্যমে নানা গাণিতিক সমস্যা গ্রন্থটিতে উপস্থাপন করেছেন। গ্রন্থটির অসম্ভব জনপ্রিয়তা ও প্রভাবের জন্য এর যতগুলি ভাষ্য রচিত হয়েছে, তা অন্য কোনো প্রাচীন গণিতগ্রন্থের উপর লেখা হয়নি। পারসি, হিন্দি, কানাডা, গুজরাতি, তেলেগু, বাংলা প্রভৃতি নানা ভাষায় এর অনুবাদ হয়েছে।
প্রথম লীলাবতী পুরস্কার প্রাপক হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সায়মন সিং। 1964 সালে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা-মা 1950 সালে পাঞ্জাব থেকে ব্রিটেনে এসে বসবাস করতে থাকেন। তিনি লণ্ডন ইম্পিরিয়েল কলেজে পদার্থবিদ্যা অধ্যয়ন করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেনেভার CERN-এর কাজ করে পার্টিকল ফিজিক্সে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন। 1990 তিনি বি বি সি-র ‘Science and Features’ বিভাগে যোগ দেন।
তিনি বিবিসিতে ফার্মার শেষ উপপাদ্যের তথ্যচিত্র তৈরি করে পুরস্কৃত হয়েছেন। 1997 সালে তাঁর লেখা ‘Fermat’s Enigma’ হল এক বহুল প্রচারিত অত্যন্ত জনপ্রিয় গ্রন্থ। তিনি রেডিওতে নানা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁর দ্বিতীয় বই ‘The Code Book – The Secret History of Codes and Code Breaking’-ও প্রচারের আলোয় উদ্ভাসিত। তাছাড়া তিনি আর দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। গাণিতিক বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে তাঁর নিরলস প্রয়াস ও বিশিষ্ট ভূমিকাকে সম্মান জানাতে তাঁকে লীলাবতী পুরস্কারের জন্য প্রথম নির্বাচিত – করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রথম লীলাবতী পুরস্কার প্রাপককে নির্বাচন করেছেন পাঁচজন বিখ্যাত গণিতজ্ঞ। এঁরা হলেন ভারতের এম এস নরসিংহ (M. S. Narasimhan) যিনি নির্বাচন কমিটির সভাপতি। অন্যান্যরা হলেন হাঙ্গেরির লাজলো লোভাজ (Laszlo Lovasz, President IMU), ব্রিটেনের জন বল (John Ball, Past president, IMU), ব্রাজিলের জ্যাকব পালিস (Jacob Palis, Past President, IMU) এবং ভারতের এম এ রঘুনাথন (2010 সালে আই -সি-এমের কার্যকরী সংগঠন কমিটির সভাপতি)। 2014 সালে লীলাবতী পুরস্কার পান আর্জেন্টিনার সাংবাদিক তথা বুয়েনার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গণিতে পি এইচ ডিগ্রিধারী আন্দ্রিয়ান আরনোল্ডোপ্যানজডা (Andrian Arnoldo Paleza), যাঁর জন্ম 1949 সালে।