২০২২ প্রাইমারি TET Data Leak: দেড় লক্ষ পরীক্ষার্থীর গোপন তথ্য উন্মুক্ত, বোর্ডের সতর্কতা নোটিফিকেশন কী বলছে?

Our WhatsApp Group Join Now

২০২২ সালের প্রাইমারি TET-এর উত্তীর্ণদের সার্টিফিকেট এবং ব্যক্তিগত তথ্য একটি অননুমোদিত পোর্টালে ফাঁস হয়েছে, যা পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির আশঙ্কা জাগিয়েছে। West Bengal Board of Primary Education (WBBPE) ২৫ আগস্ট, ২০২৫-এ একটি Urgent Public Notification জারি করে তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা দাবি করছেন যে এটি একটি বৃহত্তর চক্রান্ত। 2022 TET Data Leak West Bengal-এর এই ঘটনা শিক্ষা ব্যবস্থার ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে, যা August 2025-এ সামনে এসেছে। Primary TET 2022 Scam Allegations-এর মধ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক এবং প্রতিবাদ চলছে।

TET Data Leak
TET Data Leak

ঘটনার চাঞ্চল্যকর সূত্রপাত

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ফের একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে। ২০২২ সালের প্রাইমারি Teachers Eligibility Test (TET)-এ উত্তীর্ণ প্রায় ১.৫ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য এবং সার্টিফিকেট একটি বেসরকারি পোর্টালে উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। এই পোর্টালটি মূলত জমি বা ভোটার কার্ড সংক্রান্ত পরিষেবা প্রদান করে, যা শিক্ষা বিভাগের সাথে কোনো যোগসূত্র নেই। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২৪ আগস্ট, ২০২৫-এ, যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সাইটের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়। পরীক্ষার্থীরা হতবাক হয়ে যান যখন দেখেন তাদের নাম, রোল নম্বর এবং জন্ম তারিখের মতো সংবেদনশীল তথ্য সবার চোখের সামনে।

এই TET Certificate Leak-এর ফলে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। একজন অভিযোগকারী বলেন, “আমরা কঠোর পরিশ্রম করে পরীক্ষা পাশ করেছি, কিন্তু এখন আমাদের তথ্য ফেক জব অফার বা প্রতারণার জন্য ব্যবহার হতে পারে।” পরীক্ষাটি ১১ ডিসেম্বর, ২০২২-এ অনুষ্ঠিত হয়, যাতে ৭ লক্ষেরও বেশি প্রার্থী অংশ নেন। ফলাফল ফেব্রুয়ারি ২০২৩-এ প্রকাশিত হয়, কিন্তু তিন বছর পরেও ইন্টারভিউ শুরু না হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে। এই Data Breach শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নয়, বরং রাজ্যের ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারের দুর্বলতা উন্মোচন করেছে।

বোর্ডের সতর্কতা নোটিফিকেশন: তদন্তের প্রতিশ্রুতি

West Bengal Board of Primary Education (WBBPE) এই ঘটনায় তৎপর হয়ে ২৫ আগস্ট, ২০২৫-এ একটি Urgent Public Notification জারি করেছে। এই নোটিফিকেশনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, TET 2022-এর তথ্য কোনো অননুমোদিত বেসরকারি পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু এটি বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট wbbpe.org থেকে লিক হয়নি। বোর্ডের সচিবের স্বাক্ষরিত এই নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এটি একটি সম্ভাব্য চক্রান্ত বা প্রতারণামূলক কার্যকলাপ, এবং তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের সতর্ক করে বলা হয়েছে যাতে তারা কোনো থার্ড-পার্টি সাইট থেকে তথ্য ডাউনলোড না করেন এবং অফিসিয়াল সূত্রে যোগাযোগ করেন।

WBBPE notification
WBBPE Notice

বোর্ডের সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছেন, “আমাদের সিস্টেম সুরক্ষিত, কিন্তু এই লিকের পিছনে যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” নোটিফিকেশনে আরও বলা হয়েছে যে, ফেব্রুয়ারি ২০২৩ থেকে অফিসিয়াল সাইটে তথ্য উপলব্ধ, এবং কোনো প্রতারণার শিকার না হওয়ার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে। এই পদক্ষেপ সত্ত্বেও, চাকরিপ্রার্থীরা প্রশ্ন তুলছেন যে, বোর্ডের দায় এড়ানো যাবে কি? এই নোটিফিকেশন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা ঘটনার গুরুত্ব বাড়িয়েছে।

ভারতীয়দের গণিতে অবদান জানার জন্য এইখানে ক্লিক করুন (বিশেষ করে, প্রাইমারি টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য)

চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন এবং অভিযোগের ঝড়

এই Data Leak-এর খবর ছড়াতেই চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। কলকাতার করুনাময়ীতে প্রতিবাদ মিছিলে হাজারো উত্তীর্ণ প্রার্থী দাবি তুলেছেন যে, তিন বছর ধরে ইন্টারভিউ না হওয়ার পর এখন তথ্য ফাঁস হয়ে তাদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন। পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি হয়েছে, এবং কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এক প্রতিবাদকারী বলেন, “আমরা বেকারমেলা আয়োজন করে প্রতীকী প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু সরকার শোনে না।” সোশ্যাল মিডিয়ায় Bidesh Gazi-এর মতো ব্যক্তিরা এক্সক্লুসিভ খবর শেয়ার করে বলছেন যে, এটি একটি বড় জালিয়াতির লক্ষণ।

পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন যে, লিক হওয়া লিস্টে কিছু প্রার্থীর নাম রয়েছে যারা বয়সের সীমা অতিক্রম করেছেন, যা নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ জাগায়। এই TET 2022 Qualified Aspirants Protest-এর মধ্যে Identity Theft-এর আশঙ্কা বেড়েছে, এবং অনেকে Cyber Crime বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রতিবাদগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে যে, চাকরিপ্রার্থীরা আর ধৈর্য ধরতে চান না, এবং এটি একটি বৃহত্তর আন্দোলনের রূপ নিতে পারে।

পূর্ববর্তী কেলেঙ্কারির ছায়া এবং যোগসূত্র

এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগের দীর্ঘ ইতিহাসকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। ২০১৪ সালের TET-এ অনিয়মের অভিযোগে Calcutta High Court-এর নির্দেশে CBI তদন্ত চলছে, যাতে অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। ২০২২ TET-এও প্রশ্নপত্র লিকের গুজব ছড়িয়েছিল, যদিও শিক্ষামন্ত্রী Bratya Basu তা খারিজ করেছেন। পরীক্ষার দিনে ৬ জেলায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল প্রতারণা রোধে, কিন্তু Biometric System-এর সমস্যা এবং ভুল অ্যাডমিট কার্ডের অভিযোগ উঠেছে।

CBI-এর তল্লাশিতে প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে প্রমাণ উদ্ধার হয়েছে, যা এই চক্রান্তের সাথে যুক্ত। সম্প্রতি Supreme Court-এ ২৬,০০০ শিক্ষকের রিভিউ পিটিশন খারিজ হয়েছে, যা নিয়োগ বাতিলের মামলা জটিল করেছে। এই Primary TET 2022 Scam Allegations পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর সাথে মিলে যাচ্ছে, এবং অনেকে মনে করছেন যে, এটি একটি সংগঠিত সিন্ডিকেটের কাজ।

রাজনৈতিক বিতর্ক এবং অভিযোগের তীর

এই লিক রাজনৈতিক ঝড় তুলেছে। BJP নেতা Suvendu Adhikari অভিযোগ করেছেন যে, Mamata Banerjee সরকারের অস্বচ্ছতার ফল এটি, এবং টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র বিক্রির গুজব ছড়িয়েছে। Trinamool Congress বলছে যে, এটা বিরোধীদের প্রচারমূলক কৌশল। সম্প্রতি Election Commission-এর ভোটার Data Breach-এ পাঁচজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, যা এই ঘটনার সাথে যুক্ত বলে কেউ কেউ মনে করছেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন যে, কোনো লিক হয়নি এবং এটি ফেক খবর। কিন্তু BJP Teachers Cell-এর নেতারা বোর্ডের অমানবিক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। এই রাজনৈতিক টানাপোড়েন ঘটনাকে আরও সংবেদনশীল করে তুলেছে, এবং আগামী দিনে এটি ভোটের ইস্যু হতে পারে।

সম্ভাব্য প্রভাব এবং ভবিষ্যতের ছায়া

এই Bengal Primary Teachers Recruitment Data Leak-এর ফলে পরীক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বেড়েছে, এবং অনেকে আইডেন্টিটি থেফটের ভয়ে রাত্রি জাগরণ করছেন। নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হতে পারে, যা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। সরকারকে Encryption এবং Third-Party Audit-এর মতো কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

High Court এবং Supreme Court-এর মামলাগুলো চলছে, যা হাজারো শিক্ষকের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদার না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় ক্ষতি হতে পারে।

আশার আলো কোথায়?

২০২২ প্রাইমারি TET Data Leak পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি অন্ধকার অধ্যায়। বোর্ডের নোটিফিকেশন এবং তদন্ত প্রতিশ্রুতি আশা জাগালেও, চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিবাদ দেখিয়ে দিচ্ছে যে, স্বচ্ছতা ছাড়া কোনো সমাধান নেই। যদি এটি চক্রান্ত হয়, তাহলে দোষীদের শাস্তি দেওয়া দরকার। রাজ্যের যুবসমাজের ভবিষ্যৎ রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক, যাতে এই কেলেঙ্কারি থেকে উত্তরণ সম্ভব হয়।

Leave a Comment