আজকের প্রতিবেদনে আমরা একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্র প্রজেক্ট (pond ecosystem) উপাদান গুলি এবং তাদের মধ্যে আন্ত:সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করব। একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে কি কি জড় উপাদান রয়েছে, পুকুরের বাস্তুতন্ত্র প্রকল্প ভূমিকা, ভৌত উপাদান রয়েছে, জীবজ উপাদান রয়েছে সেইগুলি নিয়ে যেমন আলোচনা করা হবে তার সাথে সাথে উৎপাদক, খাদক এবং বিয়োজকের সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করা হবে।
এছাড়া ও সংরক্ষণ এবং তার গুরুত্ব, খাদ্য পিরামিড, জল সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক সম্পদ, অভয়ারণ্য, সংরক্ষিত অরণ্য, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার মতো বিষয়গুলিও গুরুত্বপূর্ণ সহকারে আলোচনা করা হলো। এর সাথে বাস্তুতন্ত্র বা পুকুরের বাস্তুতন্ত্র (pond ecosystem)থেকে যত রকমের প্রশ্ন আসতে পারে তার ২ টি নির্বাচিত পিডিএফ ফাইল সরবরাহ করা হলো। যে পি.ডি.এফ এর একটির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কম্পিটিটিভ পরীক্ষার জন্য উপযোগী বাস্তুতন্ত্র সংক্রান্ত প্রায় সমস্ত প্রশ্ন এবং উত্তর এবং অন্যটি হলো পুকুরের বাস্তুতন্ত্র প্রজেক্ট Pdf । আশা করব আজকের প্রতিবেদনটি সহ Pdf টি পরীক্ষার্থী এবং চাকরি পরীক্ষার্থীদের খুবই উপকারে আসবে। আর ভবিষ্যতে যদি এইরকম Pdf ফাইল বা পোস্ট প্রয়োজন হয় কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না।
পুকুরের বাস্তুতন্ত্র প্রজেক্ট pdf 1
পুকুরের বাস্তুতন্ত্র প্রজেক্ট pdf 2 for college student
এক ঝলকে:
প্রশ্ন: একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্র প্রজেক্ট (pond ecosystem) বর্ণনা দাও।
ANS. পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের বর্ণনা (pond ecosystem):
(i) পুকুরের পাঁক, মাটি, জল, জলে দ্রবীভূত O2-CO2, সূর্যালোক প্রভৃতি হল জড় উপাদান।
(ii) পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক হল জলজ আণুবীক্ষণিক উদ্ভিদ ফাইটোপ্ল্যাংকটন, বিভিন্ন ধরনের শৈবাল, জলে ভাসমান উদ্ভিদ (যেমন—কচুরিপানা, অ্যাজোলা, উলফিয়া), জলে নিমজ্জিত উদ্ভিদ (যেমন—হাইড্রিলা, কারা, নিটেলা) এবং অর্ধনিমজ্জিত উদ্ভিদ (পদ্ম, শালুক)।
(iii) প্রাথমিক খাদক হল জুপ্ল্যাংকটন (যেমন—ডাফনিয়া, সাইক্লপ্স), কেঁচো, শামুক। (iv) গৌণ খাদক হল—ছোটোমাছ, চিংড়ি ইত্যাদি।
(v) প্রগৌণ খাদক হল—বড়োমাছ, বক, চিল, মাছরাঙা প্রভৃতি।
(vi) জলে ও পাঁকে বসবাসকারী ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া (বিয়োজক) খাদক ও উৎপাদকের মৃত্যুর পর ভেঙে অজৈব উপাদানে পরিণত করে।
জীব বৈচিত্র্য ও সংরক্ষণ: Conservation of Biodiversity ppt, WB TET 2023
পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের (pond ecosystem) জড় উপাদান:
একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে বিভিন্ন ধরনের জৈব ও অজৈব উপাদান দেখা যায়। যেমন হিউমাস, কার্বন-ডাই অক্সাইড(CO2), অক্সিজেন(O2), ক্যালসিয়াম(Ca), ফসফরাস(P) ইত্যাদি।
পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের (pond ecosystem) ভৌত উপাদান এবং অবস্থা:
একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে যে যে ভৌত উপাদানগুলি দেখতে পাওয়া যায় সেগুলি হল সূর্যালোক, জল, ইত্যাদি এবং যে যে প্রভাব গুলি লক্ষ্য করা যায় সেগুলি হল তাপমাত্রা, বায়ুর চাপ, বায়ুপ্রবাহ, জলের চাপ ইত্যাদি।
পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের (pond ecosystem) জীবজ উপাদান:
একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে জীবজ উপাদান গুলোর মধ্যে প্রথমেই আছে উৎপাদক, এরপর যথাক্রমে প্রথম শ্রেণীর খাদক, দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক, ৩য় শ্রেণীর খাদক এবং সবশেষে আছে বিভিন্ন রকম বিয়োজক। এগুলি সম্পর্কে নিজে বর্ণনা করা হলো।
উৎপাদক:
একটি পুকুরের জলে বিভিন্ন রকম ভাসমান প্ল্যাংটন থাকে। এরা দুই প্রকারের হয়ে থাকে যথা-ফাইটোপ্লাংটন এবং জু-প্লাংকটন। এরাই প্রকৃতপক্ষে একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে (pond ecosystem) উৎপাদকের ভূমিকা পালন করে।
খাদক:
একটি পুকুরে যে সকল জীবজ উপাদান, খাদ্যের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপরিক্ত উৎপাদকদের (ফাইটোপ্লাংটন এবং জু-প্লাংকটন) উপর নির্ভরশীল তাদেরকেই খাদক বলা হয়। এই খাদক তিন প্রকারের হয়ে থাকে।
প্রথম শ্রেণীর খাদকঃ
একটি পুকুরে ভাসমান ক্ষুদ্র পোকা, মশার শুককিট থেকে শুরু করে অতি ক্ষুদ্র প্রাণী, জু-প্লাংটন,অতি ক্ষুদ্র মাছ ইত্যাদি হলো প্রথম স্তরের খাদক। এরা সরাসরি উৎপাদকদেরকে খেয়ে বেঁচে থাকে।
দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদকঃ
পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে কিছু ছোট ছোট মাছ কিছু জলজ পতঙ্গ ব্যাংক ইত্যাদি হল দ্বিতীয় স্তরের খাদক। এরা সাধারণত প্রথম স্তরের খাদককে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে।
তৃতীয় স্তরের খাদকঃ
বড় বড় মাছ, শোল, বোয়াল, ভেটকি ইত্যাদি মাছ, বক, সাপ ইত্যাদি হলো একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের সর্বোচ্চ স্তরের খাদক। যারা প্রধানত প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদককে খেয়ে বেঁচে থাকে।
পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের (pond ecosystem) বিয়োজক:
জলে ও পাঁকে বসবাসকারী ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া, খাদক ও উৎপাদকের মৃত্যুর পর তাদের দেহকে ভেঙে অজৈব উপাদানে পরিণত করে। এই ছত্রাক ব্যাকটেরিয়াদেরকে বিয়োজক বলা হয়।
পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের (pond ecosystem) ভূমিকা:
পুকুরের সবুজ উদ্ভিদেরা কার্বন ডাইঅক্সাইড, জল এবং সৌরশক্তির সাহায্যে খাদ্য তৈরি করে। এই খাদ্য প্রাথমিক খাদকরা গ্রহণ করে, গৌণ খাদকরা প্রাথমিক খাদকদের এবং প্রগৌণ খাদকরা গৌণ খাদকদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এই উদ্ভিদ ও প্রাণীদের মৃত্যুর পর বিয়োজকেরা তাদের মৃতদেহকে বিয়োজিত করে সরল, অজৈব উপাদানে পরিণত করে। এইভাবে পুকুরের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় থাকে।
প্রশ্ন: বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক, খাদক ও বিয়োজক কাকে বলে উদাহরণসহ বুঝিয়ে দাও।
ANS. উৎপাদক—বাস্তুতন্ত্রে যে সকল জীব কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন প্রভৃতি অজৈব উপাদান সংগ্রহ করে সৌরশক্তির সাহায্যে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্যসংশ্লেষ করতে পারে, তাদের উৎপাদক বলে ৷ বাস্তুতন্ত্রে শক্তির মূল উৎস সূর্য। সৌরশক্তিকে আবদ্ধ করার ক্ষমতা কেবল উৎপাদকেরই আছে।
যেমন—সবুজ উদ্ভিদ, সালোকসংশ্লেষে সক্ষম প্রাণী ও সালোকসংশ্লেষকারী ব্যাকটেরিয়া।
খাদক—বাস্তুতন্ত্রে যে সকল জীব নিজেরা খাদ্যসংশ্লেষ করতে পারে না, খাদ্যের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভারে উৎপাদকের ওপর নির্ভরশীল, তাদের বলা হয় খাদক। যে সকল খাদক সরাসরি উৎপাদকদের খায়, তাদের বলে প্রাথমিক খাদক। যেমন—গোরু, ছাগল, হরিণ, ফড়িং ইত্যাদি। আবার যেসব খাদক প্রাথমিক খাদকদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের বলে গৌণ খাদক। যেমন—ব্যাং, কুকুর, বিড়াল, ছোটোমাছ ইত্যাদি । গৌণ খাদকদের ভক্ষণকারী প্রাণীরা হল প্রগৌণ খাদক। যেমন—বাজপাখি, বাঘ।
বিয়োজক–যে সকল জীব মৃত জীবদেহ বা দেহাংশ বা জটিল জৈব পদার্থকে উৎপাদকের গ্রহণযোগ্য সরল অজৈব উপাদানে রূপান্তরিত করে, তাদের বিয়োজক বলে। যেমন—বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক।
প্রশ্ন: সংরক্ষণ কাকে বলে ? সংরক্ষণের তিনটি গুরুত্ব আলোচনা করো।
ANS. ওডামের (1972) মতে— যে পদ্ধতিতে আমাদের পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু বিজ্ঞানসম্মত ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন হয় এবং প্রাকৃতিক সম্পদকে ক্ষতিকারক প্রভাব, ধ্বংস, অপব্যবহার থেকে রক্ষা করা হয়, তাকে সংরক্ষণ বলে।
সংরক্ষণের গুরুত্ব:
(i) প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু বিজ্ঞানসম্মত, সুপরিকল্পিত ব্যবহার এবং ধ্বংস, ক্ষয় ও অপচয় রোধের দ্বারা ভবিষ্যতে মানুষের কল্যাণসাধন সম্ভব।
(ii) বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ প্রয়োজন, অন্যথায় ভারসাম্য নষ্ট হলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে মানুষের ওপর।
(iii) প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে, বিরল ও মূল্যবান জীবের অস্তিত্ব বজায় রাখতে ও জীববৈচিত্র্য অক্ষুণ্ণ রাখতে সংরক্ষণ প্রয়োজন।
(iv) বায়ু, জল ও মাটির দূষণ রোধ করতে সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: খাদ্য পিরামিড সম্পর্কে কে সর্বপ্রথম ধারণা ব্যক্ত করেন ?
ANS. খাদ্য পিরামিড সম্পর্কে প্রথম ধারণা ব্যক্ত করেন বিজ্ঞানী চার্লস এলটন (1927)
প্রশ্ন: জল সংরক্ষণের গুরুত্ব আলোচনা করো।
ANS. (i) জীবের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মের জন্য জলের প্রয়োজন, তাই বিশুদ্ধ জলের সংরক্ষণ জরুরি ।
(ii) জলজ জীবদের আশ্রয়স্থল হল জল এবং তারা শ্বাসকার্যে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় জল থেকে।
(iii) প্রাকৃতিক কৃষি, জলসেচ, জলচক্র ইত্যাদি অব্যাহত রাখার জন্য।
(iv) মৎস্যচাষের জন্য এবং জলবিদ্যুৎ তৈরির জন্য জল সংরক্ষণ প্রয়োজন।
(v) বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে জল সংরক্ষণ জরুরি।
(vi) জল পরিবহন ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্য জল সংরক্ষণ জরুরি।
(vii) খরার সময় প্রয়োজনীয় জল সরবরাহ অব্যাহত রাখতে জল সংরক্ষণ করা দরকার।
প্রশ্ন: বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদের নাম ও উদাহরণ লেখো।
ANS. প্রাকৃতিক সম্পদ বিভিন্ন প্রকারের হয়—
a. পুনর্নবীকরণযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ—বারবার ব্যবহারেও নিঃশেষিত হয় না। যেমন—জল সম্পদ।
b. অনবীকরণযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ—ব্যবহারের ফলে নিঃশেষিত হয়। যেমন—কয়লা, পেট্রোলিয়াম ৷
c. অপরিবর্তনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ—প্রাকৃতিক জলাশয়, প্রাকৃতিক দৃশ্য।
প্রশ্ন: অভয়ারণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্য এই কথা দুটির অর্থ কী? পশ্চিমবঙ্গে একটি অভয়ারণ্যের নাম উল্লেখ করো। এই জাতীয় অরণ্যের প্রয়োজনীয়তাগুলি উল্লেখ করো।
ANS. অভয়ারণ্য বলতে সেইসব প্রাকৃতিক অঞ্চলকে বোঝায়, যেখানে কিছু কিছু নির্বাচিত অবলুপ্তপ্রায় প্রাণী, স্বচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে পারে এবং যেখানে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করা, গাছ কাটা, বন্য প্রাণী ধরা, শিকার ও উত্ত্যক্ত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
সংরক্ষিত অরণ্য বলতে বোঝায় অভয়ারণ্যের চেয়ে ছোটো, রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন যেসব অঞ্চলে ভারতীয় বন আইন অনুযায়ী সাধারণের প্রবেশ, গাছ কাটা ও প্রাণী শিকার নিষিদ্ধ। পশ্চিমবঙ্গের একটি অভয়ারণ্যের নাম—সুন্দরবন অভয়ারণ্য।
অভয়ারণ্য, সংরক্ষিত অরণ্যের প্রয়োজনীয়তা—
(i) অভয়ারণ্যের মাধ্যমে বিশেষ কিছু নির্বাচিত উদ্ভিদ ও প্রাণীকে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো।
(ii) প্রাকৃতিক পরিবেশে জীবজন্তুর প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান অক্ষুণ্ন রাখা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা।
(iii) চোরাশিকারিদের হাত থেকে বন্যপ্রাণীকে স্বাভাবিক পরিবেশে রক্ষা করা।
(iv) লুপ্তপ্রায় প্রাণীরা যাতে নির্ভয়ে প্রাকৃতিক, স্বাভাবিক পরিবেশে বিচরণ ও প্রজনন করতে পারে, তার জন্য এইপ্রকার অরণ্যের প্রয়োজন।
প্রশ্ন: বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব লেখো। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপায়গুলি লেখো।
ANS. বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা—
(i) প্রাকৃতিক পরিবেশে জীবজন্তুর প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান অক্ষুণ্ন রাখা।
(ii) জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য, সংরক্ষিত অরণ্য প্রভৃতির মাধ্যমে লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বাঁচানো।
(iii) প্রাকৃতিক পরিবেশে খাদ্যশৃঙ্খল অটুট রাখা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা।
(iv) পর্যটন শিল্পের প্রসারের জন্য ও মানুষকে নির্মল আনন্দ দিতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রয়োজন।
(v) বন্যপ্রাণীর নিজস্ব পরিবেশে তাদের বিকাশ ও অভিব্যক্তির ধারা অব্যাহত রাখতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রয়োজন।
(vi) প্রাকৃতিক পরিবেশে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা দরকার।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপায়—
(i) বনভূমির গুরুত্ব অনুযায়ী জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য, সংরক্ষিত অরণ্য, পাখিরালয়, ব্যাঘ্র-প্রকল্প, ডিয়ার পার্ক, কুমির-প্রকল্প প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা করা।
(ii) অরণ্যে বসবাসকারী প্রাণীদের জলের ব্যবস্থা করা, নিরাপদ প্রজননের ব্যবস্থা করা।
(iii) অসুস্থ বন্যপ্রাণীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
(iv) চোরাশিকার, কাঠের চোরাকারবার বন্ধ করার জন্য পর্যাপ্ত সশস্ত্র বনকর্মী ও বনপ্রহরী নিয়োগ করা।
(v) অভয়ারণ্যের কাছাকাছি জনবসতি ও কলকারখানা গড়তে না দেওয়া।
(vi) বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন কঠোরভাবে মেনে চলা।
(vii) জনসচেতনতা বাড়ানো।
প্রশ্ন: ভারতবর্ষে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাসের কারণ আলোচনা করো।
ANS. ভারতবর্ষে বন্যপ্রাণী হ্রাসের কারণগুলি হল—
(i) স্বাভাবিক বসতির অভাব—জনবিস্ফোরণের চাপে নতুন কৃষিজমি ও মানুষের বসতির জন্য নির্বিচারে বন ধ্বংস করা হচ্ছে। ফলে বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক বসতির অভাবে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
(ii) প্রাকৃতিক বিপর্যয়—প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, খরা, ভূমিকম্প, দাবানল প্রভৃতি নানা কারণে বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়।
(iii) বিনোদনের কারণে—বিনোদনের জন্য শখের শিকারিদের হাতে বহু বন্যপ্রাণী মারা যায়।
(iv) চোরাশিকার–কুসংস্কার বা লোভের বশীভূত হয়ে চর্বি, চামড়া, শিং, খুর, দাঁত, লোম প্রভৃতির লোভে চোরাশিকার বন্যপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাসের একটি অন্যতম কারণ।
(v) বাসস্থানে খাদ্য ও জলের অভাব—বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক বাসভূমিতে খাদ্যাভাব ও জলাভাব বন্যপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাসের একটি কারণ।
(vi) প্রজনন সমস্যা—বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে বন্যপ্রাণীর প্রজনন ক্ষেত্রের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। চোরাশিকারের ফলে স্ত্রী ও পুরুষ প্রজাতির অনুপাতে সাম্য না থাকায় প্রজননের অভাবে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
প্রশ্ন: ইন-সিটু কনজারভেশন ও এক্স-সিটু কনজারভেশন কাকে বলে ?
ANS. ইন-সিটু কনজারভেশন : কোনো লুপ্তপ্রায় জীবকে তাদের নিজস্ব বসবাসস্থলের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণ করাকে ইনসিটু কনজারভেশন বলে। অভয়ারণ্যে ও সংরক্ষিত অরণ্যে ইন-সিটু কনজারভেশন করা হয়।
এক্স-সিটু কনজারভেশন : উন্নত, বিরল ও লুপ্তপ্রায় প্রজাতির জীবকে নিজস্ব বসবাসস্থল ছাড়া অন্য কোথাও সংরক্ষণ করা, এ ছাড়া জীবের কোশ, ভ্রূণ বা প্রোটোপ্লাজমকে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে সংরক্ষণ করাকে এক্স-সিটু কনজারভেশন বলে। যেমন—চিড়িয়াখানায় বা গার্ডেনে সংরক্ষিত প্রাণী বা উদ্ভিদ সংরক্ষণ।
পরিবেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্থা—
CITES—কনভেনশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেন ইন এনডেনজারড্ স্পিসিস।
UNEP—ইউনাইটেড নেশনস্ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম।
IUCN—ইনটারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস। WCED—ওয়ার্ল্ড কমিশন অন এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। ।
পরিবেশ আন্দোলন:
- চিপকো আন্দোলন—(সুন্দরলাল বহুগুনা ও চণ্ডীপ্রসাদ ভাট-এর নেতৃত্বে)—উত্তরপ্রদেশের গাড়োয়াল জেলার মণ্ডল গ্রামে গাছ কাটার বিরুদ্ধে এই আন্দোলন।
- নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন—(মেধা পাটেকরের নেতৃত্বে)—গুজরাত মধ্যপ্রদেশের নর্মদা প্রকল্পের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন।
কোনো দেশে শতকরা 33 ভাগ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। ভারতে মোট ভূমির শতকরা 19ভাগ বনভূমি আছে।
প্রশ্ন: অটোইকোলজি ও সিনইকোলজি কাকে বলে ?
ANS. অটোইকোলজি : একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির জীব ও তার পরিবেশ সংক্রান্ত বাস্তুবিদ্যাকে
অটোইকোলজি বলে। ।
সিন্ইকোলজি : একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমগ্র জীবগোষ্ঠী ও তার পরিবেশ সংক্রান্ত বাস্তুবিদ্যাকে সিন্ইকোলজি বলে।
FAQs
প্রশ্ন: রেড ডাটা বুক (Red Data Book) কীজন্য গুরুত্বপূর্ণ ?
ANS. IUCN প্রকাশিত এই পুস্তকে পৃথিবীর লুপ্তপ্রায় বা অবলুপ্ত জীবদের বিবরণ পাওয়া যায়। বিপন্ন পাখি—ময়ূর, ধনেশ, ফেজেন্ট, সিন্ধু, ইগল। বিপন্ন সরীসৃপ—মেছো কুমির, ঘড়িয়াল, হিমালয়ান স্যালাম্যান্ডার। বিপন্ন স্তন্যপায়ী—কৃষ্ণসার হরিণ, বন্য গাধা, তুষার চিতা, বাঘ। মানুষের হাতে পৃথিবী থেকে লুপ্ত প্রাণী—মরিশাস দ্বীপের ডোডো পাখি, ভারতীয় চিতা, নিউজিল্যান্ডের মোয়া পাখি, উত্তর আমেরিকার ল্যাব্রাডর হাঁস, মেরু অঞ্চলের গ্রেট অক্।
পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক কাদেরকে বলা হয়?
একটি পুকুরের জলে বিভিন্ন রকম ভাসমান প্ল্যাংটন থাকে। এরা দুই প্রকারের হয়ে থাকে যথা-ফাইটোপ্লাংটন এবং জু প্লাংকটন। এরাই প্রকৃতপক্ষে একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদকের ভূমিকা পালন করে।
পুকুরের বাস্তুতন্ত্রে বিয়োজক কাদেরকে বলা হয়?
জলে ও পাঁকে বসবাসকারী ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া, খাদক ও উৎপাদকের মৃত্যুর পর তাদের দেহকে ভেঙে অজৈব উপাদানে পরিণত করে। এই ছত্রাক ব্যাকটেরিয়াদেরকে বিয়োজক বলা হয়।
Sir, I need the project file of pond ecosystem for college but it is not downloading
It is downloading, I checked that. Now you can download the PDF