Pressure of Liquid and Air, Class 9: তরল ও বায়ুর চাপ

Pressure of Liquid and Air: Class 9
Pressure of Liquid and Air: Class 9

তরল ও বায়ুর চাপ সংক্রান্ত (Pressure of Liquid and Air: Class 9) গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি আজকের প্রতিবেদনে আলোচ্য বিষয়। যেমন চাপ ও ঘাতের মধ্যে সম্পর্ক, কোন বিন্দুতে প্রবাহীর চাপ, তরলের চাপের প্রকৃতি, ব্যারোমিটার, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, সাইফনের কার্যনীতি, জলের সমোচ্চশীলতা ধর্ম ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আজকের প্রতিবেদনে আলোচনা করা হয়েছে।

Whatsapp গ্রুপে যুক্ত হন
Telegram গ্রুপে যুক্ত হন

এই বিষয়গুলি একদিকে যেমন নবম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে খুব সহজে বোধগম্য হবে এবং ভালো নম্বর পেতে সাহায্য করবে, ঠিক তেমনি যারা বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা বা এনট্রান্স দিচ্ছেন সে ক্ষেত্রেও সমানভাবে উপযোগী। আজকের প্রতিবেদনে তরল এবং বায়ুর চাপ সংক্রান্ত বিষয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ 16 টি প্রশ্ন এবং তাদের উত্তরগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। চলো শুরু করা যাক।

প্রবাহী (Fluid) কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর : প্রবাহী (Fluid) :

যেসব পদার্থ প্রবাহিত হতে পারে, তাদের প্রবাহী বলে।

উদাহরণ : যে-কোনো তরল ও গ্যাসীয় পদার্থ হল প্রবাহী, কারণ, এরা প্রবাহিত হতে পারে।

চাপ কাকে বলে? চাপ কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?

উত্তর : চাপ (Pressure) :

কোনো তলের প্রতি একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে প্রযুক্ত বলকে, ওই তলের ওপর প্রযুক্ত চাপ বলা হয়। তলের ক্ষেত্রফল A ও ওই তলে লম্বভাবে প্রযুক্ত বল F এবং তলের উপর প্রতিটি বিন্দুতে চাপ সমান হলে,

চাপ = প্রযুক্ত বল x ক্ষেত্রফল

বা, P = F.A

কোনো তলে প্রযুক্ত চাপ, প্রদত্ত বল এবং তলের ক্ষেত্রফলের ওপর নির্ভর করে। প্রদত্ত বল বেশি হলে চাপ বেশি হয়। যেমন— ছুঁচের অগ্রভাগের ক্ষেত্রফল খুব কম বলে তা বেশি চাপ প্রয়োগ করে ও সহজেই চামড়ায় ঢুকে যায়। কিন্তু পেনসিলের অগ্রভাগের ক্ষেত্রফল ছুঁচের তুলনায় বেশি বলে তা কম চাপ প্রয়োগ করে ও চামড়ায় সহজে প্রবেশ করতে পারে না।

[ আরো পড় : Score High in Class 9 Atomic Structure MCQ Mock Test | পরমাণুর গঠন ]

তরলের চাপ কাকে বলে? তরলের ঘাত বলতে কী বোঝায়? চাপ ও ঘাতের মধ্যে সম্পর্ক কী?★★

উত্তর : তরলের চাপ (Pressure of liquid) :

তরলের মধ্যে কোনো বিন্দুতে একক ক্ষেত্রফল কল্পনা করলে ওই ক্ষেত্রের ওপর তরল লম্বভাবে যে বল প্রয়োগ করে, তাকেই ওই বিন্দুতে তরলের চাপ বলে। ধরা যাক, প্রদত্ত চিত্রে তরলের মধ্যে P একটি বিন্দু নিয়ে এর চারদিকে একক ক্ষেত্রফল কল্পনা করা হল। ওই ক্ষেত্রের ওপর তরল যদি F বল প্রয়োগ করে তবে প্রদত্ত চাপ,

P = তরলের ওপর প্রযুক্ত চাপ P = F/A

ঘাত (Thrust) :

কোনো তরলসংলগ্ন তলের ওপর তরলের দ্বারা লম্বভাবে প্রযুক্ত মোট বলকেই বলা হয় ওই তলে প্রযুক্ত ঘাত। অনুভূমিক তলে রাখা বস্তুর ক্ষেত্রে ওজনই হল, বস্তুটি যে অনুভূমিক তলে রাখা হয়েছে তার ওপর ওই বস্তু দ্বারা প্রযুক্ত ঘাতের পরিমাপ।

চাপ ও ঘাতের সম্পর্ক :

সংজ্ঞানুসারে, চাপ (P) = প্রযুক্ত বল (F) / ক্ষেত্রফল (A)

বা, ঘাত (F) = চাপ (P) × ক্ষেত্রফল (A)। ক্ষেত্রফলের মান ধ্রুবক হলে ঘাত চাপের সমানুপাতিক। অর্থাৎ, F ∝ P, যখন A ধ্রুবক।

CGS, এবং SI পদ্ধতিতে চাপ ও ঘাতের এককগুলি কী কী? ★★★

রাশির নামচাপঘাত
CGS পদ্ধতিতেডাইন / সেমি²ডাইন (dyn)
SI-তে এককনিউটন / মি²নিউটন (N)

তরলের মধ্যে কোনো বিন্দুতে চাপের রাশিমালা নির্ণয় করো। তরলের চাপের বৈশিষ্ট্যগুলি বিবৃত করো।

উত্তর) : তরলের মধ্যে কোনো বিন্দুতে চাপের রাশিমালা :

মনে করি, একটি পাত্রে ρ ঘনত্বের একটি তরল আছে। তরলের h গভীরতায় S একটি বিন্দু নেওয়া হল। S বিন্দুকে কেন্দ্র করে একটি ক্ষেত্রফল A কল্পনা করা হল। A ক্ষেত্রকে ভূমি ধরে তরলের উপরিতল পর্যন্ত একটি খাড়া স্তম্ভ কল্পনা করা হল যার দৈর্ঘ্য h. এই তরলস্তম্ভের ওজনই হল A তলের ওপর প্রযুক্ত বল।

তরলের মধ্যে কোনো বিন্দুতে চাপের রাশিমালা
তরলের মধ্যে কোনো বিন্দুতে চাপের রাশিমালা

.”. A তলে প্রযুক্ত বল = h উচ্চতাবিশিষ্ট তরলস্তম্ভের ওজন

= তরলস্তম্ভের ভর × অভিকর্ষজ ত্বরণ

= তরলস্তম্ভের আয়তন × তরলের ঘনত্ব × অভিকর্ষজ ত্বরণ

= Ah x ρ x g যেহেতু, [ভর = আয়তন x ঘনত্ব]

.”. A তলে প্রযুক্ত চাপ = (A তলে প্রযুক্ত বল বা ঘাত)/ ক্ষেত্রফল

বা, P = (Ah x ρ x g) / A

বা, P = h x ρ x g

তরলের চাপ = গভীরতা x ঘনত্ব × অভিকর্ষজ ত্বরণ।

যেহেতু, তরলের উপরিস্থ বায়ুমণ্ডল তরলের উপর চাপ প্রদান করে, তাই তরলের মধ্যে । h গভীরতায় মোট চাপ = বায়ুমণ্ডলীয় চাপ (Po) + তরলস্তম্ভের দেওয়া চাপ = Po+ hρg |

তরলের চাপের বৈশিষ্ট্য (Properties of liquid Pressure):

তরলের চাপের বৈশিষ্ট্যগুলি হলো –

  1. তরলের অভ্যন্তরে থাকা যে-কোনো বিন্দুতে তরল ঊর্ধ্বচাপ, নিম্নচাপ ও পার্শ্বচাপ দেয়।
  2. স্থির তরলের মধ্যে যে-কোনো গভীরতায় অবস্থিত কোনো বিন্দুতে চাপ সবদিকে সমান হয়।
  3. স্থির তরলের মধ্যে যে-কোনো বিন্দুতে ওই তরলের ওপর দেওয়া চাপ – বিন্দুটির গভীরতা (h), তরলের ঘনত্ব (ρ) এবং সংশ্লিষ্ট স্থানের অভিকর্ষজ ত্বরণের (g) মানের ওপর নির্ভর করে।
  4. তরলের মধ্যে একই অনুভূমিক রেখায় বা তলে সব বিন্দুতে চাপ সমান হয়।
  5. আবদ্ধ পাত্রে স্থির তরলে প্রযুক্ত চাপ তরলের মধ্যে চতুর্দিকে সমানভাবে সঞ্চালিত হয় এবং ওই চাপ তরলসংলগ্ন পাত্রের দেওয়ালে লম্বভাবে ক্রিয়া করে।

স্থির তরলের মুক্ততল সর্বদা অনুভূমিক হয় কেন ?

ধরা যাক, স্থির তরলের মুক্ততল অনুভূমিক নয়। এক্ষেত্রে তরলের মুক্ততল প্রদত্ত ছবির মতো হলে তরলের মধ্যে একই অনুভূমিক রেখা xy-তে A ও B দুটি বিন্দু ধরা হল।

স্থির তরলের মুক্ততল সর্বদা অনুভূমিক
স্থির তরলের মুক্ততল সর্বদা অনুভূমিক

A বিন্দুর গভীরতা =h1,

এবং B বিন্দুর গভীরতা = h2।

A বিন্দুতে ওই তরলের চাপ = h1ρg |

এবং B বিন্দুতে ওই তরলের চাপ = h2ρg |

চাপের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, তরলের মধ্যে একই অনুভূমিক রেখার উপরিস্থ সব বিন্দুতে চাপ সমান হয়।

অর্থাৎ, A ও B বিন্দুতে চাপ সমান হবে।

সুতরাং, h1ρg = h2ρg

বা, h1 = h2

সুতরাং, স্থির তরলের মুক্ততল সর্বদা অনুভূমিক হবে।

তরলের সমোচ্চশীলতা ধর্ম বলতে কী বোঝায়?★★

উত্তর : তরলের সমোচ্চশীলতা ধর্ম :

বিভিন্ন আকারের এবং বিভিন্ন আয়তনের কয়েকটি সংযুক্ত পাত্রের কোনো একটিতে তরল ঢাললে সবকটি পাত্রেই একটি নির্দিষ্ট সময় পর তরলতল সমান উচ্চতায় আসে। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে তরলের সমোচ্চশীলতা ধর্ম (সম উচ্চতায় আসতে চাওয়ার প্রবণতা) বলা হয়।

জলের সমোচ্চশীলতা ধর্মকে ব্যবহারিক জীবনে কীভাবে কাজে লাগানো হয়?

উত্তর : সমোচ্চশীলতা ধর্মের ব্যাবহারিক প্রয়োগ :

সমোচ্চশীলতা ধর্মের ব্যাবহারিক প্রয়োগ
সমোচ্চশীলতা ধর্মের ব্যাবহারিক প্রয়োগ
  1. জলের সমোচ্চশীলতা ধর্মকে কাজে লাগিয়ে শহরের অফিস, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, কারখানা ও বাসগৃহে জল সরবরাহ করা হয়।
  2. নদীতে বাঁধ দিয়ে জল ধরে রেখে সেই জল দিয়ে জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করা হয়,
  3. জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থাও এই ধর্মের ওপর নির্ভরশীল।
  4. জলের সমোচ্চশীলতা ধর্মের একটি প্রাকৃতিক দৃষ্টান্ত হল আর্টেজীয় কূপ।

আর্টেজীয় কূপ এর কার্যনীতি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : জলের সমোচ্চশীলতা ধর্মের একটি প্রাকৃতিক দৃষ্টান্ত হল আর্টেজীয় কূপ।

আর্টেজীয় কূপ কিভাবে কাজ করে ?

ভূপৃষ্ঠের নীচে শিলাস্তরে দু-ধরনের স্তর দেখতে পাওয়া যায়—

  1. বালি, কাঁকড় ও বেলেমাটি নির্মিত প্রবেশ্য স্তর।
  2. পাথর, শ্লেট, কাদামাটি ইত্যাদি নির্মিত অপ্রবেশ্য স্তর।

কোনো কোনো স্থানে দুটি অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মাঝে প্রবেশ্য শিলাস্তর প্রায় অর্ধচন্দ্র বা U আকৃতির মতো বাঁকানো থাকে এবং তার দুই প্রান্ত ভূপৃষ্ঠের উপর উন্মুক্ত থাকে। বৃষ্টির জল ওই প্রবেশ্য স্তরের প্রান্ত দিয়ে ঢুকে প্রবেশ্য স্তরে জমা হয়। প্রবেশ্য স্তরের নীচে অপ্রবেশ্য স্তর থাকায় জল আর নীচে যেতে পারে না।

আর্টেজীয় কূপ এর কার্যনীতি
আর্টেজীয় কূপ এর কার্যনীতি

উপরের অপ্রবেশ্য স্তরের মধ্য দিয়ে প্রবেশ্য শিলাস্তর পর্যন্ত একটি কূপ খনন করা হলে জলের সমোচ্চশীলতা ধর্মের জন্য জল ফোয়ারার মতো প্রবল বেগে উপরে উঠে আসে। একেই আর্টেজীয় কূপ বলে। ফ্রান্সের আঁতোয়া অঞ্চলে প্রথম এ ধরনের কূপের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল বলে এদের ‘আর্টেজীয় কূপ’ (Artesian well) বলা হয়।

ব্যবহার : অস্ট্রেলিয়া ও সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে জমিতে জলসেচের প্রয়োজনে এই ধরনের কূপ ব্যবহার করা হয়।

কিছু কিছু আর্টেজীয় কূপ থেকে ভূগর্ভস্থ তাপশক্তির প্রভাবে উত্তপ্ত জল বা ক্ষেত্রবিশেষে গরম জলের বাষ্প নির্গত হতে দেখা যায়। এদের উষ্ণপ্রস্রবণ (Hot spring) বলে।উষ্ণপ্রস্রবণের জলে বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ মিশ্রিত থাকায় এই জলে স্নান স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। পশ্চিমবঙ্গের

বক্রেশ্বর-এ ধরনের উন্নপ্রস্রবণ দেখা যায়।

বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কাকে বলে? বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সৃষ্টি হয় কেন? এর মান ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতার সঙ্গে কীভাবে বদলায়? ★★

উত্তর : বায়ুমণ্ডলীয় চাপ (Atmospheric pressure) :

কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কোনো বিন্দুর চারদিকে একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে বায়ুমণ্ডল তার ওজনের জন্য যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করে, তাকে ওই স্থানের বায়ুমণ্ডলীয় চাপ বলে।

বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সৃষ্টির কারণ :

যে বস্তুর ওজন আছে তারই চাপ দেওয়ার ক্ষমতা বর্তমান। ভূপৃষ্ঠকে ঘিরে যে বিশাল অদৃশ্য গ্যাসীয় আবরণ আছে, তাকে বায়ুমণ্ডল বলে। পৃথিবীর উপরে অবস্থিত এই বায়ুমণ্ডলকে অসংখ্য অনুভূমিক স্তরের সমষ্টি হিসেবে ভাবা যায়। এর একটি স্তর অন্য আর একটির উপরে থাকায় বায়ুমণ্ডলের কোনো বিশেষ স্তরকে তার উপরে অবস্থিত স্তরগুলির ওজনের জন্য চাপ সহ্য করতে হয়। এভাবেই বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সৃষ্টি হয়ে থাকে।

উচ্চতার সঙ্গে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের পরিবর্তন:

ভূপৃষ্ঠে কোনো নির্দিষ্ট স্তর সংলগ্ন বায়ুস্তর ছাড়াও উপরে থাকা সমস্ত বায়ুস্তরগুলির সম্মিলিত ওজনের জন্য চাপ কার্যকরী হয় বলে ভূপৃষ্ঠের উপর বায়ুমণ্ডলের চাপ সবথেকে বেশি হয়। স্বাভাবিকভাবেই ভূত্বক সংলগ্ন অঞ্চলের বায়ুস্তরের ঘনত্বও সর্বাধিক হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে ওঠা যায় বায়ুর ঘনত্বও ক্রমশ কমতে থাকে, বায়ুস্তরও তত পাতলা হয় এবং তার চাপ হ্রাস পায়।

প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপের সংজ্ঞা দাও। CGS পদ্ধতি ও SI-তে এর মান নির্ণয় করো। ★

প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ (Standard atmospheric pressure) :

45° অক্ষাংশে সমুদ্রপৃষ্ঠে 0°C উন্নতায় 76 সেমি উঁচু পারদস্তম্ভ যে চাপ প্রয়োগ করে, তাকে প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ বলা হয়।

CGS পদ্ধতিতে প্রমাণ চাপের রাশিমালা :

CGS পদ্ধতিতে প্রমাণ চাপের মান 76 সেমি উঁচু পারদস্তম্ভের চাপের সমান।

P = hρg = 76 × 13.6 x 980 ডাইন / সেমি² যেখানে, [পারদের ঘনত্ব (p) = 13.6 গ্রাম / ঘন সেমি ও অভিকর্ষজ ত্বরণ (g) = 980 সেমি/সে²]

P = 1.013 × 106 ডাইন / বর্গসেমি]।

SI-তে প্রমাণ চাপের রাশিমালা :

প্রমাণ চাপ (P) = 0.76 x 13600 x 9.8 [h = 0.76m, p = 13.6 x 103 kg/m3, g = 9.8m/s2] = 1.013 × 105 N/m2 ]

(P)= 1.013 Pa.

ব্যারোমিটার বা চাপমান যন্ত্র বলতে কী বোঝায়? ব্যারোমিটারের সাহায্যে কীভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব হয়? *

ব্যারোমিটার (Barometer) :

বায়ুমণ্ডলের চাপ যে যন্ত্রের সাহায্যে মাপা হয়, তাকে বলা হয় বায়ুচাপমাপক বা চাপমান যন্ত্র বা ব্যারোমিটার।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার কাজে ব্যারোমিটারের ব্যবহার :

  1. ব্যারোমিটারের পাঠ হঠাৎ দ্রুত কমতে থাকলে বুঝতে হবে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে, উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চল থেকে বায়ু প্রবল বেগে বওয়ার অর্থাৎ, ঝড় ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
  2. বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়লে বায়ুর চাপ কমে যায়। তাই ব্যারোমিটারের পাঠ ধীরে ধীরে কমতে থাকার অর্থ বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বাড়ছে। ফলে, বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
  3. ব্যারোমিটারের পাঠ যদি ধীরে ধীরে বাড়ে তাহলে বুঝতে হবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমছে। অর্থাৎ, আবহাওয়া শুষ্ক ও পরিষ্কার থাকার সম্ভাবনা বা রৌদ্রজ্জ্বল দিনের পূর্বাভাস পাওয়া যায়।
  4. ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতার হঠাৎ বৃদ্ধি নির্দেশ করে বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ অনেকখানি হ্রাস পেয়েছে অর্থাৎ, বায়ুচাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ থেকে অনুমান করা যায়, প্রবল বেগে শুকনো হাওয়া বইতে পারে।

উচ্চতা পরিমাপের কাজে ব্যারোমিটারকে কীভাবে ব্যবহার করা হয়? ★

উচ্চতা নির্ণায়র কাজে ব্যারোমিটারের ব্যবহার :

ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হ্রাস পায়। সুতরাং, দুটি স্থানে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের পাঠ নিয়ে এবং তা থেকে চাপের পার্থক্য নির্ণয় করে দুই স্থানে উচ্চতার পার্থক্য নির্ণয় করা সম্ভব।

ধরা যাক, সমুদ্রতলে ও কোনো উঁচু স্থানে (বহুতল বাড়ি বা পাহাড়ের শীর্ষে) ব্যারোমিটার পাঠ যথাক্রমে h1 ও h2 পারদস্তম্ভের চাপের সমান। ওই স্থানের উচ্চতা H, বায়ুর গড় ঘনত্ব d ও পারদের ঘনত্ব ρ হলে, H উচ্চতার বায়ুস্তম্ভের চাপ = (h1 – h2) উচ্চতার পারদস্তম্ভের চাপ

বা, Hdg = (h1 – h2)ρg

বা, H = (h1 – h2)ρ/d

এই সম্পর্কটি ব্যবহার করে উচ্চতার মান সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব।

নিস্তরল ব্যারোমিটার ব্যবহার করে এই পদ্ধতির সাহায্যে মাটি থেকে উড়োজাহাজের উচ্চতা মাপা হয়।

ব্যারোমিটারে পারদ ব্যবহারের সুবিধাগুলি লেখো।

ব্যারোমিটারে পারদ ব্যবহারের সুবিধা:

  1. চাপের সঙ্গে পারদের আয়তন প্রসারণ অত্যন্ত নিয়মিত।
  2. পারদ চকচকে ও অস্বচ্ছ হওয়ায় এর ঊর্ধ্বসীমা কাচের ভিতর দিয়ে স্পষ্ট দেখা যায়।
  3. বিশুদ্ধ পারদ কাচপাত্র ভেজায় না বা কাচনলে লেগে থাকে না, ফলে পাঠগ্রহণ সুবিধাজনক হয়।
  4. অন্যান্য তরলের তুলনায় পারদকে বিশুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
  5. পারদ ব্যবহার করে 1 মিটার দৈর্ঘ্যের কাচনলের সাহায্যেই প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ নির্ণয় করা সম্ভব হয়।
  6. অন্যান্য সহজলভ্য তরলের তুলনায় পারদ কম উদ্বায়ী।

সাইফন কী ? সাইফন-এর কার্জনীতি ব্যাখ্যা করো।* কীভাবে সাইফন ক্রিয়ায় তরল প্রবাহের হার বৃদ্ধি করা যায় ?

সাইফন: সাইফন হল একটি উলটানো U আকৃতির অসম দৈর্ঘ্যের বাহুবিশিষ্ট দুমুখ খোলা নল যার সাহায্যে কোনো পাত্রকে নাড়াচাড়া না করে ওই পাত্রে রাখা তরলকে অন্য পাত্রে স্থানান্তরিত করা যায়। কাচ, রবার বা পলিথিনের নলকে সাইফন হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

সাইফন-এর কার্জনীতি
সাইফন-এর কার্জনীতি

কার্যনীতি : ধরা যাক, B ও C বিন্দু দুটি সাইফনের দুটি বাহুর উপরের অংশে তরলের মধ্যে একই অনুভূমিক তলে অবস্থিত।

আরও ধরা যাক, h1 = পাত্রের তরল তল থেকে B বিন্দুর উচ্চতা। h2 = বড়ো বাহুর খোলামুখ D থেকে C বিন্দুর উচ্চতা। p = বায়ুমণ্ডলীয় চাপ। ρ = তরলের ঘনত্ব।

B বিন্দুতে চাপ = (P – h1ρg) এবং,

C বিন্দুতে চাপ = (P – h2ρg)

যেহেতু, h2 > h1,

তাই B বিন্দুতে চাপ > C বিন্দুতে চাপ।

অর্থাৎ, B থেকে C বিন্দুর দিকে তরল প্রবাহিত হবে। B বিন্দু থেকে তরল BC অভিমুখে প্রবাহিত হলে শূন্যস্থান পূরণের জন্য বায়ুমণ্ডলীয় চাপের ক্রিয়ায় তরল AB নল বরাবর উপরে উঠবে। এই প্রক্রিয়ায় সাইফনের মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট অভিমুখে, চাপের পার্থক্যের জন্য এই তরলের প্রবাহ অবিরাম চলতে থাকবে।

সাইফন ক্রিয়ায় তরল প্রবাহের হার বৃদ্ধি কিভাবে করা যায় :

সাইফন ক্রিয়ায় তরল প্রবাহের হার B ও C বিন্দুর মধ্যে চাপের পার্থক্য দ্বারা নির্ধারিত হয়। এই B ও C বিন্দুর মধ্যে চাপের পার্থক্য হল,

(P – h1ρg) – (P – h2ρg)

= (h2 – h1)ρg

এই চাপের পার্থক্যের রাশিমালা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে (h2 – h1)-এর মান যত বেশি হবে অর্থাৎ সাইফনের বড় বাহু, ছোট বাহু অপেক্ষা যত বেশি লম্বা হবে তরল প্রবাহের হাত তত বৃদ্ধি পাবে।