সালোকসংশ্লেষের যে দশায় আলোক শক্তির প্রয়োজন হয় না তাকে আলোক নিরপেক্ষ দশা বা অন্ধকার দশা (Photosynthesis: Light Independent Phase) বলা হয়।
এই দশাটি ক্লোরোপ্লাস্ট এর স্ট্রোমা-তে ঘটে। এটি আলোক নির্ভর দশার সঙ্গে সঙ্গেই চলতে থাকে। এই দশার বিক্রিয়াগুলি বিজ্ঞানী কেলভিন প্রথম ব্যাখ্যা করেন বলে এই দশা কে কেলভিন চক্রও বলা হয়।
একে ব্ল্যাক ম্যান বিক্রিয়া বলা হয় কেন?
আলোক নিরপেক্ষ দশা এর বৈশিষ্ট্যগুলি সর্বপ্রথম বিজ্ঞানী ব্ল্যাকমান লক্ষ্য করেন। তাই তার নাম অনুসারে, আলোক নিরপেক্ষ দশাকে ব্ল্যাক ম্যান বিক্রিয়া বলা হয়।
★★★★★কুইজে অংশগ্রহণ করার জন্য এইখানে ক্লিক করো: [ সালোকসংশ্লেষ কুইজ: Life science MCQ Quiz in Bengali ]
কেলভিন চক্র কি?
সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার অন্ধকার দশায় 6 অনু কার্বন-ডাই-অক্সাইড 6 অনু RuBP-এর সঙ্গে RuBISCO নামক উৎসেচকের সহায়তায় 12 অনু ফসফোগ্লিসারিক এসিড(PGA) গঠন করে। এরপর 12 অনু PGA থেকে 12 অনু ফসফোগ্লিসারালডিহাইড(PGAld) তৈরি হয়। এরপর 2 অনু PGAld থেকে 1 অনু গ্লুকোজ তৈরি হয়। এবং বাকি 10 অনু PGAld বিভিন্ন অন্তরবর্তী যৌগ সৃষ্টির মাধ্যমে পুনরায় RuBP -তে পরিণত হয়। এই চক্রাকার পদ্ধতিটিকে বলা হয় কেলভিন চক্র।
অন্ধকার দশার বিক্রিয়া গুলি কোথায় ঘটে?
এই দশার বিক্রিয়া গুলি ক্লোরোপ্লাস্ট-এর স্ট্রোমা তে ঘটে।
অন্ধকার দশার বিক্রিয়া গুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
সালোকসংশ্লেষের অন্ধকার দশা বা আলোক নিরপেক্ষ দশার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান গুলি হল-
- কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2)
- RuBP
- ATP
- বিজারিত NADPH2
- এবং বিভিন্ন উৎসেচক
অন্ধকার দশার ধাপ গুলি হল-
ধাপ -1 : কার্বন ডাই অক্সাইড এর স্থিতিকরণ:
এই পর্যায়ে বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2) বিভিন্ন উৎসেচক-এর সহায়তায়, ক্লোরোপ্লাস্ট-এর স্ট্রোমায় অবস্থিত RuBP-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে 3 কার্বনযুক্ত ফসফোগ্লিসারিক এসিড উৎপন্ন করে। এটি সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন প্রথম 3 কার্বন যুক্ত জৈব পদার্থ।
6CO2 + RuBP → 12PGA (3 কার্বন যুক্ত)
ধাপ -2 : PGA-এর বিজারণ:
PGA আলোক নির্ভর দশায় উৎপন্ন NADPH2 এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ফসফোগ্লিসারালডিহাইড (PGAld) গঠন করে।
12PGA + 12NADPH2 + 12 ATP → 12 PGAld + 12NADP + 12ADP
ধাপ -3 : RuBP-এর পুনঃ সংশ্লেষ :
12 অনু PGAld থেকে 10 অনু PGAld বিভিন্ন অন্তর্বর্তী যৌগ গঠনের মাধ্যমে আবার একটি চক্রাকার পথে 6 অনু RuBP তৈরি হয়।
ধাপ -4 : গ্লুকোজ সংশ্লেষ:
12 অনু PGAld -এর 10 অনু PGAld থেকে কয়েকটি ধাপে 1 অনু গ্লুকোজ তৈরি হয়।
2PGAld → ফ্রুক্টোজ 6 ফসফেট → গ্লুকোজ 6 ফসফেট → গ্লুকোজ (C6H12O6)
জীব জগতে সালোকসংশ্লেষের তাৎপর্য আলোচনা কর।
সালোকসংশ্লেষের তাৎপর্য (Significance of Photosynthesis ) :
(a) জীবের খাদ্যে সৌরশক্তির আবদ্ধকরণ ও খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে স্থিতিকরণ :
সূর্যই পৃথিবীর সকল শক্তির আধার। ক্লোরোফিলযুক্ত উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে (ATP-এর মধ্যে) কোশস্থ খাদ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে স্থিতিলাভ করে।
এই শক্তি খাদ্যের মাধ্যমে শাকাশী প্রাণী হয়ে মাংসাশী প্রাণীদের দেহে স্থানান্তরিত হয়। খাদ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি শ্বসনের মাধ্যমে গতিশক্তি বা তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয়, যা জীবদেহের সক্রিয়তা বজায় রাখতে ও বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়াগুলি চালু রাখতে সাহায্য করে।
(b) গ্লুকোজের শ্বেতসারে রূপান্তর ও সঞ্চয়ী অঙ্গে পরিবহণ :
দিনের বেলায় ক্লোরোফিলযুক্ত কোশে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। দিনের বেলায় কোশে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সালোকসংশ্লেষ ব্যাহত হয়। তাই গ্লুকোজ অ্যামাইলেজ উৎসেচকের সাহায্যে জল বিয়োজনের মাধ্যমে জলে অদ্রবণীয় শ্বেতসারে (Starch) পরিণত হয়। ও রাত্রিবেলায় শ্বেতসার ডায়াস্টেজ উৎসেচকের প্রভাবে পুনরায় গ্লুকোজে পরিণত হয়। এই গ্লুকোজের কিছু অংশ কোশের বিভিন্ন বিপাকীয় কাজে লাগে এবং অতিরিক্ত গ্লুকোজ পরিবাহিত হয়ে উদ্ভিদের বিভিন্ন সঞ্জয়ী অঙ্গে (মূল,কাণ্ড, বীজ, ফল, বীজপত্র প্রভৃতি)অ্যামাইলেজ উৎসেচকের প্রভাবে পুনরায় শ্বেতসারে পরিণত হয়ে সঞ্চিত হয়। পরবর্তীকালে এই শ্বেতসার পুনরায় গ্লুকোজে পরিণত হয়ে ব্যবহৃত হয়।
(c) সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন বাড়তি খাদ্যের সঞ্চয়ী অঙ্গ :
সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন বাড়তি গ্লুকোজ শ্বেতসারে পরিবর্তিত হয়ে নিম্নোক্ত অঙ্গে জমা হয়—
- মূল – গাজর, বিট, মুলো
- মৃগত কাণ্ড – আলু, আদা, হলুদ, পেঁয়াজ, ওল → সস্য – ধান, গম, ভুট্টা
- উদ্ভিদ প্রোটিনকে সঞ্চয়ী অঙ্গে জমিয়ে রাখে— বীজ – সয়াবিন, মুসুর, রাজমা
- বীজ – ছোলা, মটর, মুগ –
- ফল – আম, পেয়ারা, আপেল, কলা –
- উদ্ভিদ তার সঞ্চয়ী অঙ্গে লিপিডকে জমিয়ে রাখে— বীজ – সূর্যমুখি, সরিষা, নারকেল, তিল, চিনাবাদাম
(d)পরিবেশে CO2, O2, এর ভারসাম্য রক্ষা :
সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় CO2, গৃহীত হয় এবং O2, বর্জিত হয়। এর ফলে পরিবেশের O2 এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আবার, জীবদেহে দিবারাত্র শ্বসনকার্য চলে।
এই সময় জীব পরিবেশের O2, গ্রহণ করে এবং পরিবেশে CO2, ত্যাগ করে। এইভাবে সালোকসংশ্লেষ ও শ্বসন দুটি বিপরীত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবেশে O2,-CO2,-এর ভারসাম্য বজায় থাকে। এক্ষেত্রে পরিবেশের সবুজ উদ্ভিদের সংখ্যা ও ঘনত্ব গুরুত্বপূর্ণ। এদের সংখ্যা কমলে পরিবেশের O2-CO2, ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে।
(e) মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে সালোকসংশ্লেষ :
মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে সালোকসংশ্লেষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। যেমন- কাগজ শিল্পে বাঁশ, কাঠের সেলুলোজ ব্যবহৃত হয়। সেলুলোজের মূল উৎস হলো সালোকসংশ্লেষ। ও কয়লা, পেট্রোল বা পেট্রোলিয়ামজাত বস্তু সালোকসংশ্লেষের পরোক্ষ অবদান। গঁদ, রজন, তরুক্ষীর জাতীয় রেচন বস্তুও সালোকসংশ্লেষের পরোক্ষ ফসল। বেলেডনা, রেসারপিন, কুইনাইন জাতীয় ওষুধের মূল উৎস হলো সালোকসংশ্লেষ।
সালোকসংশ্লেষের হার বলতে কী বোঝো?
একটি নির্দিষ্ট সময়ে সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন O2, ও ব্যবহৃত CO2,-এর হার সমান। একেই সালোকসংশ্লেষের হার (PQ) বলে।
PQ = (সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন O2)/(সালোকসংশ্লেষে গৃহীত CO2)
C3 প্লান্ট এবং C4 প্লান্ট বলতে কী বোঝো?
যেসব উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষের অন্ধকার দশায় 3 কার্বন যুক্ত প্রথম স্থায়ী জৈব যৌগ PGA সংশ্লেষণ করে তাদের C3 উদ্ভিদ বলে যেমন-আম, জাম, কাঁঠাল ইত্যাদি।
যেসব উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষের অন্ধকার দশায় 4 কার্বন যুক্ত প্রথম স্থায়ী জৈব যৌগ অক্সালো এসিটিক অ্যাসিড সংশ্লেষণ করে তাদের C4 উদ্ভিদ বলে যেমন-ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি।
আলোক দশা এবং অন্ধকার দশার মধ্যে পার্থক্য লেখ।
আলোক দশা ও অন্ধকার দশার পার্থক্য—
বিষয় | আলোক দশা | অন্ধকার দশা |
---|---|---|
আলোর উপস্থিতি | আলোক দশায় ক্লোরোফিলকে উত্তেজিত করার জন্য আলো প্রয়োজন। | আলো-নিরপেক্ষ দশা। |
স্থান | বিক্রিয়াগুলি ক্লোরোপ্লাস্টের গ্রানা অংশে ঘটে। | অন্ধকার দশার বিক্রিয়াগুলি ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমা অংশে ঘটে। |
উৎপন্ন বস্তু | আলোক দশায় উৎপন্ন বস্তুগুলি হল— NADPH2, ATP, H2O এবং O2। | অন্ধকার দশায় উৎপন্ন বস্তুগুলি হল— গ্লুকোজ, RuBP, ADP, NADP। |
জারণ/বিজারণ | জলের জারণ ঘটে। | CO2-এর বিজারণ ঘটে। |
উৎসেচকের প্রয়োজনীয়তা | উৎসেচক-নিরপেক্ষ দশা। | উৎসেচক-নির্ভর দশা। |
অতিমাত্রিক উপাদান এবং স্বল্পমাত্রিক উপাদান (Macro and Micro nutrients) বলতে কি বোঝো?
অতিমাত্রিক উপাদান এবং স্বল্পমাত্রিক উপাদা (Macro and Micro nutrients) :
যে সমস্ত মৌলগুলি উদ্ভিদ বেশি পরিমাণে গ্রহণ করে এবং পুষ্টিতে একান্ত প্রয়োজন এবং যাদের অভাবে উদ্ভিদদেহে নানাপ্রকার রোগের লক্ষণ দেখা যায় সেগুলি হল ম্যাক্রোপৌষ্টিক (Macro-nutrient) উপাদান। যেমন—C,H, O, P, S, K, N ইত্যাদি। যে মৌলগুলি উদ্ভিদ কম পরিমাণে গ্রহণ করে এবং পুষ্টিতে ভূমিকা খুব কম তারা হল মাইক্রোপৌষ্টিক (Micro-nutrient) উপাদান। যেমন—মলিবডেনাম (Mo), তামা (Cu), দস্তা (Zn), ম্যাঙ্গানিজ (Mn), বোরন (B) ইত্যাদি।
সালোকসংশ্লেষে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল গুলি কি কি ? তাদের ভূমিকা উল্লেখ কর।
সালোকসংশ্লেষের উপাদান ও তাদের ভূমিকা ( Components and their roles in photosynthesis) :
সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য চারটি অপরিহার্য প্রধান উপাদান প্রয়োজন। উপাদানগুলি হল জল, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, সূর্যালোক এবং রঞ্জক পদার্থ (ক্লোরোফিল ও ক্যারোটিনয়েড)। এছাড়াও সাহায্যকারী উপাদান হিসাবে ADP (অ্যাডিনোসিন ডাই ফসফেট), NADP (নিকোটিনামাইড অ্যাডিনাইন ডাই নিউক্লিওটাইড ফসফেট), RuBP (রাইবিউলোজ বিস ফসফেট) প্রভৃতি কাজে লাগে।
প্রধান উপাদান (Main Components ) :
1.জল (H2O): জল সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় অন্যতম উপাদান। স্থলজ উদ্ভিদেরা মাটির কৈশিক জল মূলরোম দ্বারা শোষণ করে এবং জলজ উদ্ভিদেরা সারা গাত্র দিয়ে জল শোষণ করে। জল শোষিত হবার পর সবুজ অংশের ক্লোরোপ্লাস্টে প্রবেশ করে।
জলের ভূমিকা (Role of Water) :
(1) 1 গ্রাম-অণু গ্লুকোজ উৎপন্ন করতে 12 অণু জল লাগে।
(2) এই প্রক্রিয়ায় উপজাত পদার্থরূপে যে অক্সিজেন (O2) উৎপন্ন হয় তার উৎস জল।
(3) ক্লোরোফিল অণুকে ইলেকট্রন প্রদান করে।
(4) আলোক নিরপেক্ষ দশায় কার্বন-ডাই অক্সাইডকে বিজারিত করার জন্য যে হাইড্রোজেনের প্রয়োজন হয় তা জল থেকে উৎপন্ন হয়।
2.কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2) : বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ থাকে 0.03-0.04%। স্থলের উদ্ভিদেরা পাতার পত্ররন্ধ্র, কাণ্ডের লেন্টিসেলের মাধ্যমে এই গ্যাস গ্রহণ করে। জলে নিমজ্জিত বা জলজ উদ্ভিদেরা সারা গাত্র দিয়ে জলে দ্রবীভূত CO2 গ্রহণ করে।
ভূমিকা (Role) :
(1) CO2 সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় কাচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
(2) গ্লুকোজের (C6H12O6) মধ্যে যে কার্বন (C) অণু থাকে তার উৎস হল CO2।
(3) কার্বন-ডাই-অক্সাইডের O2গ্লুকোজ অণুর অক্সিজেনের (O2) উৎস। কারণ, H2O এর আয়ন বিশ্লেষণের ফলে যে O2, উৎপন্ন হয় তা উদ্ভিদদেহ থেকে বাইরে নির্গত হয়।
(4) বাতাসের CO2, এর কার্বন গ্লুকোজ অণুর মধ্যে আবদ্ধ হয়। অর্থাৎ কার্বন কোশস্থ যৌগে অন্তর্ভুক্ত হয় বলে সালোকসংশ্লেষকে অঙ্গার আত্তীকরণ প্রক্রিয়াও বলে।
3.সূর্যালোক (Sunlight) : সূর্যালোক বা আলো সালোকসংশ্লেষের প্রক্রিয়ার একটি প্রয়োজনীয় ও প্রধান উপাদান। এই প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সূর্যালোক থেকে গৃহীত হয়। সূর্যালোক থেকে আগত আলোর 2-4 ভাগ ক্লোরোফিল দ্বারা শোষিত হয়। কৃত্রিম আলো অর্থাৎ বৈদ্যুতিক আলোর সাহায্যেও সালোকসংশ্লেষ ঘটে, কিন্তু হার খুব কম হয়।
ভূমিকা :
(1) সবুজ উদ্ভিদের ক্লোরোফিল অণুকে সক্রিয় ও উত্তেজিত করে এবং ইলেকট্রন নির্গমনে সাহায্য করে।
(2) আলোকশক্তি গ্লুকোজ অণুর মধ্যে স্থৈতিক শক্তি হিসাবে আবদ্ধ হয়।
(3) সূর্যালোকের প্রভাবেই জলের আয়নীকরণ হয়।
(4) সৌরশক্তির প্রভাবে ADP (অ্যাডিনোসিন ডাই ফসফেট) থেকে ATP (অ্যাডিনোসিন ট্রাই ফসফেট) যৌগ উৎপন্ন হয়।
4.রঞ্জক পদার্থ (Pigments) : সালোকসংশ্লেষে ক্লোরোফিল হল মুখ্যরঞ্জক। ক্লোরোফিল ক্লোরোপ্লাস্ট নামক অঙ্গাণুতে থাকে। ক্লোরোফিল বিভিন্ন প্রকারের হয় যথা—ক্লোরোফিল a, b, c, d এবং e। ক্লোরোফিল ছাড়াও সাহায্যকারী রঞ্জক হিসাবে ক্যারোটিন (কমলা) এবং জ্যাথোফিল (হলুদ) ইত্যাদি কতকগুলি অসবুজ রঞ্জককে একত্রে ক্যারোটিনয়েডস বলে।
ভূমিকা :
(1) ক্লোরোফিল সূর্যালোকের অদৃশ্য ফোটন কণা শোষণ করে সক্রিয় হয় এবং জলকে H+ এবং OH- আয়নে বিশ্লিষ্ট করে।
(2) সৌরশক্তির প্রভাবে ক্লোরোফিল অণু ADP-কে অজৈব ফসফেটের সাহায্যে ATP-তে পরিণত করে, যেখানে সৌরশক্তি রাসায়নিক শক্তিরূপে আবদ্ধ হয়।
(3) ক্লোরোফিল-a (রঞ্জকতন্ত্র-I) এবং ক্লোরোফিল-b (রঞ্জকতন্ত্র-II) বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকরশ্মি শোষণ করে সালোকসংশ্লেষের আলোক নির্ভর বিক্রিয়াগুলি সম্পন্ন করে।
FAQs:
NPK কী ?
উদ্ভিদের পুষ্টির জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়ামকে একত্রে NPK বলে ।
ক্লোরোসিস বলিতে কী বোঝ?
ক্লোরোফিল গঠনে কিছু উপাদানের অভাবে পাতা হলুদ হয়ে যাওয়াকে ক্লোরোসিস বলে। সাধারণত পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং লৌহের অভাবে উদ্ভিদদেহে ক্লোরোসিস রোগ হয়।
একটি হিল বিকারকের নাম লেখ।
প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত একটি হিল বিকারক হল নিকোটিনামাইড অ্যাডেনিন ডাইনিউক্লিয়টাইড ফসফেট (NADP)।