পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf: Environmental Pollution Project pdf 2024

পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf : পরিবেশের দূষণ –Environmental pollution একটি যৌথ নেতিবাচক প্রক্রিয়া। এই পৃথিবীর সমস্ত ভৌত, অজৈব এবং জৈব উপাদানগুলি সুদীর্ঘকাল ধরে যে পারিপার্শ্বিক অবস্থা তৈরি করেছে, তার গুণমানের হানি বা ক্ষতি হল পরিবেশের দূষণ। এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, বিগত প্রায় সাড়ে চারশো কোটি বছর ধরে সূর্যালোক, বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় উপাদান, উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎ ধীরে ধীরে যে পারস্পরিক সামঞ্জস্য বা সুষম অবস্থা গড়ে তুলেছে তার মধ্যে একটি সঙ্গতিপূর্ণ রীতি বা দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক আছে।

Whatsapp গ্রুপে যুক্ত হন
Telegram গ্রুপে যুক্ত হন

যেমন, সৌরশক্তি থেকে উদ্ভিদ পুষ্টি আহরণ করে। তৃণভোজী প্রাণী খাদ্যের জন্য উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে। আবার মাংসাশী প্রাণী তৃণভোজীদের খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। গাছের ঝরা পাতা, প্রাণীর মৃতদেহ এই পৃথিবীর বুকেই মাটির উপাদান হিসাবে আবার মিশে যায়। আর গাছপালা ওই মাটিকে আশ্রয় করে পুনরায় বেড়ে ওঠে। একের উপরে অন্যের এই নির্ভরশীলতা, তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যাই হোক না কেন, একটি সুনির্দিষ্ট, সঙ্গতিপূর্ণ সম্পর্কের পরিচয় বহন করে। এর মধ্যে কোনও ছন্দপতন নেই।

পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf
পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf

পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf ডাউনলোড করুন নিচের বটনে ক্লিক করে

প্রকৃতির এই সাবলীল পরিবেশে মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে আজ থেকে খুব বেশি হলে মাত্র ৩৫ হাজার বছর আগে। এই ৩৫ হাজার বছরের স্বল্প সময়ের মধ্যে মানুষ কৃষিকাজ শিখেছে। জীবজন্তুকে পোষ মানিয়েছে। ভূ-গর্ভ থেকে খনিজ সম্পদ ও শক্তি সম্পদ আহরণ করার কৌশল আবিষ্কার করেছে। শিল্প স্থাপন করেছে। এমন কি, নিজেদের বসবাসের জন্য বড়ো বড়ো জনপদ তৈরি করেছে। তবে শুধু এটুকুর মধ্যেই মানুষের কাজ সীমাবদ্ধ থাকে নি। মানুষ তার সংখ্যা বাড়িয়েছে বহুগুণে।

গাছপালা বা প্রাণী মানুষের মত বুদ্ধিমান, কর্মবীর নয়। তবে তারাও তাদের পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে জানে। যেমন, বড় মাছ ছোট মাছকে খায়। আমরা বলি মাৎস্যন্যায়। কারণ মানুষের চোখে সন্তান ভক্ষণ অপরাধ। কিন্তু প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় মাছেদের সমাজে জন্মহার নিয়ন্ত্রণের এর চেয়ে আর কোন ভাল উপায় নেই। নরওয়েতে লেমিং নামে যে ইঁদুর পাওয়া যায়, তাদের সমাজে একটি প্রাকৃতিক নিয়ম হল যে, প্রতি ৩ থেকে ৫ বছর অন্তর যখন লেমিংদের সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যায়, তখন দলে দলে লেমিং-ইঁদুর সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বিসর্জন করে। ফলে “জমির বহন ক্ষমতা” আর লেমিং-এর সংখ্যায় কোন অসম অনুপাত কখনও সৃষ্টি হয় না।

জল দূষণ প্রজেক্ট pdf: Water Pollution Project pdf Download 2023

মানুষের সভ্য সমাজে অবশ্য এমন কোন নিয়মের বালাই নেই। থাকার কথাও নয়। ফলে বিগত আড়াই-শ বছরে মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৭৫ কোটি থেকে ৬০০ কোটি। অর্থাৎ নিট লাভ ৫২৫ কোটি মানুষ। এদের মুখে অন্ন যোগাতে অরণ্য সাফ করে চাষের জমি তৈরি করতে হয়েছে। জমিতে এক বারের বদলে দুবার-তিনবার চাষ করতে হয়েছে। মাটির উর্বরতা কমে গেলে রাসায়নিক সার দিয়ে মাটিকে চাঙ্গা করতে হয়েছে। তাতে মাটি আম্লিক হয়ে উঠলেও ক্ষতি নেই। নদী থেকে খাল কেটে জলসেচের জন্য জল টেনে নিতে হয়েছে। ফলে নদী তার নিজের পলি, বালি বয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে।

পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf
পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf

নদীর বুকে বাঁধ বেঁধে মানুষ জল ধরে রাখার বন্দোবস্ত করেছে। তার ফলে কৃত্রিম জলাধারে পলি জমে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে, ঐ বাঁধ আর বর্ষার সময় জল ধরে রাখতে পারে না। জল ছাড়তে হয়। তখন মানুষ মানুষের জন্য বন্যা তৈরি করে! অবশ্য মানুষ মানুষের জন্য কলকারখানা, গাড়ি, বাড়িও বানায়। তবে সে কাজও খুঁত বিহীন নয়। কলকারখানার ধোঁয়া, শিল্পজাত বর্জ্য, ঘর-গৃহস্থালীর আবর্জনা এক সাথে জল, জমি আর বাতাসকে দূষিত করে। এর উপর রয়েছে, মানুষের উপর মানুষের প্রভুত্বের ইচ্ছা। যুদ্ধের প্রবৃত্তি। অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্রের পরীক্ষা। পিছিয়ে পড়া দুর্বল মানুষকে বঞ্চিত করে, ধনী মানুষের এগিয়ে চলার অমানবিক প্রতিযোগিতা। ফল—প্রকৃতির অকাল বার্ধক্য, জরা। বিজ্ঞানীর পরিভাষায় পরিবেশের অবক্ষয়।

পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf ডাউনলোড করার জন্য ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিন। এই পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf এর মধ্যে বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত প্রজেক্ট বানানোর জন্য যথেষ্ট কন্টেন্ট দেওয়া আছে। সমস্ত কনটেন্টটি খুবই বড় হওয়ার জন্য ব্লগ পোস্টে সম্পূর্ণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটির মধ্যে আরও বহু কিছু তথ্য দেওয়া আছে যেগুলি পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট বানানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এক ঝলকে:

পরিবেশের অবক্ষয় এবং দূষণের উৎস (Sources of Environmental Degradation and Pollution)

পরিবেশের অবক্ষয় এবং পরিবেশ দূষণের উৎসগুলি কি কি?

প্রকৃতি ও মানুষের নানা কাজ পরিবেশের ক্ষতি করে। পরিবেশে দূষণ সৃষ্টি করে। পরিবেশের অবক্ষয় এবং দূষণের উৎস দু’ধরনের, যেমন— (১) প্রাকৃতিক উৎস এবং (২) অপ্রাকৃতিক উৎস।

Water Pollution Project pdf
Water Pollution Project pdf

(১) পরিবেশের অবক্ষয় ও পরিবেশ দূষণের প্রাকৃতিক উৎসসমূহ :

(ক) আগ্নেয়গিরি বা ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2)। (খ) জলাভূমি অঞ্চল বা জৈব, পদার্থের পচনের ফলে সৃষ্ট মিথেন (CH4)

(গ) কয়লা ও পেট্রোলিয়াম খনির মধ্যে আবদ্ধ মিথেন (CH4) কার্বন মনো-অক্সাইড (CO), কয়লাজাত গ্যাস, পেট্রোলিয়ামজাত গ্যাস প্রভৃতি।

(ঘ) খাদ্যে ছত্রাকজনিত বিষাক্ত পদার্থ বা মাইকোটক্সিন (mycotoxin)।

(২) পরিবেশের অবক্ষয় ও দূষণের অপ্রাকৃতিক উৎসসমূহ বা মানুষের তৈরি কারণ :

(ক) অতিরিক্ত জনসংখ্যা ও জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি হার।

(খ) সম্পদের অপচয় ও বিনাশ।

(গ) প্রাকৃতিক অবস্থার পরিবর্তন, যেমন— জলবায়ুর পরিবর্তন, মরুভূমির সম্প্রসারণ (desertification)।

(ঘ) যুদ্ধ, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও শোষণ।

(ঙ) ফসলের কীটপতঙ্গ প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক, যেমন D.D.T. (Dichloro Diphenyl Trichloroethane) জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য।

(চ) কৃষিজমিতে অত্যধিক সার প্রয়োগের ফলে সঞ্চিত বিষাক্ত নাইট্রেট যেমন— নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড বা নাইট্রোজেন পার-অক্সাইড। কলকারখানার আবর্জনা, যেমন— কাগজ, কাপড়, রং প্রভৃতি শিল্পের অপরিশোধিত বর্জ্য পদার্থ।

(জ) শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে উদ্ভূত পারদ বা পারদ শ্রেণীর যৌগ।

(ঝ) বিভিন্ন শিল্পে রাসায়নিক বিক্রিয়াপ্রসূত ধাতব কণা, যেমন – টিন, ভ্যানাডিয়াম, সীসা, আর্সেনিক, অ্যাসবেস্টস ইত্যাদি।

(ঞ) শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কলকারখানা থেকে নির্গত উত্তপ্ত জল, যা জলে বসবাসকারী প্রাণীর প্রাণ সংশয় করে।

(ট) শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র থেকে নির্গত গ্যাস, যেমন— সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি।

(ঠ) পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পারমাণবিক আবর্জনা।

(ড) মোটর, লরি, টেম্পো, বাস প্রভৃতি পেট্রোল, ডিজেল চালিত

গ্যাস, যথা, কার্বন মনো-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড

যানবাহন থেকে নির্গত ইত্যাদি।

(ঢ) দাড়ি কামাবার ফোম, রং-এর স্প্রে, বিমানে ব্যবহৃত এরোসল (aerosol)।

(ণ) রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (Chloroflurocarbons)।

(ত) কঠিন আবর্জনা (Solid Waste), যেমন— পলিথিন-প্লাস্টিকের ব্যাগ-চাদর ইত্যাদি।

(থ) শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী বিমানের উড়ানের ফলে সৃষ্ট ক্ষতিকর শব্দতরঙ্গ বা “সনিক বুম” (sonic boom)।

(দ) নর্দমার আবর্জনা (sewage) এবং জীবাণু বহনকারী জঞ্জাল।

(ধ) বাড়ির রান্নাঘর, যানবাহন ও কলকারখানা নিঃসৃত ধোঁয়া ও রাসায়নিক পদার্থ, যা সূর্যের আলোর সংস্পর্শে “ফোটো-কেমিক্যাল স্মগ”-এ পরিণত হয় (photo-chemical smog)।

(ন) কাটা ফলমূল, উন্মুক্ত খাবার, রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত রঙীন খাদ্যদ্রব্য। (প) লাউড স্পিকার, ঢাক, ঢোল ও বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র থেকে সৃষ্ট অতি উচ্চগ্রামের শব্দ ইত্যাদি।

পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf ডাউনলোড করার জন্য ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিন। এই পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf এর মধ্যে বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত প্রজেক্ট বানানোর জন্য যথেষ্ট কন্টেন্ট দেওয়া আছে। সমস্ত কনটেন্টটি খুবই বড় হওয়ার জন্য ব্লগ পোস্টে সম্পূর্ণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটির মধ্যে আরও বহু কিছু তথ্য দেওয়া আছে যেগুলি পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট বানানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf
পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf

নিরাপদ মাত্রা বা মাত্রা সম্পাত বা থ্রেসহোল্ড লিমিট ভ্যালু (TLV) বলতে কি বোঝায়?

যখন কোন দূষক একটি নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে জীবজগতের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া করে বা জনস্বাস্থ্যের হানি ঘটায়, তখন সেই মাত্রাটিকে নিরাপদ মাত্রা বা মাত্রা সম্পাত বলে। একে যথাক্রমে ইংরাজি পরিভাষায় থ্রেসহোল্ড লিমিট ভ্যালু (Threshold Limit Value – TLV) বা ডোজ লিমিট (Dose Limit – DL) বলা হয়।

সোর্স-পাথওয়ে-সিঙ্ক কনসেপ্ট কাকে বলে?

নানান ধরনের দূষণের নিরাপদ মাত্রা নির্ধারণের জন্য সোর্স-পাথওয়ে-সিঙ্ক কনসেপ্ট জানা দরকার। এই ধারণা অনুসারে দূষকের উৎস (অর্থাৎ সোর্স), বিক্রিয়া প্রণালী বা পথ (অর্থাৎ পাথওয়ে) এবং বিনাশ বা সিঙ্ক সম্বন্ধে অবহিত হওয়া প্রয়োজন। কেননা দূষক পদার্থগুলি সোর্স-পাথওয়ে-সিঙ্ক প্রণালীকে অনুসরণ করে।

ভারতের পরিবেশ আইন অনুসারে কাদের পরিবেশ দূষক বলে?

যে কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের এমন মাত্রায় উপস্থিতি যাতে পরিবেশের ক্ষতি হয় বা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তাকেই ভারতের পরিবেশ আইন অনুযায়ী দুষক।

বায়ু দূষণ (Air Pollution)

বায়ু দূষণ কাকে বলে?

বায়ু দূষণের সংজ্ঞা : ওয়ালর্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন (WHO) [১৯৬১]-এর মতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের মধ্যে অনিষ্টকর পদার্থের সমাবেশ যখন মানুষ ও তার পরিবেশের ক্ষতি করে, সেই অবস্থাকে বায়ু দূষণ বলে।

বিজ্ঞানী পার্কিল (১৯৭৪) তাঁর “এয়ার পলিউশন” (Air Pollution) গ্রন্থে বলেছেন যে, আবহমন্ডলে দূষিত ধোঁয়া, গ্যাস, গন্ধ, ধোঁয়াশা, বাষ্প ইত্যাদি যে পরিমাণে ও যতক্ষণ স্থায়ী হলে মানুষ, জীবজন্তু ও উদ্ভিদ জগতের ক্ষতি হয় বা বায়ুমন্ডলে জমে থাকা যে সমস্ত দূষিত পদার্থ মানুষের জীবন ও স্বাচ্ছন্দ্যে বাধা দেয়, তাকে বায়ু দূষণ বলে। এখানে উল্লেখ করা যায় যে, বায়ু দূষণের পরিধি ও ব্যাপকতা সবচেয়ে বেশি। কারণ বাতাস সবচেয়ে তাড়াতাড়ি দূষিত পদার্থকে চতুর্দিকে ছড়িয়ে দিতে পারে।

বায়ু দূষণের উৎস ও কারণগুলি কি কি?

বায়ু দূষণ নানাভাবে হতে পারে। এর মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক কারণ আর কিছু মানুষের তৈরি করা কারণ, যেমন-

বায়ু দূষণের প্রাকৃতিক কারণ ও উৎসসমূহ:

(১) অগ্ন্যুৎপাতের ফলে নিঃসৃত সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস।

(২) বিভিন্ন জৈব ও অজৈব পদার্থের পচনের ফলে সৃষ্ট গ্যাস।

(৩) দাবানল (Forest fire), ধুলি ঝড়।

(৪) ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, ফানজাই (fungi), অ্যালজি (algae), পরাগরেণু (pollen) ইত্যাদি।

অপ্রাকৃতিক বা মানুষের তৈরি বায়ু দূষণের কারণ :

(১) খনি এলাকার ধুলোবালি, ধূলিকণা, শিল্পজাত ধুলি (যেমন— ফ্লাই অ্যাশ), কালিঝুলি (soot) ইত্যাদি।

(২) দাড়ি কামানোর ফোম ও স্প্রে, বিমানে ব্যবহৃত এরোসল (aerosols); এবং বিভিন্ন বিষাক্ত তরল পদার্থ।

(৩) যানবাহন ও কলকারখানা থেকে নির্গত গ্যাস, যেমন— কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, নাইট্রোজেন অক্সাইড ইত্যাদি। এখানে উল্লেখ করা যায় যে হাইড্রোকার্বন ও কার্বন মনোক্সাইডের প্রধান উৎস হল কয়লা, পেট্রোল প্রভৃতি জ্বালানীর অসম্পূর্ণ দহন।

(৪) ব্যাপকভাবে অরণ্য ধ্বংস করার ফলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড ভারসাম্যের হানি ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি।

(৫) যুদ্ধ-বিগ্রহের ফলে বা পারমাণবিক চুল্লীতে দুর্ঘটনার ফলে তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণ (যেমন— পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নে চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের দুর্ঘটনা বা হিরোসিমা-নাগাসাকিতে পরমাণু বোমার ধ্বংসলীলা) ইত্যাদি।

মানুষের উপর বায়ু দূষণের প্রভাব কি?

বায়ু দূষণ মানুষের ক্ষতি করে। যেমন—

(১) ধোঁয়াশার প্রভাবে চোখ জ্বালা করে। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। (২) সালফার ডাই-অক্সাইডের প্রভাবে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ব্রঙ্কাইটিস, যক্ষ্মা প্রভৃতি রোগ দেখা দেয়। (৩) নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের জন্য শ্বাসকষ্ট হয়। ফুসফুসের ক্ষতি হয়। নিউমোনিয়া হওয়ার আশংকা থাকে। (৪) কার্বন মনোক্সাইডের জন্য রক্তের অক্সিজেন সংবহন ক্ষমতা বিঘ্নিত হয়। (৫) বেঞ্জপাইরিনের জন্য ক্যান্সার হয়। এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, রাস্তায় দেওয়ার জন্য পিচ গলানোর সময়ে যে ধোঁয়া বেরোয়, তাতে বেঞ্জপাইরিন জাতীয় যৌগ পাওয়া যায়। (৬) বাতাসে ভাসমান সীসা, বালি, কয়লার গুঁড়ো ইত্যাদি শ্বাসনালী ও ফুসফুসের ক্ষতি করে। স্নায়ুরোগের কারণ হয়।

বায়ু দূষণের মূল উপাদানগুলি কি কি?

মূলত তিনটি উপাদানের মাত্রার উপর নির্ভর করে বায়ু দূষণের পরিমাণ হিসাব করা হয়। যেমন— (১) সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2)।

(২) নাইট্রোজেন অক্সাইড (NO) ।

(৩) বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম কণিকা (Suspended Particulate Matter অর্থাৎ SPM)।

বায়ু দূষণ নিবারণের উপায় কি?

বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হল—

(১) যন্ত্রপাতি, কল-কারখানা, বা যানবাহন থেকে নির্গত গ্যাসকে বাতাসে ছাড়ার আগে যান্ত্রিক উপায়ে শোধন করার বন্দোবস্ত করা হলে বায়ুদূষণ রোধ করা যায়। যেমন— মোটর গাড়ির ধোঁয়া, চিমনি দিয়ে বেরিয়ে আসা ধোঁয়া ইত্যাদির মধ্যে প্রচুর দূষিত পদার্থ থাকে। যান্ত্রিক উপায়ে এই দূষিত পদার্থগুলিকে নির্গত গ্যাস থেকে আলাদা করে নিতে হবে। এই কাজের জন্য ফিল্টার, সাইক্লোন সেপারেটর, ক্যাটালাইটিক কনভার্টার, ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রেসিপিটর প্রভৃতি যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।

(২) উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে এমন যন্ত্রপাতি তৈরি করতে হবে বা এমন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, যার ফলে দূষিত পদার্থের উৎপাদনই কমে যাবে। ফলে যানবাহন, যন্ত্রপাতি বা কলকারখানা থেকে নির্গত গ্যাস তখন বায়ুকে বেশি দূষিত করতে পারবে না। এমন জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে যাতে দূষিত পদার্থ, ধোঁয়া ইত্যাদি কম উৎপন্ন হয়।

গ্রীনহাউস গ্যাসগুলি (GHGs) কি কি?

জলীয় বাষ্প, কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2), ওজোন (O3), কার্বন মনোক্সাইড (CO), মিথেন (CH4), ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFCs), নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) প্রভৃতি গ্যাসগুলিকে গ্রীনহাউস গ্যাস (GHG)

গ্রীনহাউস প্রভাব কিভাবে কাজ করে?

কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, জলীয় বাষ্প, নাইট্রাস অক্সাইড, ওজোন, প্রভৃতি গ্রীনহাউস গ্যাসগুলির তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা আছে। সুতরাং বায়ুমন্ডলে এই গ্যাসগুলির ঘনত্ব বৃদ্ধি পেলে তাদের তাপ ধরে রাখার প্রবণতাও বাড়ে। ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়ে। ১৮৯৬ সালে সুইডিশ বিজ্ঞানী সভান্তে আরহেনিয়াস সর্বপ্রথম বাতাসে ক্রমবর্ধমান কার্বন ডাই-অক্সাইডের ক্ষতিকর পরিণাম সম্পর্কে আশংকা প্রকাশ করেন। পরবর্তীকালে তাঁর এই ধারণা সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

কারণ বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব শতকরা ০.০৩৫ ভাগ বা ৩৫০ ppm৷ বর্তমানে প্রতি বছর বাতাসে গড়ে ১.৫ ppm হারে কার্বন ডাই-অক্সাইড বাড়ছে। ফলে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ভূ-পৃষ্ঠ ক্রমশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। যেমন— ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৫° সেলসিয়াস এবং ১৯০০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে ১° সেলসিয়াস। এইভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩.৫° সেলসিয়াস।

Conciusion

পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf ডাউনলোড করার জন্য ডাউনলোড বটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিন। এই পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf এর মধ্যে বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত প্রজেক্ট বানানোর জন্য যথেষ্ট কন্টেন্ট দেওয়া আছে। সমস্ত কনটেন্টটি খুবই বড় হওয়ার জন্য ব্লগ পোস্টে সম্পূর্ণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট pdf ফাইলটির মধ্যে আরও বহু কিছু তথ্য দেওয়া আছে যেগুলি পরিবেশ দূষণ প্রজেক্ট বানানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

FAQs:

পরিবেশ দূষণ কী?

পরিবেশ দূষণ হলো সমস্ত প্রাকৃতিক পরিবেশের অসুস্থ পরিবর্তন এবং অবনমনের কারণে পরিবেশের গুনগত ও প্রকৃতি উপকরণের অবনতি। এটি বিভিন্ন উৎপাদন প্রণালী, পরিবাহী বাণিজ্যিক কার্যক্রম, এবং মানুষের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ প্রভাবের ফলাফলে হতে পারে।

পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ কী?

পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ হলো প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয়, যেমন ভূমিতে জলপ্রবাহের পরিচ্ছেদ, বন উপকরণের অপচয়, এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম যেমন শহরীকরণ এবং পরিবাহী প্রযুক্তির ব্যবহার।

পরিবেশ দূষণের প্রভাব কী?

পরিবেশ দূষণের প্রভাব অসম্পূর্ণ জীবনযাত্রা, প্রাকৃতিক বন্ধুত্বের অবনতি, আরোগ্যের সমস্যা, প্রাণীদের অপচয়, বৃদ্ধির সমস্যা, এবং আরও অনেক অন্যান্য অসুস্থতা রয়েছে।