World Book and Copyright Day 2023: বিশ্ব বই দিবসের অঙ্গীকার

World Book and Copyright Day
World Book and Copyright Day

World Book and Copyright Day: বিশ্ব বই দিবস বা বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস বা বইয়ের আন্তর্জাতিক দিবস,যাই বলুন না কেন, বিভিন্ন পাঠক পাঠিকাদের কাছে এই দিনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। অন্তত যাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে তাদের কাছে এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Whatsapp গ্রুপে যুক্ত হন
Telegram গ্রুপে যুক্ত হন

এই দিনটিতে পঠন, প্রকাশনা এবং কপিরাইট প্রচারের জন্য জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো(UNESCO)একটি বার্ষিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। প্রথম বিশ্ব বই দিবস 1995 সালে 23 এপ্রিল পালিত হয়েছিল।

23 এপ্রিলেই World Book Day পালন করা হয় কেনো?

১৯১৬ সালের ৭ই অক্টোবর স্প্যানিশ লেখক মিক্যাল সার্ভেন্টাসের মৃত্যুর স্মরণে বিশ্ব বই এবং কপিরাইট দিবস (World Book and Copyright Day) প্রথমে শুরু হয়েছিল। পরে এই তারিখটি 23 শে এপ্রিল তারিখে পরিবর্তন করা হয়। 23 এপ্রিল বেছে নেওয়া হয়েছে কারণ এই দিনটি, বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট লেখকের জন্ম ও মৃত্যুকে চিহ্নিত করে। উদাহরণস্বরূপ, উইলিয়াম শেক্সপিয়ার, মিগুয়েল ডি সার্ভান্তেস এবং জোসেপ প্লা 23 এপ্রিল মারা যান এবং ম্যানুয়েল মেজিয়া ভ্যালেজো এবং মরিস ড্রুন ঐ দিন জন্মগ্রহণ করেন।

বিশ্ব বই দিবস ২০২৩ আকর্ষণীয় তথ্য:

  • ‘বিশ্ব বই এবং কপিরাইট দিবস’ (World Book and Copyright Day) বিভিন্ন বইয়ের প্রকাশনা এবং তাদের কপিরাইট এর গুরুত্ব মানুষের কাছে তুলে ধরে।
  • UNESCO এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী 2023 সালের অর্থাৎ এই বছরের World Book Day-এর থিম হল আদিবাসী ভাষা, যেটি খুব দ্রুত বিলুপ্ত হতে চলেছে।
  • বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসে স্পেনের কাটালুনিয়াযতে বই ও গোলাপ দিবস হিসেবে পালিত হয়। এই দিনে দম্পতিরা একে অপরকে বই এবং গোলাপ উপহার দেয়।
  • ইউনেসকো তার 1995 সালের সাধারণ সম্মেলনে ২৩ শে এপ্রিল দিনটিকে বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিল।

[ আরো পড়ুন : World Heritage Day 2023: বিশ্ব ঐতিহ্য দিবসের অঙ্গীকার ]

আমরা বই পড়বো কেন?

বই হল বাস্তবিক এবং কাল্পনিক উভয় প্রকার জ্ঞানের আধার। বই পড়লে মানুষের মানসিক এবং বৌদ্ধিক জ্ঞানের প্রসার খুবই দ্রুততার সঙ্গে হয়।

বই পড়ার অভ্যাস থাকলে আপনার কি কি উপকার হতে পারে সেগুলি নিম্নের সারণীতে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।

  1. জ্ঞানের প্রসারণ: বই পড়লে আপনি নতুন জ্ঞান সহজেই অর্জন করতে পারেন, যেমন কোন নতুন কিছু শিখতে চাইলে সেই ধরনের বই পড়ে আপনি তার থেকে প্রস্তুতি নিয়ে নিতেই পারেন।
  2. মানসিক উন্নতি: বই পড়ার মাধ্যমে আপনি আপনার মানসিক উন্নতি করতে পারেন। এমন অনেক ভালো লেখক এর বই আছে যেগুলো পড়লে আপনার মানসিক উন্নতি ঘটতে বাধ্য।
  3. কাজের দক্ষতা: বই পড়ার মাধ্যমে আপনি নতুন কিছু শিখে সেটিকে কাজে লাগাতে পারেন। অথবা আপনি যে কাজ করছেন সেই কাজেই নিজেকে আরও দক্ষ করে তুলতে পারেন।। অর্থাৎ দক্ষতা অর্জনের প্রাথমিক উপায় হল উপযুক্ত বই পড়া।
  4. বাস্তব জীবনের উন্নতি: ভালো বই পড়ার অভ্যাস আপনাকে বাস্তব জীবনে উন্নত করতে সাহায্য করবে। যেমন ব্যবসা-বাণিজ্য, কর্মচারীদের নেতৃত্ব দেওয়া, সামাজিক পরিবেশে সুশৃংখল বজায় রাখা, ইত্যাদি বিষয়গুলিতে আপনাকে দক্ষ করে তুলতে পারে একমাত্র বই।
  5. সমস্যা সমাধান: বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ নিজেই নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে, যেমন মানসিক কোন সমস্যার জন্য সমাধান অথবা সামাজিক কোনো সমস্যার জন্য সমাধান যে সমাধানই হোক না কেন উপযুক্ত বই পড়ার মাধ্যমে আপনি সেই সমস্যাকে সহজে সমাধান করার জন্য তার জ্ঞানলাভ করতেই পারেন।
  6. ভাষার উন্নয়ন: বই পড়ার মাধ্যমে আপনি আপনার ভাষাজ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারেন। নতুন নতুন ভাষা আপনি শিখতে পারেন। নতুন ভাষায় কথা বলার দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। এছাড়াও আপনি নতুন নতুন শব্দ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং বিভিন্ন ভাষাতে সে সমস্ত শব্দের প্রয়োগ কৌশল শিখতে পারেন।
  7. জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি: বই পড়ার মাধ্যমে আপনি প্রচুর বিষয়ের উপযুক্ত জ্ঞান লাভ করতে পারেন। তার সাথে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন কালচার সম্পর্কেও জানতে পারেন এবং বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়গুলি সম্পর্কেও জানতে পারেন এভাবে আপনার জ্ঞানের স্তর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করতে পারেন। আর প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তি পৃথিবীতে অনেক কিছুই করতে পারেন এটা তো সকলেই জানেন।
  8. স্বপ্ন পূরণ: আপনি আপনার স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য হয়তো বদ্ধপরিকর। এক্ষেত্রে আপনি একটা ভালো চাকরি যদি পেতে চান অথবা আপনি কোন আধিকারিক হতে চান, বা আপনি কোন জায়গা ভ্রমণ করতে চান সব ক্ষেত্রেই বইকে যদি আপনি সাথী করেন, সেটাই সব থেকে সহজ উপায়।

উপসংহার

সবশেষে বলবো বই মানুষের কল্পনা শক্তিতে শান দিতে পারে। বই পড়ার মাধ্যমে আপনার কল্পনাশকটি এতটাই বেড়ে যায় যে আপনি এটা ভাবতে পারেন যে পৃথিবীতে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। বই পড়ার মাধ্যমে আপনি জীবনের এক অন্যরকম দ্বার খুলে ফেলতে পারেন। এছাড়াও মনের মধ্যে জেগে ওঠা যে কোন প্রশ্নের উত্তর নেমেছি পেয়ে যেতে পারেন বিভিন্ন বই পড়ে।
সর্বোপরি খুব ভালো মানুষ হওয়ার জন্য ভালো বই পড়া এবং ভালো পাঠক হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।