প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা আজকের প্রতিবেদনে আমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি। তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
প্রতিবেদনে যে সমস্ত তথ্যগুলি দেয়া সম্ভব হয়নি তার সমস্তই এই বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf (Air Pollution Project pdf) ফাইলটির মধ্যে রয়েছে। চলো শুরু করা যাক।
বায়ু দূষণ কাকে বলে?
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট ভূমিকা: বায়ু দূষণের সংজ্ঞা: ওয়ালর্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন (WHO) -এর মতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের মধ্যে অনিষ্টকর পদার্থের সমাবেশ যখন মানুষ ও তার পরিবেশের ক্ষতি করে, সেই অবস্থাকে বায়ু দূষণ বলে। আবহমন্ডলে দূষিত ধোঁয়া, গ্যাস, গন্ধ, ধোঁয়াশা, বাষ্প ইত্যাদি যে পরিমাণে ও যতক্ষণ স্থায়ী হলে মানুষ, জীবজন্তু ও উদ্ভিদ জগতের ক্ষতি হয় বা বায়ুমন্ডলে জমে থাকা যে সমস্ত দূষিত পদার্থ মানুষের জীবন ও স্বাচ্ছন্দ্যে বাধা দেয়, তাকে বায়ু দূষণ বলে। এখানে উল্লেখ করা যায় যে, বায়ু দূষণের পরিধি ও ব্যাপকতা সবচেয়ে বেশি। কারণ বাতাস সবচেয়ে তাড়াতাড়ি দূষিত পদার্থকে চতুর্দিকে ছড়িয়ে দিতে পারে। তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf download
বায়ু দূষণের উৎস ও কারণ:
বায়ু দূষণ নানাভাবে হতে পারে। এর মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক কারণ আর কিছু মানুষের তৈরি করা কারণ, যেমন
বায়ু দূষণের প্রাকৃতিক কারণ ও উৎসসমূহ:
(১) অগ্ন্যুৎপাতের ফলে নিঃসৃত সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস।
(২) বিভিন্ন জৈব ও অজৈব পদার্থের পচনের ফলে সৃষ্ট গ্যাস।
(৩) দাবানল (Forest fire), ধুলি ঝড়।
(৪) ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, ফানজাই (fungi), অ্যালজি (algae), পরাগরেণু (pollen) ইত্যাদি।
অপ্রাকৃতিক বা মানুষের তৈরি বায়ু দূষণের কারণ :
(১) খনি এলাকার ধুলোবালি, ধূলিকণা, শিল্পজাত ধুলি (যেমন— ফ্লাই-অ্যাশ), কালিঝুলি (soot) ইত্যাদি।
(২) দাড়ি কামানোর ফোম ও স্প্রে, বিমানে ব্যবহৃত এরোসল (aerosols); এবং বিভিন্ন বিষাক্ত তরল পদার্থ।
(৩) যানবাহন ও কলকারখানা থেকে নির্গত গ্যাস, যেমন- কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, নাইট্রোজেন অক্সাইড ইত্যাদি। এখানে উল্লেখ করা যায় যে হাইড্রোকার্বন ও কার্বন মনোক্সাইডের প্রধান উৎস হল কয়লা, পেট্রোল প্রভৃতি জ্বালানীর অসম্পূর্ণ দহন।
(৪) ব্যাপকভাবে অরণ্য ধ্বংস করার ফলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড ভারসাম্যের হানি ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি।
(৫) যুদ্ধ-বিগ্রহের ফলে বা পারমাণবিক চুল্লীতে দুর্ঘটনার ফলে তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণ (যেমন— পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নে চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের দুর্ঘটনা বা হিরোসিমা-নাগাসাকিতে পরমাণু বোমার ধ্বংসলীলা) ইত্যাদি।
তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
মানুষের উপর বায়ু দূষণের প্রভাব:
বায়ু দুষণ মানুষের ক্ষতি করে। যেমন—
(১) ধোঁয়াশার প্রভাবে চোখ জ্বালা করে। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়।
(২) সালফার ডাই-অক্সাইডের প্রভাবে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ব্রঙ্কাইটিস, যক্ষ্মা প্রভৃতি রোগ দেখা দেয়।
(৩) নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের জন্য শ্বাসকষ্ট হয়। ফুসফুসের ক্ষতি হয়। নিউমোনিয়া হওয়ার আশংকা থাকে।
(৪) কার্বন মনোক্সাইডের জন্য রক্তের অক্সিজেন সংবহন ক্ষমতা বিঘ্নিত হয়।
(৫) বেঞ্জপাইরিনের জন্য ক্যান্সার হয়। এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, রাস্তায় দেওয়ার জন্য পিচ গলানোর সময়ে যে ধোঁয়া বেরোয়, তাতে বেঞ্জপাইরিন জাতীয় যৌগ পাওয়া যায়।
(৬) বাতাসে ভাসমান সীসা, বালি, কয়লার গুঁড়ো ইত্যাদি শ্বাসনালী ও ফুসফুসের ক্ষতি করে। স্নায়ুরোগের কারণ হয়।
বায়ু দূষণের মূল উপাদান:
মূলত তিনটি উপাদানের মাত্রার উপর নির্ভর করে বায়ু দূষণের পরিমাণ হিসাব করা হয়। যেমন—
(১) সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2)।
(২) নাইট্রোজেন অক্সাইড (NO) ।
(৩) বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম কণিকা (Suspended Particulate Matter অর্থাৎ SPM)।
মুখ্য বায়ু দূষক:
প্রাকৃতিক কারণে বা মানুষের বিভিন্ন কাজকর্মের মাধ্যমে সৃষ্ট যে সমস্ত বায়ু দূষক সামগ্রিকভাবে পরিবেশের ক্ষতি করে, তাদের মুখ্য বায়ু দূষক (Primary Pollutlants) বলে। বায়ুমন্ডলে দূষণের প্রায় ৯০% এই দূষকগুলির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। উদাহরণ— সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, অধিকাংশ হাইড্রোকার্বন, বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম কণিকা ইত্যাদি। তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf download
বায়ুর প্রধান গৌণ দূষক:
বায়ুতে যে সমস্ত স্বাভাবিক যৌগগুলি পাওয়া যায়, তার সাথে মুখ্য দূষকগুলির বিক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট রাসায়নিক পদার্থগুলিকে গৌণ দূষক (Secondary Pollutants) বলে। যেমন— ধোঁয়াশা, ওজোন গ্যাস, সালফার ট্রাই-অক্সাইড, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, সালফিউরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
বায়ুদূষণে সালফার ডাই-অক্সাইডের (SO2) ভূমিকা:
সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2)একটি বর্ণহীন তীব্র, বিশ্রী গন্ধযুক্ত গ্যাস ও বায়ু দূষক।
প্রাকৃতিক উৎস : আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুপাত।
মানবীয় উৎস : বিভিন্ন কলকারখানা থেকে সালফার ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়, যেমন— তেল শোধনাগার, অ্যাসিড কারখানা, কাগজ কল, সার কারখানা, সিমেন্ট কারখানা, তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ধাতু নিষ্কাশন কেন্দ্র (মেটাল স্মেলটার) ইত্যাদি।
জীবদেহের উপর প্রভাব : ফুসফুসের রোগ, শ্বাসনালীর প্রদাহ, হাঁপানি (বায়ুতে SO2)-এর মাত্রা ৫ থেকে ১০ পিপিএম [ppm] হলে), মৃত্যু (SO2,-এর মাত্রা ২০০ পিপিএম-এর বেশি হলে)।
উদ্ভিদের উপর প্রভাব : বৃহৎ পত্রযুক্ত গাছপালার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
বায়ুদূষণে নাইট্রোজেন অক্সাইডসমূহের প্রভাব:
নাইট্রাস অক্সাইড(N2O)), নাইট্রিক অক্সাইড (NO) এবং নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড(NO2)— নাইট্রোজেনের এই তিনটি অক্সাইড বায়ুদূষণ করে।
নাইট্রাস অক্সাইড(N2O)[লাফিং গ্যাস laughing gas] একটি বর্ণহীন গ্যাস। এই গ্যাস বায়ুমন্ডলে গ্রীনহাউস প্রভাব বৃদ্ধি করে। দাঁতের চিকিৎসায় অনেক সময় অসাড় করার কাজে এই গ্যাস ব্যবহৃত হয়। নাইট্রিক অক্সাইড (NO)-ও একটি বর্ণহীন গ্যাস। নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড(NO2) [নাইট্রোজেন পার-অক্সাইড] একটি গাঢ় বাদামি রঙের ঝাঁঝাল গন্ধের গ্যাস। –
প্রাকৃতিক উৎস : নাইট্রোজেন মোচন প্রক্রিয়া অর্থাৎ ডিনাইট্রিফিকেশন প্রক্রিয়ার প্রভাবে নাইট্রাস অক্সাইড (N2O)সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। মাটি ও জলে থাকা নাইট্রেট লবণ বিজারিত হয়ে নাইট্রাস অক্সাইড তৈরি হয়।
মানবীয় উৎস: (১) কৃষিকাজের জন্য প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেনঘটিত সার ব্যবহার করলে পরিবেশে নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
(২) পুকুর, জলাশয়, নদী ইত্যাদিতে প্রচুর জৈব বর্জ্য ফেলা হলে নাইট্রাস অক্সাইডের সৃষ্টি হয়। (৩) সার কারখানা, তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ধাতু নিষ্কাশন কেন্দ্র, যানবাহন প্রভৃতি উৎস থেকে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের সৃষ্টি হয়।
জীবদেহের উপর প্রভাব: শ্বাসকষ্ট হয়। ফুসফুসের রোগ হয় (বায়ুতে NO2-র মাত্রা ৫০–২০০ পিপিএম হলে); মৃত্যু (NO2-র মাত্রা ৫০০ পিপিএম-এর বেশি হলে)।
উদ্ভিদের উপর প্রভাব: বিন, টমেটো প্রভৃতি গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
পরিবেশের উপর প্রভাব: বায়ু দূষণ বৃদ্ধি পায়। বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বাড়ে। ওজোন স্তরের ক্ষতি করে।
তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf download
বায়ু দূষণে হাইড্রোকার্বনের ভূমিকা কি?
এগুলি জৈব যৌগ। কার্বন ও হাইড্রোজেন মিলে হাইড্রোকার্বন সৃষ্টি হয়। এই যৌগগুলি সংপৃক্ত বা অসংপৃক্ত দু’ধরনেরই হতে পারে। হাইড্রোকার্বনের উদাহরণ হল মিথেন (CH4), ইথেন (C2H6) ইত্যাদি।
স্বাভাবিক উৎস:
(১) জলাজমিতে অনুজীবের অবাত শ্বসনের ফলে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।
(২) গবাদি পশুর জাবর কাটার ফলে মিথেন তৈরি হয়।
মানবীয় উৎস:
(১) যানবাহন ও কলকারখানা থেকে মিথেন ও অন্যান্য হাইড্রোকার্বন তৈরি হয়।
(২) জীবাশ্ম জ্বালানি, গবাদি পশুপালন, ধান চাষ, জৈব বর্জ্য, কম তাপে জৈব পদার্থের দহন প্রভৃতি কারণে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।
ফটোকেমিক্যাল অক্সিডেন্টসমূহের অন্তর্গত প্রধান বায়ু দূষকগুলি কি?
ওজোন (O3), পারঅক্সিল নাইট্রেটসমূহ (PANs), হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড (H2O2), অ্যালডিহাইড।
তেজস্ক্রিয় পদার্থের অন্তর্গত প্রধান বায়ু দূষকগুলি কি?
স্ট্রনসিয়াম-৯০, রেডন-২২২, আয়োডিন-১১১, প্লুটোনিয়াম-২৩৯।
বিভিন্ন ধরনের বায়ু দূষকগুলির স্বাভাবিক মাত্রা মান (TLV):
বিভিন্ন ধরনের বায়ু দূষকগুলির স্বাভাবিক মাত্রা নিচের pdf ফাইলটিতে সম্পূর্ণরূপে দেওয়া আছে। তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf download
TLV-STEL কি?
TLV-STEL কথাটির ইংরেজি পূর্ণরূপ হল Threshold Limit Value Short Term Exposure Limit বাংলা ভাষান্তরে বলা যেতে পারে, স্বল্পকালীন প্রকাশ সীমার স্বাভাবিক মাত্রামান। অনেক সময় শ্রমজীবী মানুষকে এমন কিছু কিছু পরিবেশে কাজ করতে হয়, যেখানে বাতাসে নানান বস্তুকণা ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। অথবা বায়ুতে নানা ধরনের গ্যাসের উপস্থিতি রয়েছে, যা ক্ষতিকারক। এই অবস্থায় সেখানে মানুষ দীর্ঘক্ষণ কাজ করলে, তার শারীরিক ক্ষতির সমূহ সম্ভাবনা। তাই বিজ্ঞানীরা কতকগুলি ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছেন, যেটুকু সময়ের মধ্যে লোকে মোটামুটি দুষিত পরিবেশেও নিরাপদে কাজকর্ম করতে পারে। এই পূর্ব-নির্ধারিত সময়সীমাটি হল (মানুষের) স্বল্পকালীন প্রকাশ সীমা। অর্থাৎ Short Term Exposure Limit বা STEL।
বস্তুত, কোনো মানুষের কাজের সময় যদি ধরা হয় আট ঘন্টা এবং তাকে যদি ওই সময়ের মধ্যে কিছুটা সময় কাজের জন্য মোটামুটি কোনো দূষিত পরিবেশে কাটাতে হয়, তা হলে পদ্ধতি হল, যে কোনোভাবেই সেই মানুষটি যেন একনাগাড়ে ১৫ মিনিটের বেশি ওই পরিবেশে কাজ না করে। এইভাবে দিনে ৪ বারের বেশি অর্থাৎ দিনে দফায় দফায় মোট ১ ঘন্টার বেশি তাকে এই কাজে লাগানো যাবে না। এখানে মনে রাখা দরকার যে, বিপদজ্জনক ভাবে দূষিত পরিবেশে মানুষকে সরাসরি কাজে লাগানোর পরিবর্তে যন্ত্রমানব বা রোবট ব্যবহার করা দরকার। প্রযুক্তিবিদরা এ বিষয়ে নিরন্তর গবেষণা করছেন।
তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
ধোঁয়াশা কাকে বলে?
বাতাসে নাইট্রোজেনের অক্সাইড এবং হাইড্রোকার্বনের সাথে সূর্যরশ্মির আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটলে যে ধোঁয়াটে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে ধোঁয়াশা বলে। শহরাঞ্চলে বিকালবেলা, বিশেষতঃ শীতকালে বিকালের দিকে ধোঁয়াশার উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।
কোন বায়ু দূষকগুলি পাথর ও কংক্রিট-এর ক্ষতি করে। এই বস্তুগুলির উপর দূষণের প্রভাব কি?
যে সমস্ত বায়ু দূষক পাথর ও কংক্রিটের ক্ষতি করে তাদের মধ্যে অন্যতম হল সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2), সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3), বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্রকণা (SPM) ইত্যাদি।
এই বায়ু দূষকগুলির প্রভাবে পাথর ও কংক্রিটের তৈরি সৌধ, মিনার, স্তম্ভ, অট্টালিকা, উপাসনা স্থল ইত্যাদি ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে পড়ে। পাথর ও কংক্রিটের পৃষ্ঠদেশে ময়লা জমে, এমনকি ক্ষয়ে যায়। এই কারণে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, আগ্রার তাজমহল প্রভৃতি সৌধগুলির ধীর অবক্ষয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
কোন বায়ু দূষকগুলি ধাতব পদার্থের ক্ষতি করে? এই বস্তুগুলির উপর দূষণের প্রভাব কি?
যে সমস্ত বায়ু দূষক ধাতব পদার্থের ক্ষতি করে, তাদের মধ্যে অন্যতম হল সালফার ডাই-অক্সাইড (SO)), সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3), হাইড্রোজেন সালফাইড (H2S), বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্রকণা (SPM) ইত্যাদি।
এই বায়ুদূষকগুলির প্রভাবে ধাতব নির্মিতিসমূহের (অর্থাৎ ধাতু দিয়ে গড়া বিভিন্ন জিনিসের, যেমন— সেতু) ক্ষতি হয়। ধাতব পদার্থের শক্তি কমে যায়, অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে, ক্ষয়ে যায়।
তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf download
কোন বায়ু দূষক কাগজ ও চামড়ার ক্ষতি করে?
এই বস্তুগুলির উপরে দূষণের প্রভাব কি?
সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2) কাগজ ও চামড়ার বিশেষ ক্ষতি করে। SO, এর প্রভাবে কাগজ ও চামড়া বিবর্ণ হয়ে যায়, শক্তি কমে যায়, উজ্জ্বলতা হ্রাস পায় ইত্যাদি।
কোন বায়ু দূষক কাচ ও সিরামিকের ক্ষতি করে?
এই বস্তুগুলির উপরে দূষণের প্রভাব কি?
হাইড্রোজেন ফ্লুয়োরাইড (HF) [হাইড্রোফ্লুয়োরিক অ্যাসিড] এবং বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্রকণা (SPM)-র প্রভাবে কাচ ও সিরামিকের বস্তু সামগ্রীর ক্ষয় হয়।
তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
কোন বায়ু দূষকগুলি রবারজাত দ্রব্য ও জামাকাপড়ের ক্ষতি করে? এই সামগ্রীর উপর দূষণের প্রভাব কি?
ওজোন (O) রবারজাত দ্রব্যের বিশেষ ক্ষতি করে। আর বস্তুসামগ্রীর ক্ষতি করে যে সমস্ত বায়ুদূষক তাদের মধ্যে অন্যতম হল সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (NO2), ওজোন (O3), বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্রকণা (SPM)। এই বায়ুদূষকগুলির প্রভাবে আলোচ্য বস্তুসামগ্রীর শক্তি হ্রাস পায়, ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়।
মানবদেহে বায়ু দূষকগুলির প্রভাব কি?
- কার্বন মনোক্সাইড (CO) : দৃষ্টিবিভ্রম, দৃষ্টিশক্তি হানি, মাথাধরা, মাথাব্যথা, মাথা ঝিমঝিম, অজ্ঞানহয়ে যাওয়া, রক্তের অক্সিজেন বহন ক্ষমতা কমে যাওয়া, এমকি কার্বন মনোক্সাইডের প্রভাবে মৃত্যুও হতে পারে। বস্তুত CO একটি শ্বাসদূষক ও রক্তদূষক গ্যাস।
- কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) : শ্বাসকষ্ট ও শারীরিক নানা অস্বস্তি।
- সালফার ডাই-অক্সাইড (SO) : শ্বাসকষ্ট, কাশি, চোখে অস্বস্তি, হৃদযন্ত্রে গন্ডগোল, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
- নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ (NO) : নাইট্রিক অক্সাইড (NO), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (NO2) এবং নাইট্রাস অক্সাইড (NO)-এর প্রভাবে জীবদেহের কেন্দ্রীয় নাৰ্ভতন্ত্র (central nervous system) দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্ত দূষিত হয়। ফুসফুসের ক্ষতি হয়। চোখ, নাক ও গলায় অস্বস্তি হয়। বায়ুতে আলোচ্য দূষকগুলির ঘনত্ব বৃদ্ধি পেলে মৃত্যু হতে পারে।
- হাইড্রোজেন সালফাইড (H2S) : মাথা ধরা, বমি ভাব, পেট খারাপ, চোখ ও গলা জ্বালা এমনকি শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হতে পারে।
- হাইড্রোজেন ফুয়োরাইড (HF): ফ্লুরোসিস (Fluorosis) নামক রোগ সৃষ্টি করে। হাত, পা, হাঁটু, শিরদাঁড়া ও গাঁটে ব্যথা হয়।
- হাইড্রোকার্বন (Hydrocarbons) : ফুসফুসের রোগ, শ্বাসকষ্ট এবং ক্যানসার হতে পারে।
- ওজোন (O): ফুসফুসে রক্তক্ষরণ ও ক্যানসার, মাথাধরা, চোখের অসুখ, ব্রংকাইটিস, গ্যাসের সমস্যা ইত্যাদি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- ক্লোরিন (CI) : শ্বাসকষ্ট, শ্বাসনালিতে জ্বালাভাব, চোখের সমস্যা হতে পারে। (১০) ভাসমান সূক্ষ্মকণা (SPM) : নাক, কান, গলা, চোখ, ফুসফুস ও মস্তিষ্কের নানারকম রোগ সৃষ্টি করে।
তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf download
গৃহ-অভ্যন্তরের বায়ুদূষক বা ইনডোর এয়ার পল্যুট্যান্ট বলতে কি বোঝায়? এই বায়ুদূষকগুলির প্রভাব কি?
বাড়ির ভেতরে বদ্ধ বা আংশিক উন্মুক্ত পরিবেশে যে বায়ুদুষকগুলির সন্ধান পাওয়া যায়, তাদের গৃহ-অভ্যন্তরের বায়ুদূষক বা ইনডোর এয়ার পল্যুট্যান্ট (Indoor Air Pollutants) বলে। যেমননাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ, বেনজোপাইরিন, প্যারা-ডাইক্লোরোবেনজিন ইত্যাদি। –
বস্তুত গৃহের অভ্যন্তর অর্থাৎ বাড়ির ভিতরের পরিবেশেও প্রচুর বায়ুদূষক আছে। মানব শরীরে বা প্রাণীদেহে তাদের প্রভাব বাড়ির বাইরের উন্মুক্ত পরিবেশে প্রাপ্ত বায়ুদূষকগুলির তুলনায় কিছু কম নয়। বিশেষত আধুনিককালে মানুষ এমন বহু পেশার সঙ্গে যুক্ত, যেখানে মানুষকে ঘরের ভিতরে দিনের বছঘন্টা একনাগাড়ে কাটাতে হয়, যেমন— কল সেন্টারের কাজ, কমপিউটারভিত্তিক অন্যান্য কাজ (ডেটা এন্ট্রি-র কাজ, ডিটিপি-র কাজ), কোম্পানি পরিচালনার কাজ, ব্যাঙ্কের কাজ, হোটেল ম্যানেজমেন্ট-এর কাজ ইত্যাদি। ফলে ঘরের ভিতরে বিভিন্ন উৎস থেকে সৃষ্টি হওয়া বায়ুদূষকগুলি মানুষের শরীরে নেতিবাচক বা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
উড়ন্ত ছাই বা ফ্লাই অ্যাশ কাকে বলে? এর উৎসগুলি কি কি?
উড়ন্ত ছাই নামটি থেকেই এর অর্থ পরিষ্কার বুঝতে পারা যায়। আমরা জানি, কয়লা পুড়ে ছাই (ash) হয়। ছাই-এর কণাগুলি মাপে ভীষণ ছোট। এদের ব্যাস মাত্র ০.০২ মাইক্রোমিটার থেকে ১০ মাইক্রোমিটার (m) । [১ মাইক্রোমিটার মানে ১ মিটার-এর ১০ লক্ষ ভাগের ১ ভাগ। অথবা ১ মাইক্রোমিটার = ০.০০০০০১ মিটার। মাইক্রোমিটারকে um চিহ্নে প্রকাশ করা হয়। সামান্য হাওয়াতেই এই সূক্ষ্ম ছাই বা ভস্মকণাগুলি দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এই উড়ন্ত ছাইকে ইংরেজিতে বলে ফ্লাই অ্যাশ (fly ash)।
ফ্লাই অ্যাশ বা উড়ন্ত ছাই-এর উৎস অনেক। যেখানেই কয়লা পোড়ানো হয়, বিশেষত এক সঙ্গে প্রচুর কয়লা পোড়ানোর দরকার হয়, যেমন— তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভারি কলকারখানা ইত্যাদি, সেখান থেকে চতুর্দিকে ফ্লাই অ্যাশ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এইসব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কলকারখানার আশপাশে বসবাসকারী মানুষের দূর্গতির একশেষ। চাষের জমি, সবজি ক্ষেত, পানের বরজ, ঘরবাড়ি চারিদিকে শুধু ছাই-এর পাতলা আস্তরণ। সব মিলিয়ে উড়ন্ত ছাই পরিবেশে বেশ সমস্যার সৃষ্টি করছে। বায়ু দূষিত হচ্ছে। জল, মাটি দূষিত হচ্ছে। গাছপালার ক্ষতি হচ্ছে। মানুষের মধ্যে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট প্রভৃতির প্রকোপ বাড়ছে। এমতাবস্থায় উড়ন্ত ছাইজনিত সমস্যাকে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে মোকাবিলা করা দরকার।
উড়ন্ত ছাই-এর মধ্যে কোন্ কোন্ রাসায়নিক উপাদানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়?
উড়ন্ত ছাই বা ফ্লাই অ্যাশ-এর ৫ থেকে ১০ শতাংশ কার্বন। এ ছাড়া, অন্যান্য মৌলগুলি হল ফসফরাস, সালফার, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, নাইট্রোজেন ইত্যাদি।
উড়ন্ত ছাই-এর অন্যতম উৎস হল তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। প্রসঙ্গত, ভারতে উৎপাদিত মোট কয়লার প্রায় ৫৮.৬% তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়। গড়ে ভারতে প্রতি বছর প্রায় ১৫ কোটি মেট্রিক টন কয়লা তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি মেট্রিক টনে পৌঁছাবে বলে শিল্পমহলের ধারণা।
কয়লাগুঁড়ো বা কোলডাস্ট কোনো ভাবে পরিবেশকে প্রভাবিত করে কি? কয়লাগুঁড়োর প্রধান উৎসগুলি কি কি?
কয়লাগুঁড়ো বা কোলডাস্ট (coal dust) পরিবেশকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, বাতাসে ভাসমান কয়লা গুঁড়ো গাছের পাতা, ফুলের
কুঁড়ি, গাছের কান্ড প্রভৃতি বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণে জমা হলে গাছের পাতা শুকিয়ে যায়। পাতা খসে পড়ে। গাছের ডাল ন্যাড়া হয়ে যায়। ফুলের কুঁড়ি শুকনো হয়ে যায়। ফলে গাছপালার ক্ষতি হয়। চাষ-আবাদের অনিষ্ট হয়।
কয়লাগুঁড়োর প্রধান উৎস হল কয়লাখনি, কলকারখানা, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, লৌহ-ইস্পাত শিল্প, পরিবহন (যেমন— বাষ্পীয় শকট) ইত্যাদি।
পেট্রোকোক কণা বলতে কি বোঝায়? পরিবেশের উপর এই শ্রেণীর কণার প্রভাব কি?
তৈলশোধনাগার অর্থাৎ পেট্রোলিয়াম রিফাইনারি থেকে অসম্পূর্ণ দহনের ফলে উদ্ভূত কণাকে পেট্রোকোক কণা বলে। ইংরেজি ভাষান্তরে এই কণার নাম হল, পেট্রোকোক পার্টিকল্স (petrocoke particles)।
পরিবেশবিজ্ঞানীরা অনুসন্ধান করে দেখেছেন যে, পেট্রোকোক কণা পরিবেশ দূষিত করে। বিশেষত গাছপালার ওপর এই কণাগুলির ক্ষতিকর প্রভাব প্রমাণিত হয়েছে। যেমন, উদ্ভিদের অঙ্কুরোদ্গম ব্যাহত হয়। উদ্ভিদের দেহে পুষ্টির যোগান হ্রাস পায়। ক্লোরোফিল, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট-এর পরিমাণ কমে যায়। নাইট্রোজেন স্থিতিকরণের কাজ বিঘ্নিত হয়। প্রসঙ্গত, পেট্রোকোক কণার মধ্যে প্রায় ৯% কার্বন ও ১০% উদ্বায়ী বস্তু থাকে।
তোমরা বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটি নিচের ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf download
বায়ু দূষণ নিবারণের উপায়:
বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হল:
- যন্ত্রপাতি, কল-কারখানা, বা যানবাহন থেকে নির্গত গ্যাসকে বাতাসে ছাড়ার আগে যান্ত্রিক উপায়ে শোধন করার বন্দোবস্ত করা হলে বায়ুদূষণ রোধ করা যায়। যেমন— মোটর গাড়ির ধোঁয়া, চিমনি দিয়ে বেরিয়ে আসা ধোঁয়া ইত্যাদির মধ্যে প্রচুর দূষিত পদার্থ থাকে। যান্ত্রিক উপায়ে এই দূষিত পদার্থগুলিকে নির্গত গ্যাস থেকে আলাদা করে নিতে হবে। এই কাজের জন্য ফিল্টার, সাইক্লোন সেপারেটর, ক্যাটালাইটিক কনভার্টার, ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রেসিপিটর প্রভৃতি যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
- উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে এমন যন্ত্রপাতি তৈরি করতে হবে বা এমন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, যার ফলে দূষিত পদার্থের উৎপাদনই কমে যাবে। ফলে যানবাহন, যন্ত্রপাতি বা কলকারখানা থেকে নির্গত গ্যাস তখন বায়ুকে বেশি দূষিত করতে পারবে না। এমন জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে যাতে দূষিত পদার্থ, ধোঁয়া ইত্যাদি কম উৎপন্ন হয়।
FAQs
বায়ু দূষণ কি?
বায়ু দূষণ হলো পরিবেশে বায়ুর মাধ্যমে অন্যান্য পদার্থের বা উদ্ভিদের অস্থায়ী বা স্থায়ী ক্ষতি করার একটি অবস্থা। বিভিন্ন ধরণের পাদার্থ, যেমন জল, ধূলাবৃষ্টি, এবং কারখানা থেকে বের হওয়া ক্ষতিকর পদার্থ এই বায়ু দূষণের মূল কারণ।
বায়ু দূষণের প্রভাব কি?
বায়ু দূষণ মানুষের স্বাস্থ্যের প্রতি স্থায়ী প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে অস্থায়ী ও স্থায়ী ব্যাথা, হৃদয়ের রোগ, ফুসফুসের রোগ, এলার্জির রোগ , ক্যান্সারের ঝুঁকি, মস্তিষ্কের ক্ষতি ইত্যাদি রয়েছে।
বায়ু দূষণ প্রতিরোধে কী করা যায়?
বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হল:
(১) যন্ত্রপাতি, কল-কারখানা, বা যানবাহন থেকে নির্গত গ্যাসকে বাতাসে ছাড়ার আগে যান্ত্রিক উপায়ে শোধন করার বন্দোবস্ত করা হলে বায়ুদূষণ রোধ করা যায়। যেমন— মোটর গাড়ির ধোঁয়া, চিমনি দিয়ে বেরিয়ে আসা ধোঁয়া ইত্যাদির মধ্যে প্রচুর দূষিত পদার্থ থাকে। যান্ত্রিক উপায়ে এই দূষিত পদার্থগুলিকে নির্গত গ্যাস থেকে আলাদা করে নিতে হবে। এই কাজের জন্য ফিল্টার, সাইক্লোন সেপারেটর, ক্যাটালাইটিক কনভার্টার, ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রেসিপিটর প্রভৃতি যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
(২) উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে এমন যন্ত্রপাতি তৈরি করতে হবে বা এমন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, যার ফলে দূষিত পদার্থের উৎপাদনই কমে যাবে। ফলে যানবাহন, যন্ত্রপাতি বা কলকারখানা থেকে নির্গত গ্যাস তখন বায়ুকে বেশি দূষিত করতে পারবে না। এমন জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে যাতে দূষিত পদার্থ, ধোঁয়া ইত্যাদি কম উৎপন্ন হয়।