Water Pollution Project pdf: আজকের প্রতিবেদনে আমরা জল দূষণ প্রজেক্ট সম্পর্কে আলোচনা করব। এই প্রতিবেদনে ২টি জল দূষণ প্রজেক্ট pdf আপলোড করা হলো। যার একটি নিচু ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এবং অপরটি অপেক্ষাকৃত উচ্চ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। আজকের এই জল দূষণ প্রজেক্ট pdf এর মধ্যে, জল দূষণের সংজ্ঞা, জল দূষণের কারণ, জল দূষণের তথ্য সংগ্রহ, জল দূষণের ভূমিকা, জল দূষণের প্রজেক্ট উদ্দেশ্য, জল দূষণের ফলাফল, জল দূষণের প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন গুলি সহ আরো অনেক কিছু আলোচনা করা হয়েছে। নিচের ডাউনলোড বতনে ক্লিক করে খুব সহজে তোমরা এই জল দূষণ প্রজেক্ট pdf গুলি ডাউনলোড করে নিতে পারো।
জল দূষণ প্রজেক্ট pdf 1
জল দূষণ প্রজেক্ট pdf 2
এক নজরেঃ
জলদূষণ কাকে বলে?
জলের সঙ্গে কোন অবাঞ্ছিত পদার্থ মিশে যাওয়ার ফলে যদি জলের ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন হয় এবং তার ফলে জলজ উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তবে জলের সেই খারাপ অবস্থাকে জলদূষণ বলে। পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানীরা জলদূষণের নানা সংজ্ঞা দিয়েছেন। তাঁদের কথার মূল সুর এক হলেও, বর্ণনার ধরনটি আলাদা। যেমন—
মনিবাসকম ১৯৮৪ সালে তাঁর “এনভায়রনমেন্টাল পলিউশন” নামক গ্রন্থে জানিয়েছেন যে, জলের বৈশিষ্ট্য এবং গুণগত মানের কুফলদায়ী পরিবর্তনকে জল দূষণ বলে। এর ফলে জলের উপযোগিতা নষ্ট হয়।
বিজ্ঞানী সাউথউইক ১৯৭৬ সালে তাঁর “ইকলজি অ্যান্ড দ্য কোয়ালিটি অফ আওয়ার এনভায়রনমেন্ট” গ্রন্থে জলদূষণের সংজ্ঞায় বলেছেন যে, মূলত মানুষের কর্মকান্ড ও প্রাকৃতিক কারণে জলের প্রাকৃতিক, রাসায়নিক এবং জৈব উপাদানগুলির গুণমান নষ্ট হওয়াকে দূষণ বলে।
ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছে করলে জল দূষণ প্রজেক্ট pdf (Water Pollution Project pdf) ফাইলটি এ প্রতিবেদনের দেওয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
Class 10 Life Science Quiz 1: উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা এবং সাড়া প্রদান
জল কেন দূষিত হয়? জলদূষণের কারণগুলি কি কি?
জল নানা কারণে দূষিত হয়। যেমন—
- ঘর-গৃহস্থালীর দৈনন্দিন আবর্জনা জলকে দূষিত করে।
- শিল্পজাত আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ জলে মিশে গেলে জল দূষিত হয়।
- কৃষিজাত আবর্জনার জন্য জল দূষিত হয়।
- বৃষ্টির পরে জনবসতি থেকে ধুয়ে আসা ময়লা জলের কারণে জল দূষণ ঘটে।
- ডিটারজেন্ট-এর প্রভাবে জল দূষিত হয়।
- সমুদ্রজলে ভাসমান তেল সমুদ্রজল দূষিত করে।
- অ্যাসিড বৃষ্টিও জলকে দূষিত করে।
- জলের তাপ বৃদ্ধি পেলে জল দূষিত হয়।
- জলে রোগজীবাণু বৃদ্ধি পেলে জল দূষণ ঘটে।
জলদূষক হিসাবে ঘর-গৃহস্থালীর বর্জ্য বা আবর্জনার ভূমিকা কি?
রান্নাঘর, বাথরুম, হোটেল রেস্তোরাঁ থেকে নির্গত জল; উচ্ছিষ্ট খাবার; মল-মূত্র; ডিটারজেন্ট; সাবান প্রভৃতি আবর্জনা বা বর্জ্য জলদূষণ করে।
মাটির ওপর দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ঘর-গৃহস্থালীর আবর্জনা থেকে তৈরি হওয়া বিষাক্ত রাসায়নিক ও রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু (pathogenic organisms) জলাশয়, মাটির নিচে যে জল পাওয়া যায় অর্থাৎ ভৌমজল ও ছোট ছোট জলধারাগুলিকে দূষিত করে। ফলে ঐ জলে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায়।
জলের মধ্যে নানা ধরনের রং দেখা যায়। জল ঘোলাটে হয়। জলে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। জলের স্বাদ বদলে যায়। যেমন, অতিশয় দূষিত জলের রং লাল; মোটামুটি দূষিত জল সবুজ ইত্যাদি। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, জৈব অ্যামাইন (organic amines) যুক্ত জলে আঁশটে গন্ধ (fishy odour), হিউমাস (humus) যুক্ত জলে মাটির সোঁদাগন্ধ (earthy odour) এবং হাইড্রোজেন সালফাইড ও ফসফরাস যুক্ত জলে পচা গন্ধ বা পচা ডিমের গন্ধ (rotten egg or putrid smell) পাওয়া যায়।
ঘর-গৃহস্থালীর আবর্জনা বা বর্জ্য থেকে প্রাপ্ত নানা ধরনের পদার্থ জলদূষণ করে, যেমন— ভাসমান কঠিন কণা (Suspended solids), সালফেট, ক্লোরাইড, অ্যামোনিয়া ইত্যাদি। এছাড়া ব্যাকটেরিয়াও জলকে দূষিত করে।
ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছে করলে জল দূষণ প্রজেক্ট pdf (Water Pollution Project pdf) ফাইলটি এ প্রতিবেদনের দেওয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
জলদূষক হিসাবে শিল্পজাত আবর্জনা বা বর্জ্য পদার্থের ভূমিকা কি?
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, নরম পানীয়, বস্ত্র বয়ন, চর্ম, রাসায়নিক উৎপাদন, সার উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রভৃতি নানা জাতের শিল্প জলদূষণ করে।
কল কারখানার ধরন অনুসারে শিল্পজাত আবর্জনাগুলির রাসায়নিক ও ভৌত চরিত্র বদলে যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তামা, সীসা, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, দস্তা প্রভৃতি ধাতু; জৈব এবং অজৈব সালফার যৌগ; ফসফরাস ও ফুরিন (fluorine) জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ কল-কারখানা থেকে নিঃসৃত হয়ে জলকে দূষিত করে তোলে।
জলদূষক হিসাবে কৃষিজাত অবর্জনার ভূমিকা কি?
অতিরিক্ত সার, কীটনাশক, আগাছানাশক ঔষধপত্র থেকে উৎপন্ন নাইট্রেট, ফসফেট, পটাশ প্রভৃতি রাসায়নিক পদার্থ জল দূষিত করে। বস্তুত খামারজাত বর্জ্য থেকে নাইট্রেট, অ্যামোনিয়া, সালফেট, ক্লোরাইড ও সার থেকে ফসফেট; জৈব সার থেকে ব্যাকটেরিয়া; গবাদিপশু থেকে নাইট্রোজেন, মলমূত্র; কীটনাশক থেকে জৈব-ক্লোরিন যৌগ ইত্যাদি জলদূষণের ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছে করলে জল দূষণ প্রজেক্ট pdf (Water Pollution Project pdf) ফাইলটি এ প্রতিবেদনের দেওয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
জলদূষক হিসাবে বৃষ্টির পরে জনবসতি থেকে নির্গত ময়লা জল ও ডিটারজেন্ট-এর ভূমিকা কি?
এক পশলা বৃষ্টির পর নর্দমা, আস্তাকুঁড়, ডাস্টবিন, খাটাল, খাটাপায়খানা, শ্মশান, ভাগাড়-ধোয়া দূষিত জলের একটা বড় অংশ নদী, জলাশয় ও ভৌমজলকে দূষিত করে।
সাবানের বিকল্প হিসাবে বর্তমানে ডিটারজেন্ট অত্যন্ত জনপ্রিয়। ABS নামে একটি রাসায়নিক পদার্থ (Alkyl Benzene Sulphonates), যা ডিটারজেন্টের অন্যতম প্রধান উপাদান, সেই রাসায়নিক দ্রব্যটি জল দূষিত করে।
জলদূষক হিসাবে সমুদ্রজলে ভাসমান তেল-এর ভূমিকা কি?
খনিজ তেল এবং তেলের উপজাত দ্রব্যগুলি সমুদ্রজলে বিভিন্ন কারণে ছড়িয়ে পড়তে পারে। জাহাজ ডুবি, জাহাজে জাহাজে মুখোমুখি সংঘর্ষ, ট্যাঙ্কার থেকে ছিদ্রপথে তেল চুঁইয়ে পড়া, বা জাহাজে আগুন লাগা জাতীয় দুর্ঘটনা; মাঝ দরিয়ায় খালি ট্যাঙ্কার সাফ করা; মহীসোপান অঞ্চলের (continental shelves) তৈলক্ষেত্র থেকে তেল উত্তোলনের সময় দুর্ঘটনা; সমুদ্রের তলদেশে পেতে রাখা পাইপ লাইনগুলি থেকে তেল পড়া; বা যুদ্ধের সময় সমুদ্রজলে তেল ফেলে শত্রুর সম্পত্তি ধ্বংস করা (যেমন— ইরাক-কুয়েত ও ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় সমুদ্রে তেল নষ্ট করা হয়েছিল)
জাতীয় ঘটনার ফলশ্রুতি হিসাবে সমুদ্রজলে ভাসমান তেলের আস্তরণ তৈরি হয়। এতে সমুদ্রজল শুধু যে দূষিত হয় তাই নয়, অসংখ্য জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ মারা যায়।
জলদূষণে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ভূমিকা কি?
তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে নির্গত গরম জল হ্রদ, নদী, খাল, বিল, যেখানেই পড়ুক না কেন, সেই জলাশয়ের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে এবং জলের ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব পরিবর্তন ঘটায়।
কোন উপায়ে ভূপৃষ্ঠে জলদূষণ ঘটে?
ভূপৃষ্ঠে জলদূষণের প্রধান উপায়গুলি হল—
(১) নর্দমার দূষিত জল (ডিটারজেন্ট এবং দূষণকারী জৈব ও অজৈব পদার্থে সমৃদ্ধ);
(২) বৃষ্টির পরে জনবসতি, কৃষিজমি ধুয়ে বেরিয়ে আসা নোংরা জল (এই জলে কীটনাশক, রাসায়নিক সার, ভাসমান কঠিন কণা ইত্যাদি থাকে);
(৩) শিল্পজাত বর্জ্য জল (তেল, অজৈব অ্যাসিড, ক্লোরাইড, অ্যামোনিয়া, ফেনল ইত্যাদিতে দূষিত);
(৪) অ্যাসিড বৃষ্টি (সালফিউরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড);
(৫) সমুদ্র জলে বর্জ্য পদার্থের নিক্ষেপ (বসতি ও শিল্পজাত আবর্জনা উপকূলবর্তী এলাকার অগভীর সমুদ্রে, এবং অত্যন্ত দূষিত, ক্ষতিকর বর্জ্য ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ গভীর সমুদ্রে ফেলার জন্য ওই স্থানের জল দূষিত হয়);
(৬) জাহাজ ডুবি বা জাহাজ দুর্ঘটনা (প্রচুর হাইড্রোকার্বন এবং জৈব দূষিত পদার্থ সমুদ্র জলে দূষণ ঘটায়।
ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছে করলে জল দূষণ প্রজেক্ট pdf (Water Pollution Project pdf) ফাইলটি এ প্রতিবেদনের দেওয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
মানুষ ও পরিবেশের উপর জলদূষণের প্রভাব কি?
মানবদেহে জল দূষণের প্রভাব :
- দূষিত জল থেকে টাইফয়েড (typhoid), জন্ডিস (jaundice), আমাশয় (dysentery), কলেরা (cholera), আন্ত্রিক (gastroenteritis), পেট খারাপ (diarrhoea), টিবি (tuberculosis), হেপাটাইটিস (hepatitis), চর্মরোগ (skin disease), আর্সেনিক দূষণ (আর্সেনিকোসিস) প্রভৃতি রোগ মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে।
- অ্যাসবেসট্স জাতীয় রাসায়নিক পদার্থে দূষিত জল থেকে অ্যাসবেসটোসিস (asbestosis), ক্যান্সার (lung cancer) প্রভৃতি রোগ হতে পারে।
- তামা, ক্লোরিন, পারদ (পারদ দূষণের জন্য মিনামাটা রোগ), নিকেল, লোহা, সায়ানাইড মিশ্রিত জল থেকে চর্মরোগ ও পেটের অসুখ দেখা দেয়।
- জল শোধন করার সময় ফুরিনের অতিরিক্ত ব্যবহার জলকে দূষিত করে ফেলে। এবং এই জল থেকে অ্যালার্জি, কিডনির সমস্যা, প্যারালিসিস (paralysis), হাড়ের বিকৃতি (bone malformation) প্রভৃতি কঠিন রোগ দেখা দিতে পারে।
মাটির উপর জল দূষণের প্রভাবঃ
দূষিত জলে কৃষিকাজ করা হলে—
(১) ব্যাকটেরিয়া ও মাটির মধ্যে বসবাসকারী জীবাণুর (micro-organism) ক্ষতি হয়। এতে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়।
(২) দূষিত ভৌম জল মাটিতে ক্ষারের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
(৩) দূষিত জলে উদ্ভিদের শারীরবৃত্তিয় (physiological) পরিবর্তন ঘটে। ফলে শস্যের গুণগত মান নষ্ট হয়। এবং উৎপাদন ব্যাহত হয়।
সামুদ্রিক পরিবেশের উপর দূষিত জলের প্রভাব :
(১) সমুদ্রজলে ভাসমান তেলের আস্তরণ সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদের ক্ষতি করে এবং মাছের উৎপাদন কমে যায়।
(২) দূষিত জলের প্রভাবে জলজ উদ্ভিদের মধ্যে বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়। যেমন— ন্যাপথালিন, ফেনানথ্রিন, বেঞ্জপাইরিন ইত্যাদি।
(৩) জল দূষণের জন্য আঞ্চলিক ভাবে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হয়।
ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছে করলে জল দূষণ প্রজেক্ট pdf (Water Pollution Project pdf) ফাইলটি এ প্রতিবেদনের দেওয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
পাখিদের উপর জল দূষণের প্রভাব:
দূষিত জলে বসবাসকারী মাছ, পোকামাকড় ইত্যাদি খেয়ে পাখিরা অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা সচরাচর নজরে আসে না। তবে সমুদ্রজলে ভাসমান তেল থেকে হাজারে হাজারে পাখি যেভাবে মারা পড়ে, আর কোন কারণে পাখিদের মধ্যে এমন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা যায় না। জলে ভাসমান তেল পাখির পালকে, ডানায় জড়িয়ে যাওয়ার ফলে পাখিরা ওড়ার ক্ষমতা হারায়। পালকের জলরোধী ক্ষমতা (insulation) বিনষ্ট হয়। ফলে জলের সংস্পর্শে পাখিদের শারীরিক উষ্ণতা হ্রাস পায় এবং পাখিরা মারা যায়। এই অবস্থাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় “হাইপোথারমিয়া” (hypothermia) বলে।
জলদূষণ কয় ধরনের?
জল দূষণ পাঁচ ধরনের, যেমন— (১) ভৌমজল দূষণ (Ground Water Pollution); (২) নদীজল দূষণ (River Water Pollution); (৩) হ্রদজল দূষণ (Lake Water Pollution); (8) সমুদ্র জল দূষণ (Sea Water Pollution); (৫) জলাশয়গুলিতে জল দূষণ (Surface Water Pollution)।
জলদূষণের প্রত্যক্ষ (Point) এবং অপ্রত্যক্ষ (Non-point) উৎস কাকে বলে ও কি কি?
জলদূষণের প্রত্যক্ষ উৎস (Point Source) : যে যে জায়গা থেকে জল দূষিত হচ্ছে, তাদের যখন সরাসরি চিহ্নিত করা যায় ও কিভাবে জল দূষিত হচ্ছে, তা বোঝা যায়, জল দূষণের সেই উৎসগুলিকে প্রত্যক্ষ উৎস বা পয়েন্ট সোর্স (Point source) বলে। যেমন— কলকারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, নর্দমা ইত্যাদি।
জলদূষণের এই উৎসগুলিকে যন্ত্রপাতির সাহায্যে বা আইন করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
জলদূষণের অপ্রত্যক্ষ উৎস (Non-point Source) : কোন কোন জায়গা থেকে জলদূষিত হচ্ছে, তাদের যখন সরাসরি চিহ্নিত করা যায় না, বা কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে, জল দূষণের সেই উৎসগুলিকে “অপ্রত্যক্ষ উৎস” বা “নন্-পয়েন্ট সোর্স” (Non-point Source) বলে। যেমন— চাষের জমি, বনভূমি, রাস্তাঘাটের নোংরা জল ইত্যাদি। –
এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, কোন কারখানা থেকে বিষাক্ত জল বেরিয়ে জলকে দূষিত করছে, তা খুব সহজেই বোঝা যায়। ফলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সেই দূষণকে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। সে কারণে কল-কারখানা হল জল দুষণের “প্রত্যক্ষ” (Point) উৎস। কিন্তু কার কার চাষের জমিতে ঠিকমত সার ব্যবহার করা হয় নি বলে জল দূষিত হচ্ছে, তা বোঝা খুবই কঠিন। তেমনি বর্ষা কালে রাস্তাঘাট, ডাস্টবিন ধোয়া জল সব জায়গা থেকে গড়িয়ে নদীতে, পুকুরে পড়ছে। সুতরাং ঠিক কোন জায়গা থেকে জল দূষিত হচ্ছে, তা বোঝা মোটেই সহজ কাজ নয়। তাই এদের “অপ্রত্যক্ষ” (Non-point) উৎস বলে।
ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছে করলে জল দূষণ প্রজেক্ট pdf (Water Pollution Project pdf) ফাইলটি এ প্রতিবেদনের দেওয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
জীবরাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা বা বি. ও. ডি. (B. O. D.) বলতে কি বোঝায়?
জীবরাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা বা বি. ও. ডি. (Biological Oxygen Demand) বলতে জলজ ব্যাকটিরিয়া ও অন্যান্য অণুজীবীদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ও বাড়বৃদ্ধির জন্য জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের চাহিদা বা ক্রমহ্রাসমান অবস্থাকে বোঝায়। অন্যভাবে বলতে গেলে দূষিত জলে জৈব পদার্থের জারণের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের চাহিদাকে জীব রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা বলে। এটি লিটার প্রতি মিলিগ্রাম এককে প্রকাশ করা হয়।
বিষয়টিকে একটু সহজে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে যে, জল দূষিত হলে সেই দূষিত পদার্থকে রাসায়নিক ভাবে ভেঙে দেওয়া বা বিয়োজিত করার জন্য’ (decompose) চাই ব্যাকটিরিয়া এবং অন্যান্য জীবাণু, অর্থাৎ অণুজীবী। আমরা জানি যে, জল যত দূষিত হবে, ততই সেই জলে ব্যাকটিরিয়া ও জীবাণুরা সংখ্যায় বাড়বে। এবং তাদের নিজেদের বেঁচে থাকার জন্য বা দূষিত পদার্থকে পচিয়ে ফেলার জন্য তখন দরকার হবে আরো অক্সিজেন। সুতরাং দূষিত জলে জীবাণুর সংখ্যা যত বাড়বে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ক্রমশঃ তত কমবে। সেই কারণে জল কতটা দূষিত হয়েছে, তা বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের জীব-রাসায়নিক চাহিদা মেপে দেখেন।
বি. ও. ডি.-র মাত্রা অনুসারে জলের উৎকর্ষতাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন— BOD-1 খুব ভালো জল; BOD-3 মোটামুটি ভাল জল; BOD-10 দূষিত জল; BOD-20 খুব দূষিত জল ইত্যাদি।
ইউট্রোফিকেশন বলতে কি বোঝায়?
গ্রীক শব্দ ‘‘ইউট্রোফি” (Eutrophy) থেকে ইংরাজি “ইউট্রোফিকেশন” (Eutrophication) কথাটি এসেছে। ইউট্রোফিকেশন হল হ্রদের তলদেশে জৈব পদার্থ ক্রমাগত জমা হওয়ার ফলে হ্রদ ভরাট হওয়ার পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে হ্রদ মজে গিয়ে অগভীর জলাভূমিতে পরিণত হয়। বড় পুকুরও “ইউট্রোফিকেশন”-এর জন্য ডোবায় পরিণত হতে পারে।
ইউট্রোফিকেশন হওয়ার কারণ হল পুকুর বা হ্রদের চারপাশের জমি থেকে নানা রকম সার বা পুষ্টিকর পদার্থ, যেমন— ফসফেট ধুয়ে এসে পুকুরের জলে মিশলে ঐ জলে শৈবাল, কচুরীপানা প্রভৃতি জলজ উদ্ভিদগুলি খুব তাড়াতাড়ি প্রচুর পরিমাণে বংশ বৃদ্ধি করে। এইভাবে প্রাকৃতিক নিয়মে মরা উদ্ভিদের দেহাবশেষ ক্রমাগত হ্রদ বা পুকুরের নিচে জমা হয়। এবং জলাশয়টি মজে যেতে থাকে। ইউট্রোফিকেশনের চরম অবস্থায় জলজ উদ্ভিদের পরিমাণ খুব বেড়ে গেলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের সবটা তারাই নিজেদের কাজে ব্যবহার করে ফেলে। ফলে সমস্ত জলজ প্রাণী, যেমন— মাছ, পোকামাকড় ইত্যাদি, অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। সে কারণে ইউট্রোফিকেশন হল এক ধরনের পরিপোষক-ঘটিত জলদূষণ। [পরিপোষক হল পুষ্টিকর পদার্থ।]
প্রাকৃতিক উপায়ে বা মানুষের অদূরদর্শী কাজের জন্য দু’ভাবেই ইউট্রোফিকেশন হতে পারে। যেমন—
প্রাকৃতিক উপায় : ভূমিক্ষয়ের ফলে মাটি তার ঊর্বর পদার্থ সমেত পুকুর বা হ্রদের জলে মিশতে থাকলে। মানুষের প্রভাবঃ
- চাষ-আবাদের জন্য ব্যবহৃত ফসফেট সারের কিছুটা জলে ধুয়ে শেষ পর্যন্ত পুকুর বা হ্রদের জলে মিশলে।
- কাপড় কাচা ডিটারজেন্টের মাধ্যমে ট্রাইফসফেট জলে মিশ্রিত হলে
- আবর্জনা শোধন কেন্দ্র বা “ট্রিটমেন্ট প্লান্ট” (Treatment Plant) থেকে নির্গত অজৈব পরিপোষক পুকুর বা হ্রদের জলে মিশে যাওয়ার সুযোগ পেলে
- আবর্জনা দিয়ে পুকুর বা হ্রদ ভরাট করলে ইউট্রোফিকেশন হয়। ইউট্রোফিকেশন নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হল (১) নদীতে, পুকুরে, হ্রদে বা অন্যান্য জলাশয়ে নোংরা ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে। অথবা ঐ বর্জ্যগুলিকে পরিশোধন করে তবেই তাদের জলে নিক্ষেপ করতে হবে। (২) শ্যাওলা যাতে না জন্মায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জলাশয় থেকে নিয়মিত শ্যাওলা পরিষ্কার করতে হবে। (৩) উপযুক্ত পরিমাণে কপার সালফেট ও সোডিয়াম আর্সেনাইট প্রয়োগ করতে হবে ইত্যাদি।
ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছে করলে জল দূষণ প্রজেক্ট pdf (Water Pollution Project pdf) ফাইলটি এ প্রতিবেদনের দেওয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
জলদূষণ নিবারণ আইন (Water Pollution Control Act)
জলদূষণ নিবারণের প্রয়োজনীয়তা কি? জলদূষণ নিবারণের জন্য কি কি আইনগতবন্দোবস্ত করা হয়েছে?
কোন দেশ বা জাতি বা ব্যক্তির স্বাস্থ্য মূলত দুটি বাস্তুতান্ত্রিক অবস্থার দ্বারা নির্ধারিত হয়। যথা— (১) ব্যক্তির নিজস্ব অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বা পারিবারিক অবস্থা। এবং
(২) ব্যক্তির পারিপার্শ্বিক পরিবেশগত অবস্থা অর্থাৎ সামাজিক অবস্থা। জনস্বাস্থ্য একটি সামাজিক বিষয়। জনস্বাস্থ্য সামগ্রিকভাবে যে কয়েকটি জিনিসের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় সেগুলি হল- জল, খাদ্য, বাসস্থান, বস্ত্র এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। প্রকৃতপক্ষে নিরাপদ ও পানের যোগ্য জল সরবরাহ করা সম্ভব না হলে জনস্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সেই কারণে পানীয় জলকে সবসময় নিরাপদ, দূষণমুক্ত এবং পান করার যোগ্য হতে হবে।
নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য জলের বৈশিষ্ট্য হল— (ক) জলে ক্ষতিকর জীবাণু থাকা চলবে না; (খ) শারীরিক ক্ষতি করতে পারে এমন কোন রাসায়নিক পদার্থ জলে দ্রবীভূত থাকা চলবে না; (গ) জলের স্বাদ ভাল হতে হবে; (ঘ) ঘর-গৃহস্থলীর কাজে জলকে ব্যবহারযোগ্য হতে হবে। – ব্যবহারের দিক থেকে জলের চারটি প্রধান চাহিদা আছে। যেমন
(১) প্রথমত, ঘর-গৃহস্থালীর কাজে জলের চাহিদা। (রান্না, কাপড় কাচা, পানীয় জল, ইত্যাদি।) (২) দ্বিতীয়ত, জনসাধারণের সামাজিক চাহিদা। (অগ্নি নির্বাপন, অর্থাৎ আগুন নিভানোর জন্য জলের চাহিদা, বাগান ও পা পার্কের গাছপালায় জল দেওয়ার জন্য জলের চাহিদা, সাঁতার কাটার জন্য নিরাপদ জলের চাহিদা ইত্যাদি।) (৩) তৃতীয়ত, শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্য জলের চাহিদা, যেমন— লৌহ-ইস্পাত শিল্প, কাগজ শিল্প ইত্যাদি। (৪) চতুর্থত, কৃষিক্ষেত্রে জলসেচের জন্য জলের চাহিদা ইত্যাদি।
জলদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আইনি ব্যবস্থা :
১৯৭৪ সালে পার্লামেন্টে জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) আইন পাশ করা হয়। এই আইনের উদ্দেশ্য হল-
- জলদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা।
- জলের গুণগত মান বজায় রাখা।
- জলদূষণ আইন কার্যকর করার জন্য কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে পূর্ণ অধিকার দেওয়া। ভারতের সমস্ত রাজ্যে এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সংবিধানের ২৫২ নম্বর অনুচ্ছেদের ১নম্বর ধারা অনুসারে জলদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন বলবৎ করা হয়েছে। এই আইনের বলে কেন্দ্রীয় পর্যদের কাজ হল (১) রাজ্যস্তরে বিভিন্ন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের কাজগুলির মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করা। (২) জলদূষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা। (৩) জলদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সব ধরনের সাহায্য দেওয়া।
এ ছাড়া, কেন্দ্রীয় সরকারকে জলদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য পরামর্শ দেওয়াও এই কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাজ ৷
ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছে করলে জল দূষণ প্রজেক্ট pdf (Water Pollution Project pdf) ফাইলটি এ প্রতিবেদনের দেওয়া ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারো।
আলোচ্য আইনের ধারা অনুসারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাজ হল—
(১) নদী এবং নলকূপ ও পাতকুয়োর জলের দূষণ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ এবং হ্রাস করার উদ্দেশ্যে সঠিক পকিল্পনা গ্রহণ করা।
(২) রাজ্য সরকারকে জলদূষণ নিবারণের জন্য পরামর্শ দান করা। (৩) জলদূষণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা এবং দূষণ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাস করার উদ্দেশ্যে তথ্য সরবরাহ করা।
(৪) জলদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গবেষণায় উৎসাহ দান করা।
(৫) কেন্দ্রীয় দূষণ পর্ষদের সাথে সহযোগিতা স্থাপন করা।
(৬) ময়লা জল শোধনের উদ্দেশ্যে শোধনাগার স্থাপন করা। এবং জলশোধনের জন্য নির্ভরযোগ্য ও স্বল্প ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে গবেষণা করা।
(৭) জলশোধনের পর ময়লা দূষিত পদার্থগুলিকে কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য পন্থা-প্রকরণ উদ্ভাবন করা ইত্যাদি।
জলদূষণ আইন :
জলদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে সমস্ত আইনগুলি প্রণয়ন করা হয়েছে সেগুলি হল—
(১) জল (প্রতিরোধ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ) আইন, ১৯৭৪। এটি ১৯৭৮ সালে সংশোধন করা হয়। (২) জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) সংশোধিত আইন, ১৯৮৮
(৩) জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) সেস আইন, ১৯৭৭।
(২) জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) সেস (সংশোধিত) আইন, ১৯৯১ ইত্যাদি।
জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) আইন, ১৯৭৪ :
(১) এই আইনের 25 (i) (a) ধারা অনুসারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি এমন কোন শিল্প, কারখানা বা উৎপাদন সংস্থা স্থাপন বা পরিবর্তন বা সম্প্রসারণ করতে পারবে না, যেগুলি থেকে দূষিত আবর্জনা নদী বা পুকুর বা পাতকুয়ো বা যে কোন ধরনের কূপের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
(২) এই আইনের 25 (a) (i) (b) (c) ধারা অনুসারে কোন ব্যক্তি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি ছাড়া কোন তরল দূষিত পদার্থ বা দূষিত আবর্জনা সরানোর জন্য কোন নতুন নালা বা নির্গমন পথ নির্মাণ করতে পারবে না, এমনকি পুরাতন নির্গমন পথের পরিবর্তন করতে পারবে না।
(৩) উক্ত আইনের 41 (1) (2) (3) (c) (1) অনুসারে কোন ব্যক্তি এই আইনে বর্ণিত ব্যবস্থাগুলিকে লঙ্ঘন করলে তাকে তিন মাসের জেল বা ৫,০০০ টাকা জরিমানা বা দুটি শাস্তি একই সাথে দেওয়া যেতে পারে।
জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) সেস আইন, ১৯৭৭:
(১) এই আইনের ২ নম্বর ধারা অনুসারে সমস্ত নির্ধারিত শিল্পসংস্থাগুলিকে প্রস্তাবিত হারে সেস দিতে হবে।
(২) উক্ত আইনের ৫ নম্বর ধারা অনুসারে নির্ধারিত সমস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রস্তাবিত পদ্ধতি অনুসারে “সেস রিটার্ন” জমা করতে হবে।
(৩) প্রতিটি শিল্পসংস্থায় এবং প্রচুর পরিমাণে জল ব্যবহার করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলিতে জলের মিটার বসাতে হবে।
(৪) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেস জমা না দিলে এবং সেস সম্পর্কিত রিটার্ন জমা না নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্ধারিত হারে ঐ শিল্প ও সংস্থাগুলি জরিমানা দিতে বাধ্য থাকবে। (৫) আলোচ্য আইনের ২ নম্বর ধারা অনুসারে যে সমস্ত শিল্পগুলিকে সেস-এর আওতায় আনা হয়েছে। সেগুলি হল— (ক) বিভিন্ন ধাতু নিষ্কাশণ শিল্প; (খ) খনিজ সম্পদ আহরণ শিল্প; (গ) পেট্রোলিয়াম শিল্প; (ঘ) পেট্রোরসায়ন শিল্প; (ঙ) রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন শিল্প; (চ) সেরামিক শিল্প; (ছ) সিমেন্ট শিল্প; (জ) বয়ন শিল্প; (ঝ) কাগজ শিল্প; (ঞ) সার শিল্প; (ট) কয়লা এবং কোক শিল্প; (ঠ) বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্প; (ড) শাক-সব্জি এবং প্রাণীজাত দ্রব্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প।
জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) সংশোধিত আইন, ১৯৮৮
(১) আলোচ্য সংশোধিত আইনের ১০ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, মূল আইনের (অর্থাৎ ১৯৭৪-এর আইন) ২০ নং অনুচ্ছেদের ৩ নং ধারায় “শিল্প এবং বাণিজ্য সংস্থা” বলতে শিল্প, শিল্পোৎপাদন ব্যবস্থা, ও ঐ শিল্প বা সংস্থার জলনিকাশী ব্যবস্থাকে বুঝতে হবে। (২) এ ছাড়া, মূল আইনের ২৪ নং অনুচ্ছেদের ১ নং ধারায় “নদী ও কূপ” বলতে নদী, কূপ ও জলভাগ বা জমিতে যে কোন নিকাশী ব্যবস্থাকে বুঝতে হবে।
জল (প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ) সেস (সংশোধিত) আইন, ১৯৯১
(১) আলোচ্য সংশোধিত আইনের ৫ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, মূল আইনের (অর্থাৎ ১৯৭৭-এর সেস সংক্রান্ত আইন) ৭ নং অনুচ্ছেদে যে ৭৫% সেস ছাড়ের বন্দোবস্ত ছিল তা কমিয়ে ২৫% করা হল।
(২) এ ছাড়া, মূল আইনের ১০ নং অনুচ্ছেদে ঠিক সময়ে সেস জমা না দিলে দেয় অর্থের উপর যে বাৎসরিক ১২% অতিরিক্ত সুদ ধার্য করা বন্দোবস্ত ছিল, তা পরিবর্তন করে প্রতি মাসে ২% হারে সুদ ধার্য করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
FAQs
জলদূষণ কাকে বলে?
জলের সঙ্গে কোন অবাঞ্ছিত পদার্থ মিশে যাওয়ার ফলে যদি জলের ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন হয় এবং তার ফলে জলজ উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তবে জলের সেই খারাপ অবস্থাকে জলদূষণ বলে।
জলদূষণের কারণগুলি কি কি?
জল নানা কারণে দূষিত হয়। যেমন—
ঘর-গৃহস্থালীর দৈনন্দিন আবর্জনা জলকে দূষিত করে।
শিল্পজাত আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ জলে মিশে গেলে জল দূষিত হয়।
কৃষিজাত আবর্জনার জন্য জল দূষিত হয়।
বৃষ্টির পরে জনবসতি থেকে ধুয়ে আসা ময়লা জলের কারণে জল দূষণ ঘটে।
ডিটারজেন্ট-এর প্রভাবে জল দূষিত হয়।
সমুদ্রজলে ভাসমান তেল সমুদ্রজল দূষিত করে।
অ্যাসিড বৃষ্টিও জলকে দূষিত করে।
জলের তাপ বৃদ্ধি পেলে জল দূষিত হয়।
জলে রোগজীবাণু বৃদ্ধি পেলে জল দূষণ ঘটে
জলদূষণে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ভূমিকা কি?
তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে নির্গত গরম জল হ্রদ, নদী, খাল, বিল, যেখানেই পড়ুক না কেন, সেই জলাশয়ের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে এবং জলের ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব পরিবর্তন ঘটায়।