পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর: Environmental Science, WB TET 2023

Environmental Science, WB TET 2023
Environmental Science, WB TET 2023

Environmental Science, WB TET 2023: পরিবেশ বিদ্যা থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং উত্তর নিয়ে এলাম আজকের প্রতিবেদনে। যে প্রশ্নগুলি বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Whatsapp গ্রুপে যুক্ত হন
Telegram গ্রুপে যুক্ত হন

চলুন আলোচনা করা যাক।

Environmental Science, WB TET 2023

1.পরিবেশ কাকে বলে ?

কোনো জীবের চারপাশে থাকা সজীব ও নির্জীব উপাদানের সমষ্টি, যা জীবের ওপর সক্রিয় প্রভাব বিস্তার করে, তাকে ওই জীবের পরিবেশ বলে।

2. পরিবেশের প্রধান চারটি অংশ কী কী ?

পরিবেশের প্রধান চারটি অংশ হল— (i) লিথোস্ফিয়ার বা শিলামণ্ডল (ii) হাইড্রোস্ফিয়ার বা জলমণ্ডল (iii) অ্যাটমোস্ফিয়ার বা বায়ুমণ্ডল (iv) বায়োস্ফিয়ার বা জীবমণ্ডল

3. লিথোস্ফিয়ার বা শিলামণ্ডল বা অশ্মমণ্ডল কাকে বলে ?

পৃথিবীর উপরিভাগে শিলা ও মৃত্তিকা দিয়ে তৈরি কঠিন স্তরকে লিথোস্ফিয়ার বা শিলামণ্ডল বা অশ্মমণ্ডল বলে।

4. বায়ুমণ্ডল (অ্যাটমোস্ফিয়ার) কাকে বলে ?

পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ওপরদিকে বিস্তৃত বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থের আবরণ, যা পৃথিবীকে ঘিরে রয়েছে, তাকে বায়ুমণ্ডল বা অ্যাটমোস্ফিয়ার বলে।

5. বারিমণ্ডল বা হাইড্রোস্ফিয়ার কাকে বলে ?

ভূপৃষ্ঠের ওপরে অবস্থিত পুকুর, ডোবা, খাল, বিল, হ্রদ, সাগর, নদী, মহাসাগর বা পৃথিবীর অভ্যন্তরের জল, জলীয় বাষ্প বা বরফরূপে বর্তমান সামগ্রিক জলরাশিকে বারিমণ্ডল বা হাইড্রোস্ফিয়ার বলে।

6. জীবমণ্ডল বা বায়োস্ফিয়ার কাকে বলে ?

সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরে 6 কিলোমিটার এবং নীচে 7 কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে যেখানে জীব বসবাস করে, তাকে জীবমণ্ডল বা বায়োস্ফিয়ার বলে। জে টিভির (Tivy) মতে, পৃথিবীর জল, মাটি, বাতাস যেখানেই প্রাণের অস্তিত্ব আছে, তা জীবমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত

7. ট্রোপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমণ্ডল কী ?

ভূপৃষ্ঠ থেকে গড়ে 14 কিমি উচ্চতাবিশিষ্ট উপবৃত্তাকার বায়ুমণ্ডলের স্তর, যেখানে মেঘ, বৃষ্টি, ঝড়, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি দেখা যায়, তাকে ট্রোপোস্ফিয়ার বা ক্ষুদ্ধমণ্ডল বলে।

8. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল কাকে বলে ?

বায়ুমণ্ডলের 17 কিমি থেকে 30 কিমি উচ্চতাবিশিষ্ট বায়ুপ্রবাহহীন ট্রোপোস্ফিয়ারের পরবর্তী স্তরটিকে শান্তমণ্ডল বা স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বলে।

9. মেসোস্ফিয়ার কাকে বলে?

বায়ুমণ্ডলের তৃতীয় স্তর, যা ভূপৃষ্ঠের 30 থেকে 90 কিমির মধ্যে অবস্থিত এবং যেখানে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব বেশি, তাকে মেসোস্ফিয়ার বলে।

10. সিয়াল ও সিমা কী ?

সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম সমৃদ্ধ ভূত্বকের সবচেয়ে ওপরের শিলাস্তরকে সিয়াল বলে ও ভূত্বকের নীচের অংশে সিলিকন ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ শিলাস্তরকে সিমা বলে।

গণিত পেডাগোজি থেকে মক টেস্টের জন্য এইখানে ক্লিক করুন

11.অশ্মমণ্ডল ও বারিমণ্ডলের তুলনা করো।

বিষয়অশ্মমণ্ডলবারিমণ্ডল
সংজ্ঞাপৃথিবীর উপরিভাগে শিলা ও মৃত্তিকা দিয়ে তৈরি কঠিন স্তরকে অশ্মমণ্ডল বলে।পৃথিবীপৃষ্ঠে বা অভ্যন্তরে জলমগ্ন অঞ্চলগুলিকে একত্রে বারিমণ্ডল বলে ৷
বিস্তৃতিভূপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর ভিতরের দিকে বিস্তৃত।অশ্মমণ্ডলের নীচু স্থানগুলি ছাড়াও বায়ুমণ্ডলে বিস্তৃত।
উপাদানঅশ্মমণ্ডলের উপাদান শিলা।বারিমণ্ডলের উপাদান জল।
water conservation poster
water conservation poster

12. নাইট্রিফিকেশন কাকে বলে ?

যে প্রক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া কয়েক প্রকার ব্যাকটেরিয়া দ্বারা জারিত হয়ে নাইট্রেটে পরিণত হয়, তাকে নাইট্রিফিকেশন বলে। এই পদ্ধতিতে প্রথমে অ্যামোনিয়া থেকে নাইট্রাইট ও পরে নাইট্রাইট থেকে নাইট্রেট।

13. ডিনাইট্রিফিকেশন কাকে বলে ?

যে পদ্ধতিতে নাইট্রেট কয়েক প্রকার ব্যাকটেরিয়া দ্বারা অ্যামোনিয়া অথবা নাইট্রোজেনে পরিণত তাকে ডিনাইট্রিফিকেশন বা নাইট্রোজেন মোচন বলে।

14. অ্যামোনিফিকেশন কাকে বলে ?

যে পদ্ধতিতে মৃত জীবদেহ বা দেহাংশ এবং প্রাণীর নাইট্রোজেনঘটিত রেচন পদার্থ ইউরিয়া বা ইউরিক অ্যাসিড অ্যামোনিয়াতে পরিণত হয়, তাকে অ্যামোনিফিকেশন বলে।

15. একটি নাইট্রিফাইং ও একটি ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণ দাও।

একটি নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া—নাইট্রোসোমোনাস।
একটি ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া—সিউডোমোনাস।

16. নাইট্রোজেন সংবন্ধন বা নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ বা নাইট্রোজেন ফিক্সেশন কাকে বলে ?

যে পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে বা জীবাণুর দ্বারা বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন নাইট্রেটে অথবা অ্যামোনিয়াতে পরিণত হয়, তাকে নাইট্রোজেন সংবন্ধন বা নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ বা নাইট্রোজেন ফিক্সেশন বলে।

17. ভূমিতে নাইট্রোজেন স্থিতিকারী দুটি ব্যাকটেরিয়ার নাম লেখো।

ভূমিতে নাইট্রোজেন স্থিতিকারী দুটি ব্যাকটেরিয়া— (i) অ্যাজোটোব্যাকটর (স্বাধীনজীবী) (ii) রাইজোবিয়াম (মিথোজীবী)।

18. পরিবেশে অক্সিজেন চক্রের দুটি তাৎপর্য উল্লেখ করো।

পরিবেশে অক্সিজেন চক্রের দুটি তাৎপর্য
(i) অক্সিজেন চক্রের জন্য পরিবেশে অক্সিজেনের ভাণ্ডার কখনও শেষ হয় না। (ii) অক্সিজেন চক্রের সক্রিয়তার ফলে পরিবেশে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভারসাম্য রক্ষিত হয়।

19. অজৈব উপায়ে বা ভৌত উপায়ে কীভাবে নাইট্রোজেন সংবন্ধন ঘটে লেখো।

(i) বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন গ্যাস অক্সিজেন গ্যাসের সঙ্গে মিশে নাইট্রিক অক্সাইড গঠন করে। (ii) এই নাইট্রিক অক্সাইড পরে বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডে পরিণত হয়। (iii) নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড বৃষ্টির জলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রাস ও নাইট্রিক অ্যাসিড তৈরি করে। (iv) মাটিতে এই অ্যাসিড দুটি ক্যালশিয়াম ও পটাশিয়ামঘটিত ক্ষারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যালশিয় বা পটাশিয়াম নাইট্রেট গঠন করে।

20. জৈব নাইট্রোজেন সংবন্ধন বা বায়োলজিক্যাল নাইট্রোজেন ফিক্সেশনের তিনটি উদাহরণ দাও।

জৈব নাইট্রোজেন সংবন্ধনের উদাহরণ— (i) শিম্বিগোত্রের (লিগুমিনেস) উদ্ভিদের মূলের গুটিতে বসবাসকারী রাইজোবিয়াম নামক ব্যাকটেরিয়া বাতাসের নাইট্রোজেনকে নাইট্রেটরূপে মাটিতে আবদ্ধ করে। (ii) অ্যানাবিনা, নস্টক প্রভৃতি নীলাভ-সবুজ শৈবাল বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেনকে মাটির নাইট্রেটে পরিণত
করতে পারে।
(iii) অ্যাজোটোব্যাকটর, ক্লসট্রিডিয়াম প্রভৃতি স্বাধীনজীবী ব্যাকটেরিয়া নাইট্রোজেন সংবন্ধন বা স্থিতিকরণ করতে পারে।

21. পরিবেশে কার্বন ডাইঅক্সাইড সংযোজনে একটি ভৌত ও একটি জৈব প্রক্রিয়ার উদাহরণ দাও।

পরিবেশে কার্বন ডাইঅক্সাইড সংযোজনে—
(i) ভৌত প্রক্রিয়া—কাঠ, কয়লা, পেট্রোলিয়াম প্রভৃতির দহনের ফলে পরিবেশে CO2 সংযোজিত হয়। (ii) জৈব প্রক্রিয়া—কোশীয় শ্বসনে শ্বসনবস্তুর জারণের ফলে CO, পরিবেশে সংযোজিত হয়।

22. অক্সিজেন চক্রের সংজ্ঞা দাও।

যে চক্রাকার পদ্ধতিতে পরিবেশের অক্সিজেন শ্বসন ও দহনের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে পুনরায় পরিবেশে ফিরে আসে, তাকে অক্সিজেন চক্র বলে।

23. কার্বন চক্র কাকে বলে ?

যে চক্রাকার পদ্ধতিতে পরিবেশের কার্বন, কার্বন ডাইঅক্সাইড রূপে পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হয়ে কার্বনের সমতা বজায় রাখে, তাকে কার্বন চক্র বলে।

24. নাইট্রোজেন চক্র কাকে বলে ?

যে জটিল ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় বায়ুর নাইট্রোজেন মাটিতে ও মাটির নাইট্রোজেন বায়ুতে আবর্তিত হয়ে মাটিতে ও পরিবেশে নাইট্রোজেনের সমতা বজায় রাখে ও জীবদেহে নাইট্রোজেনের চাহিদা মেটায়, তাকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।

25. ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র কাকে বলে ?

যে প্রণালীতে কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের জীবগোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে এবং ওই অঞ্চলের নির্জীব উপাদানের মধ্যে পারস্পরিক বিভিন্ন বস্তুর বিনিময় ঘটিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখে, তাকে বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেম বলে। ওডামের মতে, বাস্তুতন্ত্র হল জীব ও জড় পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং এই সম্পর্কের মাধ্যমে একে অপরকে প্রভাবিত করার অবস্থা।

26. খাদ্যশৃঙ্খল কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

খাদ্যখাদক সম্পর্কের ভিত্তিতে উৎপাদক স্তর থেকে ধাপে ধাপে বিভিন্ন খাদক জীবগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্য শক্তির ধারাবাহিক একমুখী প্রবাহকে খাদ্যশৃঙ্খল বলে।
উদাহরণ : ফাইটোপ্ল্যাংকটন→ জুপ্ল্যাংকটন ছোটো মাছ → বড়ো মাছ (জলজ খাদ্যশৃঙ্খল)।

27. বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক বা প্রোডিউসার কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

যে সকল জীব কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন প্রভৃতি অজৈব উপাদান সংগ্রহ করে সৌরশক্তির (বা রাসায়নিক শক্তির) সাহায্যে খাদ্যসংশ্লেষ করতে পারে, তাদের উৎপাদক বা প্রোডিউসার বলে উদাহরণ—সবুজ উদ্ভিদ, সালোকসংশ্লেষে সক্ষম প্রাণী ও সালোকসংশ্লেষে সক্ষম ব্যাকটেরিয়া।

28. বাস্তুতন্ত্রে খাদক বা কনজিউমার কাদের বলে ? উদাহরণ দাও।

বাস্তুতন্ত্রে যে সকল জীব নিজেরা খাদ্যসংশ্লেষ করতে পারে না, খাদ্যের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উৎপাদকের ওপর নির্ভরশীল, তাদের খাদক বা কনজিউমার বলে।
উদাহরণ : ফড়িং, গোরু, ছাগল, হরিণ (তৃণভোজী), বাঘ, সিংহ, বড়োমাছ (মাংসাশী) ; মানুষ (সর্বভুক)।

29. বাস্তুরীতিতে প্রাথমিক খাদক কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

যে সকল খাদক জীব খাদ্যের জন্য প্রত্যক্ষভাবে উৎপাদকের ওপর নির্ভরশীল অর্থাৎ উৎপাদককে সরাসরি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের প্রাথমিক খাদক বা প্রাইমারি কনজিউমার বা প্রথম সারির খাদক বলে। উদাহরণ—গোরু, ছাগল, হরিণ, ফড়িং, জুপ্ল্যাংকটন, শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি।

30. দ্বিতীয় সারির খাদক বা গৌণ খাদক কাদের বলে ? উদাহরণ দাও।

যে সকল খাদক জীব খাদ্য হিসেবে তৃণভোজী প্রাণী বা প্রথম সারির খাদকদের গ্রহণ করে পুষ্টিসম্পন্ন করে, তাদের দ্বিতীয় সারির খাদক বা গৌণ খাদক বা সেকেন্ডারি কনজিউমার বলে।
উদাহরণ—ব্যাং, কুকুর, বিড়াল, ছোটোমাছ ইত্যাদি।

31. তৃতীয় সারির খাদক বা প্রগৌণ খাদক কাকে বলে?

যে সকল খাদক জীব খাদ্য হিসেবে মাংসাশী জীব বা গৌণ খাদকদের গ্রহণ করে, তাদের তৃতীয় সারির খাদক বা প্রগৌণ খাদক বলে।
উদাহরণ—বাজপাখি, পেঁচা, বোয়াল মাছ।

32. খাদ্যজালক (Food Web)-এর সংজ্ঞা দাও।

একটি বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেমের মধ্যে খাদ্যখাদক সম্পর্কযুক্ত খাদ্যশৃঙ্খলগুলি একটি অন্যটির সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত হয়ে যে কৃত্রিম জালকের আকার গঠন করে, তাকে খাদ্যজালক বা ফুড ওয়েব বলে।

33. বাস্তুতন্ত্রে ‘শক্তিপ্রবাহ’ কাকে বলে ?

বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদকের মাধ্যমে সৌরশক্তি রাসায়নিক শক্তিরূপে খাদ্যে আবদ্ধ হয় এবং খাদ্যশৃঙ্খলের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন সারির খাদকদের মধ্যে খাদ্যমধ্যস্থ শক্তির একমুখী স্থানান্তর ঘটে। একে শক্তিপ্রবাহ বা এনার্জি ফ্লো বলে।

34. খাদ্য পিরামিড (Food Pyramid) কাকে বলে?

বাস্তুতন্ত্রে অবস্থিত খাদ্যখাদক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা প্রতিটি পুষ্টিস্তর (tropiclevel) পর পর ক্রমানুসারে (উৎপাদক → প্রাথমিক খাদক → গৌণ খাদক → প্রগৌণ খাদক) সাজালে যে পিরামিডাকৃতি গঠন সৃষ্টি হয়, তাকে খাদ্য পিরামিড বা বাস্তুসংস্থানিক পিরামিড বা ইকোলজিক্যাল পিরামিড বলে।

35. সংখ্যার পিরামিড (Pyramid of Number) কী?

বাস্তুতন্ত্রে অবস্থিত খাদ্যখাদক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা প্রতিটি পুষ্টিস্তরে জীবের সংখ্যাকে পর্যায়ক্রমে সাজালে যে পিরামিড গঠিত হয়, তাকে সংখ্যার পিরামিড বলে।

36. ইকোসিস্টেমে শক্তিপ্রবাহের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

ইকোসিস্টেমে শক্তিপ্রবাহের দুটি বৈশিষ্ট্য— (i) ইকোসিস্টেমে প্রবাহিত সকল শক্তির উৎস সূর্য। (ii) শক্তিপ্রবাহ একমুখী ৷ সৌরশক্তি উৎপাদকে আবদ্ধ হয় এবং উৎপাদক থেকে বিয়োজকের দিকে প্রবাহিত হয়। কখনও ওই শক্তি উৎপাদকে বা সূর্যে ফিরে যায় না।

37. বিয়োজক কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।

যেসব জীব মৃত জীবদেহ বা জটিল জৈব যৌগকে উৎসেচকীয় বিক্রিয়ার দ্বারা উৎপাদকের গ্রহণোপযোগী অজৈব যৌগে পরিণত করে, তাদের বিয়োজক বলে।
উদাহরণ—ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক।

38. বাস্তুতন্ত্রে বিয়োজকের ভূমিকা উল্লেখ করো।

বাস্তুতন্ত্রে বিয়োজকের ভূমিকা— উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃত্যুর পর মৃত জীবদেহ, রেচন পদার্থ প্রভৃতি জৈব যৌগকে উৎপাদকের গ্রহণযোগ্য সরল অজৈব যৌগে রূপান্তরিত করে। এতে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য রক্ষা পায় বাস্তুতন্ত্র সচল থাকে।

39. একটি তৃণভূমি বাস্তুতন্ত্রে ব্যাং, বাজপাখি, ঘাস, সাপ ও ফড়িং-এর মধ্যে শক্তিপ্রবাহ পথটি তির চিহ্ন দ্বারা চিহ্নিত করো।

শক্তিপ্রবাহের পথটি তির চিহ্ন দিয়ে দেখানো হল—
ঘাস → ফড়িং → ব্যাং → সাপ→ বাজপাখি

40. সংরক্ষণ কাকে বলে ?

বিজ্ঞানী ওডামের (1972) মতে—
যে পদ্ধতিতে আমাদের পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু বিজ্ঞানসম্মত ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন সম্পাদিত হয় এবং প্রাকৃতিক সম্পদকে ক্ষতিকারক প্রভাব, ধ্বংস, অপব্যবহার থেকে রক্ষা করা হয়, তাকে সংরক্ষণ বলে ।

41. ভূমিক্ষয়ের যে-কোনো দুটি কারণ বিবৃত করো।

ভূমিক্ষয়ের দুটি কারণ—(i) বনভূমি ধ্বংস : অবৈজ্ঞানিকভাবে অতিরিক্ত গাছ কেটে ফেলার জন্য মাটি আলগা হয়, ফলে গাছের শিকড় আর মাটিকে আঁকড়ে ধরে রাখতে পারে না।
(ii) অতিরিক্ত পশুচারণ : পাহাড়ি এলাকায় অতিরিক্ত ও অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণের ফলে ভূমিক্ষয় হয়।

42. বন্যপ্রাণী কাকে বলে ?

গৃহপালিত নয় এমন জীব যারা বনজঙ্গলে, পাহাড়ে, নদীতে, সমুদ্রে বা সমতলভূমিতে অর্থাৎ তাদের স্বাভাবিক বাসস্থানে সার্থকভাবে অভিযোজিত হয়ে বাস করে বংশবিস্তার করে, তাদের বন্যপ্রাণী বলে।

43. অভয়ারণ্য বা স্যাংচুয়ারি কাকে বলে ?

যেসব প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে কিছু কিছু নির্বাচিত অবলুপ্তপ্রায় প্রাণী স্বচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে পারে, রাজ্য সরকারের আদেশবলে তাদের অভয়ারণ্য বা স্যাংচুয়ারি বলে। এখানে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ, গাছ কাটা, বন্যজীব ধরা, শিকার করা ও উত্ত্যক্ত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যেমন—জলদাপাড়া অভয়ারণ্য।

44. জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্ক কাকে বলে ?

অভয়ারণ্যের চেয়ে আয়তনে বড়ো, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন যে অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশের বন্যপ্রাণী ও ঐতিহাসিক কোনো নিদর্শন চিরকালের জন্য সংরক্ষিত এবং এমনভাবে সংরক্ষিত রাখা হয় যে, প্রয়োজন ছাড়া ওই অঞ্চলের কোনোরূপ পরিবর্তন আনা চলবে না, সেই অঞ্চলকে জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্ক বলে। যেমন—জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক।

45. সংরক্ষিত অরণ্য বা রিজার্ভ ফরেস্ট কাকে বলে ?

অভয়ারণ্যের চেয়ে আয়তনে ছোটো, রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন যে অঞ্চলে ভারতীয় বন আইন অনুযায়ী সাধারণের প্রবেশ, গাছ কাটা ও প্রাণী শিকার নিষিদ্ধ, তাকে সংরক্ষিত বন বা রিজার্ভ ফরেস্ট বলে। যেমন—চাপরামারি।

FAQs:

46. পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে কোন্ সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী সংরক্ষণ করা হয় ?

পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে কুমির (সরীসৃপ) ও রয়েল বেঙ্গল টাইগার (স্তন্যপায়ী) সংরক্ষণ করা হয়।

47. পশ্চিমবঙ্গের দুটি অভয়ারণ্য (Sanctuary) এবং দুটি সংরক্ষিত বনভূমির উদাহরণ দাও।

পশ্চিমবঙ্গের দুটি অভয়ারণ্য—(i) দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সুন্দরবন, (ii) জলপাইগুড়ির জলদাপাড়া।
দুটি সংরক্ষিত বনভূমি—(i) জলপাইগুড়ির গোরুমারা, (ii) জলপাইগুড়ির চাপরামারি।

48. বনাঞ্চল ধ্বংস হওয়ার দুটি কারণ লেখো।

বনাঞ্চল ধ্বংসের দুটি কারণ—
(i) জনসংখ্যার চাপে বাসস্থান নির্মাণের জন্য যথেচ্ছভাবে গাছ কাটা।
(ii) চাষের জন্য অবৈজ্ঞানিকভাবে বনাঞ্চল কেটে কৃষিজমি তৈরি করা।

49. আদিম জনজাতির মধ্যে দেখা যায়, এমন দুটি সংরক্ষণ ব্যবস্থা উল্লেখ করো।

আদিম জনজাতির মধ্যে পুরুষানুক্রমে কিছু স্থানীয় সংরক্ষণ ব্যবস্থা দেখা যায় ৷ যেমন— (i) জঙ্গলের একটি বিশেষ স্থানকে পবিত্র স্থান হিসেবে পুজো করা হয় এবং সেখানকার কোনো জীবকে ধ্বংস করা হয় না।
(ii) কোনো ভেষজ উদ্ভিদ তোলার সময় তার কিছুটা বীজ সেখানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

50. বিপন্ন প্রজাতি (Endangered species) কাকে বলে ?উদাহরণ দাও।

জীবের যে সকল প্রজাতির অস্তিত্ব প্রাকৃতিক কারণে বা মানুষের সৃষ্ট কাজকর্মের ফলে বিপন্ন হয়েছে অবলুপ্ত হতে চলেছে, তাদের বিপন্ন প্রজাতি বা এনডেনজারড স্পিসিস বলে।
উদাহরণ :
উদ্ভিদ—সর্পগন্ধা, কলশপত্রী, গরান।
প্রাণী—একশৃঙ্গ গন্ডার, নীল তিমি, কস্তুরীমৃগ।

Leave a Comment